ঈদ মানে খুশি, ঈদ মানে উৎসব, ঈদ হলো আনন্দের উৎসব। করোনাকালে লকডাউনে ৯০ দিনের গৃহঅন্তরীণ জীবনে উৎসববিহীন এবারের ঈদের আনন্দ। মুসলিম সমাজে প্রতিবছরই ঘরে ঘরে রোজা-ইফতার, চাঁনরাত, ঈদের জামাত ও ঈদ উৎসব পালনের মধ্য দিয়ে দিনটি সুদীর্ঘ কাল ধরে পালিত হয়ে আসছে। আজ বিশ্বব্যাপী করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় ঈদ হয়ে যাবে নিরানন্দের প্রতীক এবং ঈদে যুগ যুগ ধরে যে আতিথেয়তার প্রচলন ছিল, এবার শুধু গৃহঅন্তরীণ মানুষেরাই নিজ নিজ ঘরে বসেই ঈদ উদ্যাপন করবে, ভুলেও কারও বাসায় যাওয়া যাবে না, কারও সঙ্গে কোলাকুলি করতে পারব না এবং কোন অতিথি এলে মনে ভাবনা হবে—এসেছে করোনা, এ যে কি নিদারুণ কষ্ট! ঈদের ঐতিহ্য অনুযায়ী নতুন জামা-কাপড় পরতে হয়, এবারের ঈদে অনেকেই পুরোনো কাপড় পরে ঈদের আনন্দ করবে। বিশ্বে অনেক মুসলিম দেশেই লকডাউনে শপিং মার্কেট বন্ধ থাকাতে নতুন কাপড় কিনতে পারবে না। অনেকের আবার আয় রোজগারহীন করোনাকালে কেনার সাধ্য ও সামর্থ্যও নেই।
লকডাউনের কারণে এবারের ঈদের জামাত ঈদগাহ বা খোলা মাঠে যে হচ্ছে না, সেটি অনেকটাই নিশ্চিত। যদিও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে হয়তো অনেক দেশে বিশেষ অনুমতি নিয়ে মসজিদে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। আমাদের এবার ঈদের জামাতের জন্য দুঃখ হলো দুটি। বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ আমাদের জেলার ঐতিহাসিক শোলাকিয়ায় ১৯৩ তম ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে না এবং আমাদের বাসার অতি সন্নিকটে নিউইয়র্ক সিটির সর্ববৃহৎ জামাত, প্রায় প্রতি বছরই যেখানে ঈদের জামাত হয়, যেখানে প্রায় ১০ হাজার লোকের সমাগম ঘটে, জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারের তত্ত্বাবধানে খোলামাঠের সেই ঈদের জামাতটাও না হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। হয়তো বিশেষ অনুমতি নিয়ে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে কিছু মসজিদে জামাত হতে পারে, কিন্তু এটা নিশ্চিত না! বৈশ্বিক করোনা মহামারিকালে সদকা, ফিতরা, জাকাতের অনুদানও হয়তো অনলাইনের মাধ্যমে বিভিন্ন এতিমখানা, মসজিদ, মাদ্রাসা ও দাতব্য সংস্থাকে পাঠাতে হবে।
প্রবাস জীবনে গত ২৪ বছর আমি ঈদের জামাতে শরিক হতে পারছি। কিন্তু আমাদের দেশে ঈদের জামাতে শরিক হতে পারিনি এবং ব্যবস্থাও ছিল না। এবার রোজা রেখেছি মসজিদে না গিয়ে, বাসা সংলগ্ন ওই মসজিদে প্রতি বছরই খতমে তারাবির নামাজ পড়ানো হয়। দুঃখজনক হলো এবারের তারাবির নামাজও জামাতে পড়তে পারিনি। গত ছয় সপ্তাহ ধরে আমি জুমার নামাজেও যেতে পারিনি মসজিদ বন্ধ থাকার কারণে। প্রবাস জীবনের শুরু থেকে এই মসজিদে নারীদের জন্য নির্ধারিত স্থানে জুমার নামাজ আদায় করে আসছি। এবারের রোজা হলো করোনা রোজা, এই রোজাতে মসজিদে গিয়ে ইফতারও খেতে পারলাম না এবং ইফতার বিতরণও করতে পারলাম না। কী যে দুঃখ! প্রতিদিনই প্রায় শত লোকের আগমন হতো মনে হয়, এ যেন এক ঈদের আনন্দ। প্রতিবছরই আমরা অ্যাপার্টমেন্টে ১০/১২টি মুসলিম পরিবার প্রতি সপ্তাহে এক/দুই দিন ইফতার বিলিবণ্টন করি, এবার এটা থেকেও বঞ্চিত হলাম। প্রতি বছরই আমি, আমার ছেলেমেয়ে ও তাদের বাবা মিলে মসজিদে যেতাম তারাবির নামাজ পড়তে। সবচেয়ে দুঃখের বিষয় হল, আমার বাবাও এবার দেশে এবং ছেলেও আমার কাছে নেই। এই করোনার কারণে সে বাসায় আসতে পারেনি।
সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
We use cookies to ensure you get the best experience on our website.