রমজানের শেষ দিনগুলো ও কবর যিয়ারতের গুরুত্ব

ডেইলি বাংলাদেশ প্রকাশিত: ২১ মে ২০২০, ১৫:১০

দিনের অস্তগামী সূর্য বিদায়ের সঙ্গে সঙ্গে টুপ করে সারা পৃথিবী অন্ধকার চাদরে আচ্ছাদিত শুরু করে। এ সময় রোজাদার মানুষের মাঝে এক চাঞ্চল্য ভাব লক্ষ্য করা যায়। সবাই ইফতারের প্রস্তুতি নিতে শুরু করে। পবিত্র রমজানে নাজাতের শেষ দিনগুলো বা দশদিন শুরু হওয়ার কারণে অনেকে ইতেকাফের জন্য দরকারি জিনিসপত্র নিয়ে মসজিদে চলে আসতে শুরু করেন। এ যেন ইবাদাতের মহিমায় নিজেকে মহিমান্বিত করার ব্যাকুল প্রয়াস। কারণ নাজাতের শেষ দশদিনে মুমিন মুসলমানদের শ্রেষ্ট ইবাদাতের রাত ‘লাইলাতুল কদর’।

আল্লাহ তায়ালা এ রাতকে কেন্দ্র করে একটি সূরা নাজিল করেছেন। সেখানে ‘লাইলাতুল কদর’কে হাজার মাসের চেয়েও শ্রেষ্ঠ বলে ঘোষণা করা হয়েছে। এ শেষ দশ দিনেই আল্লাহ তায়ালা তাঁর বান্দাদেরকে জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তি দিয়ে থাকেন। নাজাতের মাস রমজানে কবরবাসীকে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হয়। এ মাস আল্লাহ তায়ালার কাছে এক সম্মানিত মাস। তাই রমজান নাজাত পাবার মাস। রমজানে জাহান্নামের আগুন থেকে কবরবাসীর মুক্তির জন্যে নিয়মিত কবর যিয়ারত করতে পারেন। পাঠাতে পারেন তাদের প্রতি ইসালে সওয়াব।

হজরত আবু হুরায়রা রাযি. বর্ণনা করেন, মানুষের প্রাণপাখি খাঁচা ছাড়তেই তাঁর সমস্ত আমল ও সওয়াবের দরজা চিরদিনের জন্যে বন্ধ হয়ে যায়। তবে তিনটি আমলের দরজা কিয়ামত অবধি খোলা থাকবে ১. সদকায়ে জারিয়া  ২. যদি কেউ এমন সন্তান রেখে যায়, যে সন্তান বাবা-মায়ের জন্য দোয়া করবে,  ৩. এমন দ্বীনি শিক্ষা রেখে যায়, যার দ্বারা মানুষ উপকৃত হতে থাকে। (মুসলিম শরিফ)। প্রত্যেক মুসলমানের উচিত রমজানের এই শেষ দিনগুলোতে কবর যিয়ারত, দোয়া-দরূদ ও ইস্তেগফার করা। এবং প্রত্যেক মৃতব্যক্তিদের রূহে সওয়াব পৌঁছানোর নিয়তে আমল করা। আমরা নিম্নের আমলগুলো করতে পারি- ১. সূরা ফতিহা ২. সূরা ইখলাস ৩. সূরা নাস ৪. সূরা ফালাক ৫. সূরা কাফিরুন ৬. সূরা কুরাইশ ৭. সূরা তাকাছুর ৮. আয়াতুল কুরসি ৯. দরূদ শরিফ ১০. ইস্তেগফার ১০. দোয়া করা।

অন্য হাদিসে আছে হজরত আবদুল্লাহ বিন বারিদা থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমরা কবরস্থানে গমন কর, কেননা এটা তোমাদের আখিরাতের কথা মুহূর্তে মুহূর্তে স্মরণ করাতে থাকে।’ (মুসলিম, তিরমিজি)। হজরত আবু হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর মায়ের কবর জিয়ারত করে এতো কাঁদলেন যে, তাঁর কান্না দেখে আশপাশের সবাই কাঁদলো। এরপর আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘আমি আমার প্রভুর কাছে অনুমতি চেয়েছি আমার মায়ের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করার। কিন্তু আমাকে অনুমতি দেয়া হয়নি। আবারও অনুমতি চাই মায়ের কবর জিয়ারত করার জন্য। এবার আমাকে অনুমতি দেয়া হলো। অতএব, তোমরাও কবর জিয়ারত কর। কেননা এটা আখিরাতকে স্মরণ করিয়ে দেয়া হয়।’ (মুসলিম, আবু দাউদ)।

হজরত বুরায়দা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে এ দোয়া শিক্ষা দিতেন, যখন তারা কবর জিয়ারতে বের হতেন দয়াটি হচ্ছে- ‘আসসালামু আলাইকুম আহলাদ দিয়ারি মিনাল মু’মিনিনা ওয়াল মুসলিমিনা ওয়া ইন্না ইনশাআল্লাহু বিকুম লা-লাহিকুন, নাসআলুল্লাহা লানা ওয়ালাকুমুল আফিয়াহ।’ অর্থ: ‘হে কবরবাসী মুমিন ও মুসলমান! তোমাদের প্রতি সালাম বা শান্তি বর্ষিত হোক। আমরাও তোমাদের সঙ্গে মিলিত হবো ইনশাআল্লাহ! আমরা আল্লাহর নিকট আমাদের জন্য ও তোমাদের নিরাপত্তা কামনা করছি। (মুসলিম, মিশকাত)। আরেক হাদিসে আছে, ‘আসসালামু আলাইকুম আহলাদ দিয়ারি মিনাল মু’মিনীনা ওয়াল মুসলিমিনা ওয়া ইয়ারহামুল্লাহুল মুসতাকদিমীনা ওয়াল মুসতায়াখিরিনা ওয়া ইন্না ইনশাআল্লাহু বিকুম লা লাহিকুন।’ 

অর্থ: কবরবাসী মুমিন ও মুসলমানদের প্রতি সালাম বর্ষিত হোক। অবশ্যই আমরাও তোমাদের সঙ্গে মিলিত হবো ইনশাআল্লাহ! আমরা আল্লাহর নিকট আমাদের জন্য ও তোমাদের নিরাপত্তা কামনা করছি। (মুসলিম)। আমাদের যাদের বাবা-মা তথা স্বজনরা মারা গেছেন। আমরা প্রতিদিন না পারি অন্তত প্রতি সপ্তাহে তাদের কবরের পাশে গিয়ে এ দোয়া পাঠ করে তাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করব। বিশেষ করে রমজানে কবর যিয়ারত করলে তো রয়েছে অভাবনীয় সওয়াব। যার ওপর আমল করা আমাদের জন্য অত্যন্ত জরুরি বিষয়।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে