ঢামেকে ২ জনের প্লাজমায় প্রয়োজনীয় মাত্রায় অ্যান্টিবডি পাওয়া গেছে
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্লাজমা ডোনেট করেছেন এমন ২ জনের রক্তের নমুনায় প্রয়োজনীয় মাত্রা অনুযায়ী অ্যান্টিবডি পাওয়া গেছে। রোববার (১৭ মে) দিনগত রাতে এ তথ্য জানিয়েছে কিওর অ্যান্ড স্মাইল বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন। করোনা রোগীদের চিকিৎসাসেবায় নিয়োজিত একাধিক চিকিৎসক জানিয়েছেন, করোনায় সংক্রমিত হওয়ার পর যারা পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ওঠেন, তাদের প্রত্যেকের শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়। অর্থাৎ রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে ওঠে। করোনাজয়ী ব্যক্তির দেহে তৈরি অ্যান্টিবডি যদি করোনায় গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়া ব্যক্তির শরীরে প্রয়োগ করা হয়, তাহলে তিনি সুস্থ হয়ে ওঠেন।
এর আগে শনিবার (১৬ মে) বেলা ১১টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ট্রান্সফিউশন মেডিসিন বিভাগে এ কার্যক্রম শুরু হয়। এসময় কোভিডজয়ী চিকিৎসকের দেহ থেকে প্লাজমা সংগ্রহ করা হয়। এদিন প্লাজমা ডোনেটকারীদের মধ্যে দুজনের নমুনায় প্রয়োজনীয় মাত্রায় এ্যান্টিবডি পাওয়া গেছে। এ থেরাপির সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পরীক্ষার মাধ্যমে নির্দিষ্ট মানে উত্তীর্ণ হলেই প্রথম ঢাকা মেডিকেলে করোনা রোগীদের দেহে প্রয়োগ করা হবে এ প্লাজমা। অত্যাধুনিক অ্যাফারেসিস মেশিনের মাধ্যমে রক্তের প্লাজমা দান করেন দেলোয়ার হোসেন নামে এক চিকিৎসক। সেসময় তিনি বলেন, করোনা প্রতিরোধে সীমিত সুযোগের প্রেক্ষাপটে এ থেরাপি আশার আলো হয়ে উঠেছে। কোভিড নাইন্টিন থেকে সেরে ওঠা সামর্থ্যবান মানুষদের প্লাজমা দেওয়ার অনুরোধ করেন এ চিকিৎসক।
অসুস্থ ব্যক্তির শরীরে করোনাজয়ীর অ্যান্টিবডি প্রয়োগের পর অনেকে সুস্থ হয়ে ওঠায় চীন, ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ বিশ্বের অনেক দেশে প্লাজমা থেরাপির প্রয়োগ শুরু হয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, মানুষের রক্তের জলীয় অংশকে বলা হয় প্লাজমা। রক্তে প্লাজমা থাকে ৫৫ ভাগ। করোনাজয়ীর অ্যান্টিবডি থাকে রক্তের প্লাজমায়। সুস্থ ব্যক্তির দেহ থেকে প্লাজমা সংগ্রহ করে তা করোনায় সংক্রমিত অসুস্থ ব্যক্তির শরীরে প্রয়োগ করা হয় বলে এই চিকিৎসাপদ্ধতির নাম হয়েছে 'প্লাজমা থেরাপি'। উল্লেখ্য, এই প্লাজমা থেরাপি ঠিকঠাক কার্যকর হলে উন্নত দেশগুলোর মতো বাংলাদেশের করোনা রোগীদের চিকিৎসায় এটি হবে নতুন দিগন্ত। এমনটা মনে করেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।