গত দুইদিন ধরে নাওয়া-খাওয়া নেই তাদের। সৃষ্টিকর্তার কাছে একটিই চাওয়া ছিল সবকিছুর বিনিময়ে হলেও যেন আদরের মেয়েটাকে ফিরিয়ে দেন তিনি। নিজের মেয়েকে নিজের কাছে শত চেষ্টা করেও রাখতে পারেননি তিনি। আদরের মেয়ে আকলিমা আক্তার জুঁই চলে গেছেন না ফেরার দেশে। দুইদিন হাসপাতালে থাকার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ইডেন কলেজের মাস্টার্সের ছাত্রী জুঁই। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। গতকাল সকালে চিকিৎসক জুঁইকে মৃত ঘোষণা করেন। হাসপাতালে জুঁইয়ের সঙ্গে ছিলেন মা রোকেয়া বেগম সুমি ও মেজো বোন তানজিনা আক্তার। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তার মা বলেন, সংবাদ পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে ছুটে আসি। কিন্তু জুঁইয়ের সঙ্গে কোনো কথা বলতে পারিনি। মনে হচ্ছিলো মেয়েটা কি যেনো বলতে চাইছে, অথচ কিছুই বলেনি। আমার খুব আদরে মেয়ে ছিলো জুই। আমার এই ছোট মেয়েটা কথায় কথায় অভিমান করতো। এ কেমন অভিমান করলো মেয়েটি। শেষ বেলায় তো একটু কথাও বলতে পারলাম না। আমাদের সঙ্গে এখন অভিমান করবে কে? জুইয়ের স্বপ্ন ছিলো বিএসএস ক্যাডার হবে। সেই স্বপ্নের চলছিলো প্রস্তুতি। নিয়মিত প্রস্তুতির অংশ হিসেবে করতেন বিসিএস কোচিং। সপ্তাহে তিনদিন যেতেন কোচিংয়ে। প্রায় সময়ই উবারের বাইকে করে চলতেন তিনি। শনিবার সকালে বাসা থেকে উবারের মোটরসাইকেলে চড়ে ফার্মগেট যাচ্ছিলেন। কিন্তু এই যাওয়াই যে তার শেষ যাওয়া কে জানতো! সেই উবারের বাইকটি বিজয় সরণির মোড়ে পৌঁছালে পেছন থেকে পড়ে গিয়ে মাথায় আঘাত পান জুঁই। থেতলে যায় তার মাথা। পরে মোটরসাইকেল চালক তাকে উদ্ধার করে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে যান। নিহতের ভগ্নিপতি মো. মাসুদ জানান, তাদের বাড়ি নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার সুন্দরপুর গ্রামে। জুঁইয়ের বাবার নাম আবুল কালাম। পরিবারের সঙ্গে জুঁই থাকতেন মিরপুর পূর্ব কাজীপাড়া ৫০৩ নম্বর বাসায়। তিন বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন ছোট। মাসুদ আরও জানান, জুঁই ফার্মগেটে একটি কোচিং সেন্টারে পড়তেন। শনিবার সকালে মিরপুরের বাসা থেকে উবারের মোটরসাইকেলে করে ফার্মগেটে ওই কোচিং সেন্টারের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে বিজয় সরণীতে মোটরসাইকেল থেকে তিনি পড়ে যান। পরে উবার চালক তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। এদিকে জুঁইয়ের মৃত্যুর খবর ইডেন কলেজে ছড়িয়ে পড়লে সহপাঠীরা হাসপাতালে ছুটে আসেন। জুঁইয়ের সহপাঠী শামীমা ফেরদৌস লিনা বলেন, জুঁই ভালো ছাত্রী ছিলো। সবসময় হাসিখুশি থাকতো। আমরা আমাদের একজন ভালো সহপাঠীকে হারালাম। তেজগাঁও থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শামীম অর রশিদ বলেন, খবর পেয়ে হাসপাতালে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। নিহতের পরিবার চাইলে মামলা নেয়া হবে।
সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
We use cookies to ensure you get the best experience on our website.