নাজাতের দশকে যে দোয়া বেশি পড়বেন
মহান আল্লাহ তাআলার অপার অনুগ্রহে বিশ্ব মুসলিম উম্মাহ পবিত্র রমজানের এ শেষ দশকে বিশেষ ইবাদত-বন্দেগিতে রত থেকে অতিবাহিত করছেন। রমজানের শেষ দশক অর্থাৎ নাজাত বা মুক্তির দশকে দোয়া কবুলিয়তের বিশেষ মুহূর্ত সৃষ্টি হয়। রোজাদার একাগ্রতার সঙ্গে তার প্রভুকে ডাকেন এবং তার সন্তুষ্টি কামনা করেন। হজরত ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘সৎ কর্মশীলতার দিক দিয়ে আল্লাহর দৃষ্টিতে রমজানের শেষ দশকের চেয়ে মহৎ ও প্রিয় আর কোনো দিন নেই।’ (মুসনাদ আহমদ) কেননা রমজানের এ শেষ দশকেই আসে সেই সৌভাগ্যের রাত 'লাইলাতুল কদর'। হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণনা করেন, একবার আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলাম- হে আল্লাহর রাসুল! (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আপনি বলে দিন, আমি যদি লাইলাতুল কদর কোন রাতে হবে তা জানতে পারি, তাতে আমি কী (দোয়া) পড়বো?রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তুমি বলবে-اللَّهُمَّ إِنَّكَ عُفُوٌّ تُحِبُّ الْعَفْوَ فَاعْفُ عَنِّيউচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুয়্যুন তুহিব্বুল আফওয়া ফাফু আন্নি।’অর্থ : ‘হে আল্লাহ! তুমি ক্ষমাশীল, ক্ষমা করতে ভালোবাস অতএব আমাকে ক্ষমা করে দাও।’ (মুসনাদে আহমাদ, ইবনে মাজাহ, তিরমিজি, মিশকাত) এ দোয়ার সাথে নাজাতের দশকে আমরা পবিত্র কুরআনের এই দোয়াগুলোও বেশি বেশি পড়বো-- رَبَّنَا مَا خَلَقْتَ هَذا بَاطِلاً سُبْحَانَكَ فَقِنَا عَذَابَ النَّارِউচ্চারণ : ‘রাব্বানা মা খালাক্বতা হাজা বাতিলাং সুবহানাকা ফাক্বিনা আজান্নার।’ অর্থ ‘হে আমাদের প্রভু! তুমি এ (বিশ্বকে) বৃথা সৃষ্টি করনি। তুমি পবিত্র। সুতরাং তুমি আমাদের আগুনের শাস্তি থেকে রক্ষা কর।’ (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ১৯১) - رَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِউচ্চারণ : ‘রাব্বানা আতিনা ফিদ্দুনইয়া হাসানাতাঁও ওয়া ফিল আখিরাতি হাসানাতাঁও ওয়াক্বিনা আজাবান্নার।’অর্থ : ‘হে আমাদের প্রভু! আমাদেরকে দুনিয়া এবং পরকালেও কল্যাণ দান কর আর আমাদের আগুনের আজাব থেকে রক্ষা কর।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ২০১) - رَبِّ إِنِّي ظَلَمْتُ نَفْسِي فَاغْفِرْ لِيউচ্চারণ : ‘রাব্বি ইন্নি জ্বালামতু নাফসি ফাগফিরলি।’অর্থ: ‘হে আমার প্রভু! নিশ্চয় আমি আমার আত্মার ওপর অত্যাচার করেছি। সুতরাং তুমি আমাকে ক্ষমা কর।’ (সুরা কাসাস: আয়াত ১৬) - رَبَّنَا وَسِعْتَ كُلَّ شَيْءٍ رَّحْمَةً وَعِلْمًا فَاغْفِرْ لِلَّذِينَ تَابُوا وَاتَّبَعُوا سَبِيلَكَ وَقِهِمْ عَذَابَ الْجَحِيمِউচ্চারণ : ‘রাব্বানা ওয়াসিতা কুল্লা শাইয়ির রাহমাতাঁও ওয়া ইলমাং ফাগফির লিল্লাজিনা তাবু ওয়াত্তাবাউ সাবিলাকা ওয়াক্বিহিম আজাবাল ঝাহিম।’অর্থ : ‘হে আমাদের প্রভু! তুমি প্রত্যেক বস্তুকে নিজ কৃপা ও জ্ঞান দ্বারা পরিবেষ্টন করে রেখেছ। সুতরাং যারা তওবা করে এবং তোমার পথ অনুসরণ করে তুমি তাদেরকে ক্ষমা কর ও দোযখের শাস্তি থেকে রক্ষা কর।’ (সুরা আল-মুমিন : আয়াত ৭) - رَبَّنَا آمَنَّا فَاغْفِرْ لَنَا وَارْحَمْنَا وَأَنتَ خَيْرُ الرَّاحِمِينَউচ্চারণ : ‘রাব্বানা আমান্না ফাগফিরলানা ওয়ারহামনা ওয়া আংতা খাইরুর রাহিমিন।’অর্থ : ‘হে আমাদের পালনকর্তা! আমরা বিশ্বাস স্থাপন করেছি। অতএব তুমি আমাদেরকে ক্ষমা কর ও আমাদের প্রতি রহম কর। তুমি তো দয়ালুদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ দয়ালু।’ (সুরা মুমিনুন : আয়াত ১০৯) - رَبَّنَا اغْفِرْ لَنَا وَلِإِخْوَانِنَا الَّذِينَ سَبَقُونَا بِالْإِيمَانِ وَلَا تَجْعَلْ فِي قُلُوبِنَا غِلًّا لِّلَّذِينَ آمَنُوا رَبَّنَا إِنَّكَ رَؤُوفٌ رَّحِيمٌউচ্চারণ : ‘রাব্বানাগফিরলানা ওয়ালি ইখওয়ানিনাল্লাজিনা সাবাকুনা বিল ঈমানি ওয়া লা তাঝআল ফি কুলুবিনা গিল্লাল লিল্লাজিনা আমানু রাব্বানা ইন্নাকা রাউফুর রাহিম।’অর্থ : 'হে আমাদের পালনকর্তা! আমাদের এবং ঈমানে আগ্রহী আমাদের ভাইদের ক্ষমা কর এবং ঈমানদারদের বিরুদ্ধে আমাদের অন্তরে কোনো বিদ্বেষ রেখো না। হে আমাদের পালনকর্তা! আপনি দয়ালু, পরম করুণাময়।'