করোনা চিকিৎসায় অস্বাভাবিক টাকা চাইছে প্রাইভেট হাসপাতালগুলো : তথ্যমন্ত্রী
করোনাভাইরাসের চিকিৎসা দিতে সরকারের কাছে প্রাইভেট হাসপাতালগুলো অস্বাভাবিক টাকা দাবি করছে জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, হাসপাতালের উদ্দেশ্য যদি বাণিজ্য হয়, তাহলে সেটিকে হাসপাতাল বলা কঠিন। আজ শনিবার রাজধানীর মিন্টো রোডের সরকারি বাসভবনে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) নেতাদের করোনাভাইরাস প্রতিরোধ সামগ্রী বিতরণের সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তথ্যমন্ত্রী।
করোনাভাইরাসের সংকটে বেসরকারি হাসপাতালের ভূমিকা কীভাবে দেখছেন জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, খুবই দুঃখজনক যে প্রাইভেট হাসপাতালগুলো করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের সেবা দেওয়ার জন্য যেভাবে এগিয়ে আসার প্রয়োজন ছিল সেভাবে তারা আসেনি। এবং অনেক হাসপাতাল তারা নিজেরাই অনেকটা বন্ধ করে রেখেছে। সেখানে কোনো করোনা রোগী গেলে তাকে সহায়তা তো দূরের কথা, তাকে অন্য জায়গায় ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে, যা আমরা প্রতিনিয়ত বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় দেখছি। এটি অত্যন্ত অমানবিক আচরণ। হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করা হয় মানুষকে সেবা দেওয়ার জন্য। হাসপাতালে করোনা রোগীর চিকিৎসা দেওয়ার কথা সরকারে পক্ষ থেকে বলা হলে অস্বাভাবিক টাকা চাওয়া হয় বলেও দাবি করেন তথ্যমন্ত্রী। মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা দেখতে পাচ্ছি সরকারের পক্ষ থেকে যখন কোনো হাসপাতালে করোনাভাইরোসের রোগীকে চিকিৎসা করার জন্য হায়ার করার কথা বলা হয়, তখন অস্বাভাবিক টাকা দাবি করা হয়। ২০০ বেডের একটি হাসপাতাল মাসে ১৭ কোটি টাকা দাবি করেছে। একই সাথে ডাক্তার ও নার্সদের থাকা-খাওয়ার টাকাও দাবি করেছে, যেটি অস্বাভাবিক।’ ‘এই সময়ে আমি আশা করব, বেসরকারি হাসপাতালগুলো সেবার মানসিকতা নিয়ে জনগণের সেবায় এগিয়ে আসবে। বাণিজ্যের মানসিকতাটা পরিত্যাগ করবেন। এখানে ব্যতিক্রমও আছে। সেব বেসরকারি হাসতাপাতল মানুষের সেবায় এগিয়ে এসেছে, কিছু কিছু বেসরকারি হাসপাতাল এগিয়ে আসছে তাদের ধন্যবাদ জানাই, পাশাপাশি আমি আশা করব অন্য বেসরকারি হাসপাতাল তাদের অনুকরণ করবে।’ সরকার মানুষের জীবন বাঁচাতে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বলে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর বক্তব্যের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপি নেতারা প্রতিদিনই নানা ধরনের মিথ্যাচার করে যাচ্ছে। সরকার যে করোনাভাইরাস মোকাবিলা করার ক্ষেত্রে, মানুষকে করোনাভাইরাসের হাত থেকে রক্ষা করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশে যাতে লোক ক্ষয় না হয়, এ জন্য যে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে সেগুলোকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য সরকারের যে ভালো কাজগুলো সেগুলোকে প্রশংসা না করে বরং সেগুলোর সমালোচনায় প্রতিদিন তারা ব্যস্ত। তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, বাংলাদেশের মৃত্যুহার ভারতের চেয়ে অর্ধেকের কম, পাকিস্তানের চেয়েও কম। এই মৃত্যুহারটা গণনা করা হয়, কতজন রোগী শনাক্ত হলো আর কতজন মৃত্যুবরণ করেছে তার ওপর।’ তথ্যমন্ত্রী আরো বলেন, ‘বাংলাদেশের শনাক্তের ১ দশমিক ৪৮ শতাংশ মৃত্যুবরণ করেছে, ভারতের ৩ দশমিক ২ শতাংশ, পাকিস্তানেন ২ দশমিক ১৪ শতাংশ, আমেরিকায় ৫ দশমিক ৯২ শতাংশ, যুক্তরাজ্যে ১৪ দশমিক ৩৬ শতাংশ, স্পেনে ১০ শতাংশ ও ইতালিতে ১৪ দশমিক ১১ শতাংশ। অর্থাৎ এই তথ্য-উপাত্তই বলে বাংলাদেশে মৃত্যুর হার আশপাশে দেশগুলো থেকে তো কম বটেই পৃথিবীর প্রেক্ষাপটে ইউরোপ আমেরিকার চেয়ে অনেক অনেক কম।