পলাতক ৪ আসামির সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ

মানবজমিন প্রকাশিত: ০৪ ডিসেম্বর ২০১৯, ০০:০০

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার পলাতক ৪ আসামীর সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। সেই সঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে হুলিয়া জারির আদেশ দেয়া হয়েছে। এদিকে বুয়েটে র‌্যাগিংয়ের নামে নিপীড়ন ও সাংগঠনিক ছাত্ররাজনীতির জন্য শাস্তি ‘চিরতরে বহিষ্কারের’ নির্ধারণ করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে কর্তৃপক্ষ।সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশনা গতকাল ঢাকার এডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কায়সারুল ইসলাম এই আদেশ দেন। এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) হেমায়েত উদ্দিন খান। হেমায়েত উদ্দিন খান বলেন, আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার পলাতক ৪ আসামির বিরুদ্ধে আগে আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন। তাদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি এমন প্রতিবেদন আদালতে জমা দেয় পুলিশ। আদালত গতকাল এই ৪ পলাতক আসামির সম্পত্তি ক্রোকের আদেশ দিয়েছেন। এছাড়া তাদের বিরুদ্ধে হুলিয়া জারি করেছেন। মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য ৫ই জানুয়ারি দিন ধার্য করেছেন আদালত।যে ৪ আসামির বিরুদ্ধে হুলিয়া জারির আদেশ দেয়া হয়েছে, তারা হলেন- মোর্শেদুজ্জামান জিসান, এহতেশামুল রাব্বি তানিম, মোর্শেদ অমর্ত্য ইসলাম ও মুজতবা রাফিদ। আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় গত ১৩ই নভেম্বর ২৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। আসামিদের মধ্যে ২১ জন কারাগারে আছেন।এদিকে বুয়েটে র‌্যাগিংয়ের নামে নিপীড়ন ও সাংগঠনিক ছাত্ররাজনীতির জন্য শাস্তির মাত্রা নির্ধারণ করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ পরিদপ্তরের পরিচালক মিজানুর রহমানের স্বাক্ষর করা ওই বিজ্ঞপ্তিতে র‌্যাগিং ও রাজনীতি- দুই ক্ষেত্রেই শাস্তির সর্বোচ্চ মাত্রা ‘চিরতরে বহিষ্কার’ রাখা হয়। বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে নির্মমভাবে পিটিয়ে  হত্যার পর আন্দোলনে নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ১০ দফা দাবিতে আন্দোলন করে আসছিলেন তারা। এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সব দাবিই পূরণ হল। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ভবিষ্যতে র‌্যাগিংয়ের সঙ্গে জড়িতদের এবং সাংগঠনিক রাজনীতির বিভিন্ন কার্যক্রমে জড়িতদের অভিযোগসমূহ মূল্যায়ন ও শাস্তি নির্ধারণ বিষয়ে গঠিত কমিটির রিপোর্টের আলোকে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় অভিযুক্তদের বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি নির্ধারণ করা হয়েছে।এর মধ্যে র‌্যাগিংয়ের শাস্তি নির্ধারণ করা হয়েছে তিন ধাপে। র‌্যাগিংয়ের কারণে কোনো ছাত্রের মৃত্যু হলে, গুরুতর শারীরিক ক্ষতি বা প্রতিবন্ধিতা  তৈরি হলে, মানসিক ভারসাম্যহীনতা তৈরি হলে কিংবা শিক্ষাজীবন ক্ষতিগ্রস্ত হলে অভিযুক্তকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চিরতরে বহিষ্কার করা হবে। পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন কর্মকর্তা।র‌্যাগিংয়ের নামে মৌখিক বা শারীরিক লাঞ্ছনা, অর্থ বা জিনিসপত্র কেড়ে নেয়া, উত্ত্যক্ত করা, সাময়িক মানসিক ক্ষতি করা, হুমকি দেয়া বা শিক্ষাজীবন ক্ষতিগ্রস্ত করার চেষ্টার জন্য সতর্ক করা, জরিমানা করা, হল থেকে চিরতরে বহিষ্কার কিংবা একটি নির্দিষ্ট সময় শিক্ষা কার্যক্রম থেকে বিরত রাখার শাস্তি হতে পারে। পাশাপাশি অভিযুক্তকে ক্লাসে ফেরার আগে মনো-সামাজিক কাউন্সেলিংয়ের মধ্য দিয়ে যেতে হবে।র‌্যাগিংয়ের পরোক্ষ অংশগ্রহণ কিংবা র‌্যাগিংয়ের সময় উপস্থিতি, বিশ্ববিদ্যালয়ে নবাগতদের কোনো কাজ করতে বাধ্য করার ক্ষেত্রে অভিযুক্তকে সতর্ক করা, জরিমানা করা, হল থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা যাবে। পাশাপাশি তাকে বাধ্যতামূলকভাবে সোশ্যাল সাইকোলজি বা এথিকস কোর্স করতে হবে।আর যে কোনো মাধ্যমে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সাংগঠনিক রাজনীতিতে কারও সংশ্লিষ্টতা প্রকাশ পেলে, রাজনৈতিক সংগঠনের পদে থাকলে, বিশ্ববিদ্যালয়ে বা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ব্যবহার করে মিছিল, মিটিং, পোস্টার টাঙানোর মত রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করলে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে কাউকে উদ্বুদ্ধ বা বাধ্য করলে মাত্রা অনুযায়ী সতর্ক করে দেয়া, জরিমানা করা, সাময়িকভাবে শিক্ষা কার্যক্রম থেকে বিরত রাখা এবং সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চিরতরে বহিষ্কার করার সুযোগ থাকবে।উল্লেখ্য, গত ৬ই অক্টোবর শেরে বাংলা হলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের নির্যাতনে মৃত্যু হয় দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের। এরপর থেকেই আন্দোলনে অচল বুয়েট। বন্ধ সকল একাডেমিক কার্যক্রম। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ১০ দফা দাবিতে আন্দোলন করে আসছে। এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সকল দাবি মেনে নিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও