![](https://media.priyo.com/img/500x/https://imaginary.barta24.com/watermarkimage?image=https://barta24.com/watermark.png&path=/uploads/news/2020/May/20/1589971357640.jpg&width=600&height=315&top=271)
আমের চাহিদা নিয়ে শঙ্কা, প্রস্তুতি নেই আড়তগুলোতে
বৈশাখের মাঝামাঝি সময় থেকে আম কেনাবেচার অস্থায়ী আড়ত প্রস্ততের কাজ শুরু করেন নাটোর জেলার সবচেয়ে বড় আম মোকাম হিসেবে পরিচিত রেলস্টেশন ফল বাজারের ব্যবসায়ীরা।
একই সময় চুক্তিবদ্ধ পাইকাররা তদারকি করেন ইজারা নেয়া আম বাগানের। নির্ধারিত সময়ে আম আহরণ ও মৌসুমব্যপী বাজারজাতকরণে অস্থায়ী শ্রমিকদের এককালীন বা মৌসুমভিত্তিক পারিশ্রমিক চুক্তিতে আড়তে আড়তে নিয়োজিত করার প্রক্রিয়া চলতে থাকে। দুই সপ্তাহের প্রস্ততি শেষে মধুমাস জ্যৈষ্ঠের শুরু থেকে বাজারে আসতে শুরু করে পাকা আম।
প্রতিবছরের ন্যায় এবার নাটোরে আম কেনাবেচার জন্য আড়তগুলোর নেই তেমন কোনো প্রস্ততি। করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে কাঙ্খিত পরিমাণে আম বিক্রি না হওয়ার আশঙ্কায় অনেক চুক্তিবদ্ধ পাইকার বাগান মালিকদের প্রদত্ত আগাম ফেরত নিয়েছেন। একই আশঙ্কা থেকে মৌসুমী ব্যবসায়ীরাও এখন পর্যন্ত বাগান মালিকদের সাথে চুক্তিতে যেতে পারেননি। তবে পরিস্থিতি বিবেচনায় কি পরিমাণ আম আহরণ হবে তা নিশ্চিত নয়।
বুধবার( ২০ মে) থেকে প্রশাসনের নির্দেশনা অনুসারে বাগান থেকে আম আহরণ শুরু করেছেন চাষিরা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সুব্রত কুমার সরকার জানান, জেলায় ৯৭৩ হেক্টর জমিতে প্রায় সাড়ে ৬ হাজার বাগানে এবার আম চাষ হয়েছে। ঝড়, শিলাবৃষ্টিসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত না হলে এবার ৮০ হাজার মেট্রিক টন আম আহরণ করা সম্ভব হবে। চলতি বছরের ১৫ আগস্ট পর্যন্ত সমগ্র জেলায় উৎপাদিত ২০টি জাতের আম আহরণ করা হবে। এর মধ্য চলতি মে মাসে ৬টি, জুন-জুলাই মাসে ১১টি এবং আগস্ট মাসে ৩ টি জাতের আম আহরিত হবে।
আম বাগান মালিকরা বলছেন, ভালো দামের আশায় বিগত বছরগুলোর মৌসুমের শুরুতেই পাইকারদের নিকট আম বিক্রি করতেন। এবারও তারা আম বিক্রি করতে প্রস্তুত। কিন্ত ব্যবসায়ীরা এখনও যোগাযোগ শুরু করেননি। এতে আম আহরণ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। অপরদিকে, আম কেনার ক্ষেত্রে এবার ভোক্তাদের ক্রয় আচরণ কেমন হবে, তা আঁচ করতে পারছেন না অনেক পাইকার ও মৌসুমী ব্যবসায়ী। আম অবিক্রিত থাকার ঝুঁকি নিয়ে মৌসুমের শুরুতেই লোকসান গুনতে রাজী নন ব্যবসায়ীরা। তবে যেসব ব্যবসায়ীরা ইতোমধ্যে আম বিক্রির চিন্তাভাবনা করছেন, তারা পরিমাণে অল্প আম কেনার কথা জানিয়েছেন। আবার শুরুতেই বাজারে আমের সরবরাহ ভালো থাকলে রয়েছে লোকসানের আশঙ্কা। এছাড়া প্রায় তিন মাস ধরে নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে মোট ২১ জাতের আম সংগ্রহের নির্দেশনার কারণে মৌসুমের শেষদিকে আহরিত আমের চাহিদাও থাকবে তুলনামূলক কম। সব মিলিয়ে উদ্ভুত পরিস্থিতিই নির্ধারণ করবে এবারের আমের বাজার।
সদর উপজেলার কাফুরিয়া ইউনিয়নের পাইকপাড়ার আম চাষি মেহেদী হাসান বলেন, 'এবার আমের চাহিদার আগাম ধারণা পাচ্ছি না। গাছে আম আছে। কেউ কিনতে চাইলে গাছ থেকেই বিক্রি করবো। এখনই বাজারে নিতে ভরসা পাচ্ছি না।'
আম ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলাম বলেন, 'প্রতিবছর আমের আগাম চাহিদা থাকে। এবার আগাম চাহিদা বলে কিছুই নেই। ব্যবসায়ীরাও চিন্তিত। পচনশীল হওয়ায় ঝুঁকি নিতে পারছেন না কেউ।'
আম বাগান মালিক ইব্রাহীম হোসেন বলেন, 'এবার আম কেনাবেচা কমে যাবার শঙ্কা থেকে মাত্র দুটো বাগান নিয়েছি। পূর্বের যে কোনো বছরের তুলনায় এবার আমে মন্দা যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি।'