মুসলমানরা 'করোনা ছড়াচ্ছে' বলে হিন্দুদের টিটকিরি থেকে দাঙ্গা
করোনাভাইরাস পরীক্ষা এবং লোকজনকে কোয়ারেন্টিনে নিয়ে যাওয়াকে কেন্দ্র করে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের হুগলীতে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় হিন্দু আর মুসলমান - উভয় সম্প্রদায়ের দোকান, বাড়ি ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ আর বোমাবাজি হয়েছে।দেশটিতে রোববার প্রথম উত্তেজনা তৈরি হলেও পুলিশ বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করার পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এসেছিল। কিন্তু মঙ্গলবার দুপুর থেকে নতুন করে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয়রা জানান, কয়েকদিন আগে করোনাভাইরাস পরীক্ষার একটি শিবির করা হয়েছিল দেশটির তেলেনিপাড়া এলাকায়। পরীক্ষায় প্রথমে একজন আর তারপরে আরও কয়েকজনের পজিটিভ রিপোর্ট আসে। ঘটনাচক্রে তারা সকলেই মুসলমান।চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেট এলাকার অধীন তেলেনিপাড়া এবং লাগোয়া ভদ্রেশ্বর আর চন্দননগরের উর্দিবাজার এলাকায় বুধবার নতুন করে সংঘর্ষ হয় নি, কিন্তু উত্তেজনা রয়েছে এলাকায়।তিন দফায় মোট ১১২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার হুমায়ূন কবীর।ওই অঞ্চলে চটকল আছে, আর সেখানে হিন্দু এবং মুসলমানদের বসবাসের এলাকা মোটামুটিভাবে আলাদা।এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, ‘ক্যাম্পটা মুসলমান প্রধান এলাকায় হয়েছিল, তাই স্বাভাবিকভাবেই পজিটিভ এলে মুসলমানদেরই হবে। কিন্তু সেটা নিয়ে হিন্দুদের একাংশ মুসলমান বিদ্বেষ ছড়াতে থাকে। মুসলমানরাই করোনা ছড়াচ্ছে বলে টিটকিরি করা হয়।’তবে গোটা ঘটনার আরেকটা বর্ণনাও পাওয়া গেছে হিন্দুত্ববাদীদের কাছ থেকে। তারা বলছেন করোনা সংক্রমিতরা কোয়ারেন্টিনে যেতে অস্বীকার করছিলেন বলেই হিন্দু প্রতিবেশিরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন সংক্রমণ তাদের মধ্যেও ছড়াতে পারে এই আশঙ্কায়।তাদের বক্তব্য সেজন্যই ব্যারিকেড করে দেওয়া হয় ওই এলাকাটি।কিন্তু এলাকার মুসলিমরা জানায় মুসলিম প্রধান এলাকাটি কেউ ব্যারিকেড তুলে বন্ধ করে দিয়েছিল, ফলে যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায়।তার পরেই উত্তেজনা চরমে পৌঁছায় মঙ্গলবার দুপুরে। ব্যাপক বোমাবাজি চলে, দোকান বাড়ি ভাঙচুর করা হয়।চটকল অধ্যুষিত এলাকাটিতে হিন্দু এবং মুসলমানদের বসবাসের এলাকা মোটামুটিভাবে আলাদা। যেসব ছবি নানা সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে হিন্দু-মুসলমান - উভয় পক্ষেরই দোকান বাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। তবে বোমাবাজির ব্যাপারে একে অন্য পক্ষের ওপরে দায় চাপাচ্ছেন। ওই অঞ্চলে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করা হয়েছে যাতে কেউ গুজব ছড়িয়ে অশান্তি না বাড়াতে পারে।বিজেপির স্থানীয় সংসদ সদস্য লকেট চ্যাটার্জি পুলিশ নিষ্ক্রিয় ছিল বলে অভিযোগ করেছেন।সূত্র: বিবিসি