প্রাইভেট কারে ঢাকা-পাটুরিয়া ৫০০ টাকা
ঈদুল ফিতরের বাকি আর মাত্র একদিন। পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে শনিবার (২৩ মে) ভোরের আলো ফুটতেই রাজধানী ছাড়ছে ঘরবন্দি মানুষ। বৃহস্পতিবার রাত থেকে ব্যক্তিগত পরিবহনে রাজধানী ছেড়ে বাড়ি ফেরার অনুমতি দিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। আর এ ঘোষণার পরই বাড়িমুখো হয়েছে করোনাভাইরাসের কারণে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় নগরবন্দি মানুষরা। সেই সঙ্গে তৎপর হয়েছেন প্রাইভেট কার চালকরাও। এই সুযোগটা কাজে লাগিয়ে চালকরা বেশি ভাড়া নিয়ে যাত্রীদের পৌঁছে দিচ্ছেন। গাবতলী-পাটুরিয়া রুটে যাত্রীদের উদ্দেশে তারা হাঁক ছাড়ছেন, ‘ঘাটে ৫০০, ঘাটে ৫০০।’
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে ঘোষিত সাধারণ ছুটিতে বন্ধ রয়েছে গণপরিবহন। তারপরও গত কয়েকদিন যাবৎ পায়ে হেঁটেও বাড়ি ফিরতে দেখা গেছে সাধারণ মানুষকে। এ অবস্থায় শনিবার ভোর ৫ টা ২০ মিনিটের দিকে গাবতলী বাস টার্মিনালের সামনে পৌঁছাতেই প্রাইভেট কার চালকদের হাঁকডাক শোনা যায়। কাছে গিয়ে জানা যায়, প্রাইভেট কারে গাবতলী থেকে পাটুরিয়া ফেরিঘাটের ভাড়া জনপ্রতি ৫০০ টাকা। তাই, সারিবদ্ধভাবে রাস্তার বিভিন্ন অংশে দাঁড়িয়ে আছে শতাধিক প্রাইভেট কার। আর হাঁকডাক চলছে ৫০০ টাকার। যাত্রী নিয়েও চলছে কাড়াকাড়ি।
কোনও প্রাইভেট কারে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে দেখা যায়নি। কিন্তু চালকরা প্রতিবেদককে জানিয়েছেন, তারা দুজন যাত্রী নিয়ে সামাজিক দূরত্ব মেনে ও হাতে গ্লাভস, মুখে মাক্স এবং হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করেই যাত্রা শুরু করেছেন। অন্যাদিকে যাত্রীরাও অনেকটা নিরুপায় হয়ে রওনা হচ্ছেন গন্তব্যে। প্রতি কারেই চালকসহ পাঁচ জনকে গাদাগাদি করে রওনা হতে দেখা গেছে।
প্রাইভেটকার চালক কালাম হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘গাবতলী থেকে পাটুরিয়া জনপ্রতি ৫০০ টাকা করে নিচ্ছি। সামাজিক দূরত্বের জন্য লোক নিচ্ছি দুজন করে। আর যাত্রীরাও সতর্ক হয়ে আসছেন। তারপরও আমরা স্যানিটাইজার ও গ্লাভস, মাক্স ব্যবহার করছি নিজের নিরাপত্তার জন্য।’ মাস্ক দেখাতে পারলেও স্যানিটাইজার ও হ্যান্ডগ্লাভস প্রতিবেদককে দেখাতে পারেননি কালাম।
রাজবাড়ীগামী যাত্রী শাহরিয়ার তালুকদার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘পরিস্থিতি কবে ভালো হয় সেটা তো বলতে পারছি না, তাই ভেবেচিন্তেই পরিবারকে নিয়ে বাড়ি যাচ্ছি। সেখানে গিয়ে প্রয়োজনে ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টিনে থাকবো। যেহেতু সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে প্রাইভেট গাড়িতে যেতে দেওয়া হবে, তাই ফজরের নামাজ পড়েই রওনা দিয়েছি। এখন ভাড়া কোনও বিষয় না।’
মোটরসাইকেলেও চলছে ঈদযাত্রা
শুধু প্রাইভেটকার নয়, এর পাশাপাশি ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেলগুলোও ৫০০ টাকার বিনিময়ে পাটুরিয়া ঘাটে পৌঁছে দিচ্ছে যাত্রীদের। মোটরসাইকেলে দুজন চলার নিয়ম থাকলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তিনজনকে নিয়ে যেতে দেখা গেছে।
মোটরসাইকেল চালক তানভীর বলেন, ‘গাবতলী থেকে পাটুরিয়া ঘাটের দূরত্ব ৮০ কিলোমিটারের মতো। আমরা ৫০০ টাকা করে ভাড়া নিচ্ছি। যাত্রীরা অনেক ক্ষেত্রে আপত্তি করলেও কেউ না কেউ যাচ্ছেই।’
এদিকে ব্যক্তিগত মোটরসাইকেলে অনেককেই ঈদযাত্রা করতে দেখা গেছে। ফজর নামাজের পর থেকেই তারা রাজধানী ছাড়তে শুরু করেছেন। কোনও কোনও ক্ষেত্রে দুজন, তিনজন ও বাচ্চাসহ চারজনকেও দেখা গেছে এক মোটরসাইকেলে। ভোর থেকে প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কোনও পুলিশ সদস্যকে দেখা যায়নি চেকপোস্টে।