আন্দাজে সিল বসছে খাদ্যপণ্যে
দেশে মোড়কজাত খাদ্যপণ্যের গায়ে মেয়াদ ও উৎপাদনের তারিখ বসাতে কোনো নিয়মনীতিরই তোয়াক্কা করছে না উৎপাদক ও বিপণন প্রতিষ্ঠানগুলো। অনেকটা আন্দাজের ওপরেই তারা পাস্তুরিত দুধ, বেকারি পণ্য, পোল্ট্রি মুরগির মাংসসহ নানা খাদ্যপণ্যের মোড়কে উৎপাদন ও মেয়াদের তারিখ বসাচ্ছে। প্রতিষ্ঠানগুলো কিসের ভিত্তিতে এই মেয়াদের দিন নির্ধারণ করছে তা জানতে মাঠে নেমেছে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ। আগামী মার্চের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে এ বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশনা দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে উৎপাদিত পণ্য ও খাদ্যপণ্য বিপণনের আগে মেয়াদের বিষয়টি কঠোরভাবে নজরদারি করা হয়। বিভিন্ন দেশে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে এ-সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠানও রয়েছে। বাংলাদেশেও বিশেষজ্ঞদের দিয়ে মেয়াদ বসানো সেখানে বাধ্যতামূলক। তবে সেটা অনেকটাই কাগুজে কথা। জোরালো নজরদারি না থাকায় ‘অনুমানের’ ভিত্তিতে মেয়াদ ও উৎপাদনের তারিখ বসানোর অভিযোগ রয়েছে।কারণ অনেক নামিদামি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি ব্যাঙের ছাতার মতো অনেক খাদ্যপণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে দেশজুড়ে। যাদের কাছ থেকে বিশেষজ্ঞদের মতামতে সেলফ লাইফ স্টাডি করে পণ্যে মেয়াদ বসানোর আশা করা কল্পনারও বাইরে। আর বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের-বিএসটিআই খাদ্যপণ্য অনুমোদন ও মেয়াদ রাখার বিষয়টি নির্ধারণ করলেও কীভাবে এসব দেয়া হচ্ছে তা খুব একটা খোঁজ রাখেন না বলে অভিযোগ আছে। যদিও তারা পণ্যে মেয়াদ উল্লেখের বিষয় নির্দেশনা দিয়ে রেখেছে। তবে প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা বলছেন, তারা নিয়মিত এসব বিষয় তদারকি করেন। যদি কোনো প্রতিষ্ঠানের সেলফ লাইফ স্টাডির সঙ্গে পণ্যের মানের ভিন্নতা পাওয়া যায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। এমন অবস্থায় এবার পণ্যে মেয়াদ দেয়ার বিষয়টি দেখভালে মাঠে নেমেছে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ। ভেজাল, মানহীন খাদ্যপণ্য উৎপাদন ও বিক্রি রোধে কাজ করে যাওয়া প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্টদের কাছে পাঠানো হয়েছে নির্দেশনাপত্র। আলাদা করে সবাইকে দিতে হবে খাদ্যপণ্যের মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি বা গবেষণার ওপর দেয়া হয় তার সেলফ লাইফ স্টাডি রিপোর্ট। বিশেষ করে দুধ, বিস্কুট কেকসহ অন্যান্য বেকারি আইটেম, জুস, পোল্ট্রি, মাংস এবং রান্নার জন্য প্রস্তুত থাকে এমন পণ্যের প্রতিষ্ঠানকে দেয়া হচ্ছে এই চিঠি। আগামী ৭ মার্চের মধ্যে এসব প্রতিষ্ঠানকে তাদের প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।