
তবুও সিনেমা থাকবে সগৌরবে
ও মন রমজানেরই রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ...।’ ধর্মীয় দর্শনচিন্তার সাংস্কৃতিক প্রকাশ ঈদ উৎসবকে স্বাগত জানানো হয় এমনই গীতধ্বনিতে। ঈদ মানে নানান আনন্দ–উৎসব আয়োজন। সিনেমাপ্রেমীদের প্রেক্ষাগৃহে নতুন সিনেমা দেখতে ভিড় করা। ব্ল্যাকে টিকিট কাটতে হট্টগোল। মধুমিতায় মেটানি শো দেখা হলে বলাকায় নাইট শো দেখতেই হবে। ঈদে প্রেক্ষাগৃহে নতুন সিনেমা দেখা বাঙালি জাতীয় সংস্কৃতির অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বাংলাদেশর আমরা ঈদে নতুন সিনেমা দেখার অভিজ্ঞতা লাভ করি ১৯৬৪ সালে। সুভাষ দত্তের সুতরাং এবং জহির রায়হানের প্রথম সিনেমাস্কোপ সিনেমা সঙ্গম ঈদের সিনেমা হিসেবে দর্শকপ্রিয়তা লাভ করে। এর ধারাবাহিকতায় ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আজহা—দুটি দিন সিনেমা দর্শক, নির্মাতা ও কুশলীদের জন্য অতিরিক্ত উৎসব হিসেবে স্বীকৃতি পায়। পাশের দেশ ভারতে তাদের পার্বিক উৎসব দেওয়ালি, নববর্ষ, ভ্যালেন্টাইনস ডে, দুর্গাপূজার সঙ্গে ঈদ উৎসবও সিনেমা মুক্তির দিন বলে আলোচনায় আসে।
ঈদ উৎসবকে উপলক্ষ করে নির্মাতারা প্রতিযোগিতায় নামেন। শ্রেষ্ঠ প্রেক্ষাগৃহ পাওয়ার জন্য অসুস্থ প্রতিযোগিতা শুরু করেন। কখনো চার-পাঁচটা সিনেমা এবং একই ঈদে একই পরিচালক নির্মিত দুটি সিনেমা মুক্তি পাওয়ারও ঘটনা আছে।
২০২০ সাল। সব আনন্দ উৎসব, সিনেমা নিয়ে কলরব থেমে গেছে। কোভিড-১৯, পৃথিবীর মুক্ত কোলাহল নীরবতার চাদরে ঢেকে দিয়েছে। বিষাদ ও শঙ্কায় আক্রান্ত সিনেমার বিশ্ব জনপদ। সব বন্ধ। সিনেমা হল বন্ধ। বিপুল অর্থায়নে তৈরি সিনেমা এখন হার্ডডিস্ক–বন্দী। অর্থ লগ্নিকারীরা ভাবছেন সিনেমাশিল্প আগামী দিনে কোনো নবরূপ ধারণ করবে, নাকি এর বিনাশ ঘটবে?
স্তব্ধ, নিঃশব্দ ছিল সিনেমা প্রজেক্টরের ঘর ঘর শব্দ ১৯৭১ সালে। সংগ্রাম, সংকটকালে স্টুডিও ফ্লোরে আলো জ্বলেনি। পরিচালকের কণ্ঠে উচ্চারিত হয়নি অ্যাকশন কাট। বন্ধ ছিল নতুন সিনেমা মুক্তি। আজিজুর রহমানের সমাধান এবং মোস্তফা মেহমুদের মানুষের মন সেন্সরপ্রাপ্ত সিনেমা দুটি প্রস্তুতও ছিল। ১৯৭১ সাল পুরো সময়ে সিনেমাশূন্যকাল। আরও আছে নাটকীয় ঘটনা।