উইকেট পেলে বা ম্যাচ জিতলে কাউকে জড়িয়ে ধরা যাবে না!
করোনাভাইরাসের এই সময়টায় ক্রিকেট কবে কখন মাঠে ফিরবে- সেটাই এখন বড় প্রশ্ন। সেই প্রশ্নের সহজ একটা উত্তর দিয়েছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সংস্থা (আইসিসি)। ক্রিকেট ফের মাঠে ফেরার জন্য আইসিসি সুনির্দিষ্ট কিছু বিধি-বিধান জানিয়ে দিয়েছে। তবে ঠিক কবে কখন কোন দেশে আবার ক্রিকেট মাঠে ফিরবে সেটা স্থির করার দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট দেশের সরকারের ওপর। সরকার যখন মনে করবে ক্রিকেট মাঠে ফেরার মতো স্বাস্থ্য সুরক্ষা ব্যবস্থা পুরোপুরি নিশ্চিত আছে তখনই তারা সিদ্ধান্ত নেবে।
ক্রিকেট আবার মাঠে ফেরার ব্যাপারে আইসিসি বেশ লম্বা-চওড়া বিধি-বিধানের কথা সকল সদস্য দেশকে জানিয়ে দিয়েছে। করোনাভাইরাস থেকে রেহাই পেতে এই সকল নিয়ম-নীতি যেন ক্রিকেট খেলুড়ে দেশ এবং ক্রিকেটাররা অবশ্যই পালন করে সেই নির্দেশও জারি করেছে আইসিসি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার আগে একক অনুশীলন, দলগত অনুশীলনে ক্রিকেটারদের অংশ নিতে হবে। আগে কমিউনিটি ক্রিকেট, ঘরোয়া ক্রিকেট শুরুর পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার চিন্তা করতে হবে। এই পর্যায়ের ক্রিকেট অনুশীলন নির্বিঘ্নে পার করার পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের পরিকল্পনায় যাওয়া যাবে।সংক্ষেপে জেনে আসি ক্রিকেটকে আবার মাঠে ফেরানোর এই প্রকল্পে আইসিসির বিধি-বিধানে কি থাকছে। তালিকাটা বিশাল। সেই দীর্ঘ তালিকা থেকে শীর্ষ ১০টি এখানে উল্লেখ করা হলো:
১) কোনো ক্রিকেটারের মধ্যে করোনাভাইরাস সংক্রমণের ন্যূনতম উপসর্গ থাকলে সেটা দলের মেডিকেল কর্মকর্তাকে জানাতে হবে। মেডিকেল কর্মকর্তা স্বাস্থ্য সুরক্ষা নীতি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবেন। আক্রান্ত ক্রিকেটারের জন্য আইসোলেশনের ব্যবস্থা করতে হবে। প্রয়োজনীয় টেস্টের ব্যবস্থা করতে হবে।
২) ক্রিকেট ম্যাচে বল সবাই ব্যবহার করে। এই বলের মাধ্যমে ভাইরাস ছড়াতে পারে। তাই বল ব্যবহারের ক্ষেত্রে আইসিসি’র প্রদত্ত নীতিমালা সবাইকে অনুসরণ করতে হবে। কোনো মতেই বলে থুথু বা লালা লাগানো যাবে না।
৩) ক্রিকেট ম্যাচে শারীরিক সংস্পর্শ এড়াতে হবে। আনন্দ-উল্লাস করার ক্ষেত্রে একে অন্যকে জড়িয়ে ধরার বিষয়টি নিরুৎসাহিত করতে হবে। সবাইকে পৃথক পানির বোতল ব্যবহার করতে হবে। টাওয়েলও আলাদা থাকতে হবে। এমনকি খেলার সরঞ্জামও শুধু নিজেরটাই ব্যবহার করতে হবে।
৪) মাঠে সানগ্লাস, টুপি, সোয়েটার বা টাওয়েল সবকিছুই ক্রিকেটারদের নিজের দায়িত্বে রাখতে হবে। এগুলো আম্পায়ার অথবা নিজ দলের অন্য কারো কাছে জমা রাখার পূর্বতন শিষ্টাচার নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে।
৫) আম্পায়ার, ম্যাচ রেফারি বা সাপোর্ট স্টাফদের যাদের বয়স ষাটোর্ধ, তাদের কেউ যদি হৃদরোগ, কিডনি, বহুমূত্র, স্থুলকায় বা শারীরিক দুর্বলতায় ভোগেন তবে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ক্ষেত্রে তারা থাকবেন সম্ভাব্য ঝুঁকির তালিকায়।
৬) ইনডোর ক্রিকেট অনুশীলনে অতিরিক্ত সতর্কতা জারি করতে হবে।
৭) সফরকারী দলের ক্রিকেটার এবং সাপোর্ট স্টাফ সবাইকে কোয়ারেন্টিনের নিয়ম মেনে চলতে হবে।
৮) হোটেলের একটি নির্দিষ্ট ফ্লোরের পুরোটাই ক্রিকেটারদের জন্য ছেড়ে দিতে হবে। প্রত্যেক ক্রিকেটার থাকবেন পৃথক কক্ষে। রুম ভাগাভাগি এড়াতে হবে।
৯) বিদেশে সফরের জন্য চার্টার্ড ফ্লাইটের ব্যবস্থা করাকে উৎসাহিত করা হচ্ছে। ক্রিকেটারদের ব্যাগেজ সম্পূর্ণরূপে জীবাণুমুক্ত করার ব্যবস্থা করতে হবে। পার্সোনাল প্রোটেকটিভ ইকুইপমেন্ট (পিপিই) ব্যবহার করতে হবে।
১০) ক্রিকেটারদের পরিবহনের জন্য গাড়ী এবং ড্রেসিংরুম জীবানুমুক্ত করতে হবে। ড্রেসিংরুমে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার উদ্যোগ নিতে হবে।