![](https://media.priyo.com/img/500x/https://paloimages.prothom-alo.com/contents/cache/images/600x315x1xxxxx1/uploads/media/2020/05/12/511d47c02902da9d405a5783229fdfb9-5eb998ef9358f.jpg?jadewits_media_id=1531613)
প্রবল থেকে প্রবলতর হচ্ছে অস্তিত্বের সংকট
ঢাকার দরজি দোকানগুলোয় এ সময় রাত–দিন সেলাই মেশিনের ঘর্ঘর শব্দে মুখর থাকার কথা। কিন্তু সেগুলোর ঝাঁপ বন্ধ। স্তব্ধ, নীরব। গুলিস্তান এলাকার ঝাঁপ বন্ধ দরজির দোকানগুলোর সাইনবোর্ডে থাকা সেল নম্বরে ফোন করে মালিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, প্রায় দুই মাস হতে চলল তাঁদের দোকান-কারখানা সব বন্ধ। কারিগরদের বেতন দিতে পারছেন না, তাঁদের বাড়িতে খাবার নেই। মালিকদের লাখ লাখ টাকা লোকসান হচ্ছে। ধারকর্জও পাওয়া যাচ্ছে না। অনেকে স্ত্রীর গয়না বিক্রি করে দিন পার করছেন। গতকাল সোমবার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ের আপ-টু-ডেট টেইলার্সের মালিক নজরুল ইসলামের সঙ্গে কথা হলো। তিনি জানালেন, তাঁর প্রতিষ্ঠানে ৩ জন কাটিং মাস্টার ও ২০ জন সেলাইয়ের কারিগরসহ মোট কর্মচারী ২৫ জন। দোকান ভাড়া বেতন, ভ্যাট, ইলেকট্রিক বিলসহ মোট মাসিক খরচ প্রায় দেড় লাখ টাকা। গত ২৪ মার্চ থেকে দোকান বন্ধ। এখন ঈদের মৌসুম। এ সময়ই বছরের প্রধান আয় হয়ে থাকে। এবার আয় দূরে থাক, কর্মচারীদের বেতন দেওয়াটাই তাঁর পক্ষে কঠিন হয়ে পড়েছে। এরপর নিজের সংসারের খরচ তো আছেই। অবর্ণনীয় অবস্থা। টিকে থাকার এক কঠিন পরীক্ষা চলছে।
এই পেশায় প্রায় ৪০ বছরের অভিজ্ঞতা থেকে জানালেন, ১৯৮৮ সালের বন্যার সময় একটা বড় সংকট হয়েছিল। প্রায় দুই সপ্তাহের মতো দোকান বন্ধ রাখতে হয়েছিল। কিন্তু এখন পুরো অনিশ্চিত অবস্থা। কবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে, কেউ জানে না। একই রকম অভিজ্ঞতার কথা বললেন বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ের সলিমাবাদ ভবনের ম্যাপ’স রুমা টেইলার্স অ্যান্ড ফেব্রিকসের মালিক আজমল হোসেন। তাঁদের চারজন অংশীদারের বেশ বড় এই প্রতিষ্ঠান। প্রায় ৪০ জন কর্মচারী। বেতন, ভাড়া ও আনুষঙ্গিক মিলিয়ে মাসে সাড়ে তিন লাখের ওপর খরচ। আয় বন্ধ। কর্মচারীরা বাড়ি চলে গেছেন। বহু বছরের স্থায়ী কর্মচারী। হুট করে ছেড়ে দেওয়া যায় না। তাঁরা দুরবস্থার কথা বলে টেলিফোন করতে থাকেন। ফলে নিজেদের অবস্থা যেমনই হোক, বিকাশে কিছু কিছু করে টাকা পাঠাতে হয়। এভাবে আর কত দিন চলবে, কিছুই ভাবতে পারছেন না।