বিশ্বের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নতুন করে সাজানোর নীতিমালা গৃহীত
প্রাণঘাতি করোনাভাইরাস সংক্রমণে ২১৫ টি দেশ ও অঞ্চলে সৃষ্ট বৈশ্বিক মহামারিতে ভেঙে পড়েছে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা। এ পর্যন্ত করোনায় প্রায় ৫০ লাখ মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন এবং মারা গেছে তিন লাখেরও বেশি। এই প্রেক্ষাপটে বিশ্ব স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে নতুন করে ঢেলে সাজানোর নীতিমালায় একমত হয়েছে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার সদস্য দেশগুলো। মঙ্গলবার (১৯ জুন) বাংলাদেশ সময় বিকেলে জেনেভায় এ বিষয় সংক্রান্ত একটি রেজুলেশন (নীতিমালা) গৃহীত হয়েছে। বাংলাদেশ, চীন, রাশিয়া এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন, আফ্রিকান ইউনিয়নসহ প্রায় ১৩০টি দেশ ‘কোভিড-১৯ রেসপন্স’ রেজুলেশনটি কো-স্পনসর করেছে।
সম্পর্কিত খবর করোনার উৎস ও বিস্তারে চীনের ভূমিকা জানতে তদন্ত চায় ১০০ দেশসতর্কতা ও নজরদারি নিশ্চিত না করে লকডাউন শিথিলের ফল ভয়াবহ: বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থাকরোনা নিয়ে চীনের সঙ্গে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার গোপন আঁতাত ফাঁস! এই নীতিমালায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নেতৃত্বকে স্বীকার করে নিয়ে সদস্য রাষ্ট্র, আন্তর্জাতিক সংস্থা ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালকের ভিন্ন ভিন্ন কার্যক্রমের কথা বলা আছে। বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য অত্যন্ত জরুরি বিষয়গুলো এ রেজুলেশনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশের জন্য সুলভ মূল্যে সমতার ভিত্তিতে ওষুধ বণ্টন করার বিষয়টি জোরালোভাবে বলার পাশাপাশি ট্রিপস চুক্তি ও দোহা ডিক্লারেশনের কথা বলা হয়েছে এখানে। এর ফলে করোনার চিকিৎসায় নতুন ওষুধ আবিষ্কার হলে এই রেজুলেশনের আওতায় বাংলাদেশের ওষুধ প্রস্তুতকারী কোম্পানিগুলো মেধাস্বত্ব বিষয়ে কোনও অর্থ ব্যয় না করে তা তৈরি করতে পারবে। কোভিড-১৯ প্রতিরোধের জন্য যদি কোনও দেশ কোনও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে তবে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সেটি দূর করা হবে।
এই মহামারি ঠেকানোর জন্য দেশগুলোকে গোটা সরকারি ব্যবস্থা এবং সামাজিক ব্যবস্থাকে কাজে লাগানোর কথা জানিয়ে মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণের জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে। নিরাপদ পানি ও পয়ঃনিষ্কাশনের ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে রেজুলেশনে বলা হয়েছে, স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রতিরোধমূলক পোশাকসহ অন্যান্য সামগ্রী প্রদান করতে হবে। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে প্রতিটি দেশকে সহায়তা করার আহ্বান জানিয়ে বলা হয়েছে, ডিজিটালভাবে কেউ যেন মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত তথ্য প্রদান না করে। এই রেজুলেশনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালককে এই ভাইরাস কোথা থেকে উৎপত্তি হয়েছে, কীভাবে মানুষে ছড়িয়ে পড়লো, এক বা একাধিক প্রাণীর মাধ্যমে এটি ছড়িয়েছে কিনা সেটি খুঁজে বের করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের উহান প্রদেশে করোনাভাইরাস প্রথমে ধরা পড়ে। এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পিছনে কে বা কারা দায়ী সেটি নিয়ে অনেক ‘ষড়যন্ত্র তত্ত্ব’ আছে। এমনকি যুক্তরাষ্ট্র ও চীন ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার জন্য জনসম্মুখে একে অপরকে দোষারোপ করেছে।