ফেসবুকের কল্যাণে মা’কে ফিরে পেলো শিশু সোবহান
মাগুরায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কল্যাণে জেলা প্রশাসন ও জেলা সমাজ সেবা অফিসের সহায়তায় বুদ্ধি প্রতিবন্ধী সোবহান (৮) ফিরে পেলো তার পরিবার। শনিবার সন্ধ্যায় ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার অনুপমপুর এলাকা থেকে মাগুরায় চলে আসে বুদ্ধি প্রতিবন্ধী শিশু সোবহান। শহরের কলেজপাড়া এলাকায় একটি রাস্তায় তাকে কান্নারত অবস্থায় খুঁজে পায় মাগুরা সরকারি হোসেন শহীদ সোহ্রাওয়ার্দী কলেজের ছাত্র তাপস বিশ্বাস। শিশুটির কোনো অভিভাবককে না পেয়ে তিনি শিশুটিকে মাগুরা সদর থানায় নিয়ে যান। শিশুটি শুধু নিজের নাম ও গ্রামের নাম চাপড়াইল বলতে পারে। এ অবস্থায় মাগুরার সাংবাদিক রূপক আইচ পরিচয় জানতে চেয়ে শিশুটির একটি ভিডিও ফেসবুকে আপলোড করেন। মুহূর্তেই ভিডিওটি ভাইরাল হয়ে যায়। অনেকেই ভিডিওটি শেয়ার করেন। মাগুরার জেলা প্রশাসক আশরাফুল আলম বিষয়টি জেনে জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. জাহিদুল আলম এর মাধ্যমে শিশুটিকে সমাজসেবা অধিদপ্তরের সরকারি শিশু পরিবারে রাখার ব্যবস্থা করেন। এ সময় বিভিন্ন জায়গায় শিশুটির সন্ধানে প্রচেষ্টা চালায় মাগুরা সদর থানা পুলিশ, সমাজসেবা অধিদপ্তর ও সাংবাদিকবৃন্দ। রাতেই ফেসবুকের মাধ্যমে খবর ছড়িয়ে পড়লে শিশুটির পরিবারকে খবর দেন ঝিনাইদহ জেলার স্থানীয় এক ব্যক্তি। জানা যায় শিশুটি ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার অনুপমপুর গ্রামের মোক্তার আলীর ছেলে। মোক্তার নিজেও বুদ্ধি প্রতিবন্ধী। শিশুটির মা মর্জিনা বেগম সন্তানকে কাছে পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি বলেন- শনিবার সকালে বাড়ি থেকে বের হয়ে একা একাই লাটা গাড়িতে চড়ে মাগুরা শহরে চলে আসে প্রতিবন্ধী সোবহান। সারাদিন বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করে তাকে না পেয়ে তিনি ভেঙে পড়েন। পরে রাত ৯টার দিকে প্রতিবেশী এক যুবক ফেসবুকে সোবহানের ছবি দেখে তাকে খবর দেয়। এ সময় তিনি ফোনের মাধ্যমে তার ছেলে নিরাপদে আছে জেনে রোববার সকালে মাগুরায় চলে আসেন। মাগুরা সমাজসেবা বিভাগের সহকারী পরিচালক মো. জাহিদুল আলম জানান- শিশুটিকে সমাজসেবা বিভাগের তত্ত্বাবধানে রেখে রোববার দুপুরে উপযুক্ত প্রমাণ সাপেক্ষে তার পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। তাদের যাতায়াত ও খাওয়ার জন্য কিছু টাকাও সহায়তা দেয়া হয়েছে। এছাড়া ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা বিভাগের মাধ্যমে শিশুটি ও তার বাবার জন্য প্রতিবন্ধী ভাতা প্রদানের জন্য সেখানকার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে অনুরোধ জানিয়েছি।