'কী দুর্ভাগ্য, বাবার দাফনে অংশ নিতে পারলাম না'
'কী দুর্ভাগ্য, বাবার দাফনেও অংশ নিতে পারলাম না। শেষ সময় বাবার জন্য একটু দোয়া করতে পারলাম না। জীবনে এমন কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি কখনও হইনি। এমন অবস্থার কথা কল্পনাও করিনি।' ফোনের ওপাশ থেকে আতঙ্কমিশ্রিত কণ্ঠে এভাবেই নিজের কথাগুলো প্রকাশ করলেন করোনায় আক্রান্ত হয়ে গতকাল শনিবার মিরপুরের একটি হাসপাতালে মারা যাওয়া এক ব্যক্তির ছেলে। গতকাল সন্ধ্যায় সমকালের সঙ্গে তিনি তার জীবনের সবচেয়ে মর্মস্পর্শী অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন। বৈরী সময় কখনও কখনও মানুষকে কতটা নিষ্ঠুর ও অসহায় পরিস্থিতির মধ্যে ঠেলে দিতে পারে, তার করুণ চিত্রটিই চোখের সামনে মূর্ত হয়ে ওঠে ওই ভাগ্যাহত সন্তানের কথায়।ফোন ধরেই তিনি বললেন, 'একটি নম্বর থেকে অনেকবার ফোন আসছে। ট্রু কলারে নিশ্চিত হই, এটি সমকালের একজন সংবাদকর্মীর। কয়েকবার ভেবেছি, এমন পরিস্থিতিতে ফোন রিসিভ করব না। আমিসহ পরিবারের সবাই কোয়ারেন্টাইনে রয়েছি। বাবার জন্য তীব্র কষ্ট হচ্ছে। নিজেদের জন্য ভাবছি। দেশের জন্যও চিন্তা হচ্ছে। পরে সিদ্ধান্ত নিলাম, ফোন করে অন্তত কিছু কথা জানাই, যাতে অন্যদের মধ্যে বিভ্রান্তি না ছড়ায়। সচেতন নাগরিক হিসেবে এটুকু বলা প্রয়োজন।' এসব কথা যিনি বলছেন, তিনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়া সেই ৭৩ বছর বয়সী বাবার সন্তান, যার কাছে প্রিয়জন হারানোর শোক ভালো করে বুঝে ওঠারও সময় মেলেনি। তার আগেই পরিবারের বাকি সদস্যদের সঙ্গে নেমে যেতে হয় করোনা সংক্রমণ থেকে আত্মরক্ষার যুদ্ধে।কোয়ারেন্টাইন থেকে শোকাহত সন্তান সমকালকে আরও বললেন, 'প্রথমেই সবাইকে এটা নিশ্চিত করতে চাই- আমার বাবা বিদেশফেরত কারও সংস্পর্শে ছিলেন না। ছোট বোনজামাই জাপানে থাকেন। দেড় বছর ধরে সেখানেই রয়েছেন তিনি। বড় দুলাভাই চট্টগ্রামে থাকেন। আমি চাকরি করি মতিঝিলে। আমার ছোট ভাইও একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে। গত কয়েক মাসে বিদেশফেরত কেউ আমার বাবার সংস্পর্শে আসেননি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কেউ কেউ বলছেন, 'মিরপুরের যে ব্যক্তি করোনায় মারা গেছেন, তিনি বিদেশফেরতদের সংস্পর্শের হিস্ট্রি গোপন করেছেন। মিরপুরের ওই হাসপাতাল থেকে আমরা পালিয়ে এসেছি।' এটা আমি সবাইকে শতভাগ নিশ্চিত করছি, এ ধরনের কোনো কিছু গোপন করা হয়নি। আমরা হাসপাতাল থেকে পালিয়েও চলে আসিনি। বাবাকে যাতে মিরপুরের ওই হাসপাতাল থেকে স্থানান্তর করে করোনার চিকিৎসা সুবিধা রয়েছে এমন হাসপাতালে নেওয়া যায়, সে ব্যাপারে বাধ্য হয়ে পুলিশের সহায়তাও চেয়েছি। আমি জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) কর্তৃপক্ষকে সব বিষয়ে বলেছি।'করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া ওই ব্যক্তির ছেলে বলেন, 'শুক্রবার দুপুরে আইইডি