কুলাউড়ায় ইউপি সচিব-তথ্য উদ্যোক্তার কাদা ছোড়াছুড়ি
কুলাউড়ার কাদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সচিব উত্তম কুমার পালিত ও তথ্য উদ্যোক্তা সুকুমার মল্লিক একে অপরের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ তুলেছেন। সচিবের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা নিবন্ধন ও কর্মরত অবস্থায় টেবিলে পা তোলার ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করার অভিযোগ উঠেছে। অপরদিকে, তথ্য উদ্যোক্তার ওপর নারী কেলেঙ্কারিসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। ইউপি সচিব সংবাদ সম্মেলন করে তার বিষয়ে ব্যাখ্যা দেন। তথ্য উদ্যোক্তাও নিজে ষড়যন্ত্রের শিকার দাবি করে পাল্টা সংবাদ সম্মেলনের ইঙ্গিত দেন। জানা যায়, একজন গ্রাম পুলিশের উপস্থিতিতে টেবিলের উপর সচিব উত্তম কুমার পালিতের পা তুলে বসার ছবিটি ফেসবুকে ভাইরাল হয়। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা সমালোচনা শুরু হয়। তবে সচিব ছবিটি ব্ল্যাকমেইল করে সামাজিক মাধ্যমে দেয়ার অভিযোগ তুলেন। তিনি এরজন্য তথ্য উদ্যোক্তাকে দায়ী করেন। তথ্য উদ্যোক্তা পাল্টা সংবাদ সম্মেলনের ইঙ্গিত দিয়ে বলেন, ইউপি সচিব উত্তম কুমার পালিত কাউকে তোয়াক্কা না করেই নিজের ইচ্ছামতো ইউপি কার্যালয়ে কর্তব্যরত অবস্থায় চেয়ারে পা তুলে বসেন। অনলাইনে জন্মনিবন্ধন করার এখতিয়ার ইউপি সচিবের। সে হিসেবে রোহিঙ্গা নিবন্ধন তিনিই করতে পারেন।এদিকে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কক্ষে সংবাদ সম্মেলন করে উত্তম কুমার পালিত জানান, ২০১৭ সালে দেশে রোহিঙ্গা প্রবেশের পরমুহূর্তে ইউনিয়নের কম্পিউটার ব্যবহার করে সুকুমার কাদিপুর ইউনিয়নের প্রায় ১০ থেকে ১২ হাজার মানুষের জন্মনিবন্ধন অনলাইনে নিবন্ধনের সময় ইচ্ছাকৃত ভুল করে চট্টগ্রাম বিভাগের কক্সবাজারের চকরিয়া ইউনিয়নের নামে নিবন্ধন করেন। পরবর্তি সময়ে ঢাকা অফিস থেকে আমার কাছে বিষয়টি জানতে চাওয়া হলে ইউনিয়ন পরিষদের সকলকে অবহিত করি। তিনদিন সময় নিয়ে ওই নিবন্ধনগুলো পুনরায় কাদিপুর ইউনিয়নের ঠিকানায় সম্পন্ন করি।তথ্য উদ্যোক্তা সুকুমার মল্লিক বলেন, জন্মনিবন্ধন অনলাইনে নিবন্ধন করার এখতিয়ার ইউপি সচিবের। আমি কীভাবে দুর্নীতি করবো? আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে।চেয়ারে বসে টেবিলে পা তোলার বিষয়টি স্বীকার করে সচিব উত্তম কুমার পালিত বলেন, ছবিটি ২০১৬ সালের। যা তুলেছিলেন সুকুমার। তৎকালীন ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মরহুম মানিক মিয়া পরিষদের অন্যদের নিয়ে বিষয়টি মীমাংসা করে দেন।কাদিপুর ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সাতির মিয়া বলেন, অফিসের মহিলা উদ্যোক্তার সঙ্গে অনৈতিক প্রস্তাবসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে পরিষদের মতামত নিয়ে এই পদ থেকে তাকে অব্যাহতি দিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবগত করেছি।উল্লেখ্য, ইউপি সচিব ও তথ্য উদ্যোক্তার বিষয়টি নিয়ে গোটা এলাকায় ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলছে। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
- ট্যাগ:
- বাংলাদেশ
- ইউপি সচিব
- চট্টগ্রাম
- ঢাকা
- কক্সবাজার জেলা