‘আল্লাহর ওয়াস্তে মাফ করেন জীবনে আর এই ভুল করবো না’
সাবেক প্রতিমন্ত্রী, প্রবীণ বিএনপি নেতা হারুন আল রশিদের বাড়ি ভাঙচুরে জড়িতরা ক্ষমা চেয়েছেন তার কাছে। সালিশ সভায় দাঁড়িয়ে এ ঘটনার মূলহোতা শহর যুবলীগের আহ্বায়ক আমজাদ হোসেন রনি বলেছেন- ‘আল্লাহর ওয়াস্তে মাফ করেন। জীবনে আর এই ভুল করবো না’। তার পাশাপাশি দুই চিকিৎসক মো. জাকারিয়া ও মনির হোসেনও ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন। সালিশে বাড়ি ভাঙচুরে অভিযুক্ত জেলা আওয়ামী লীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের অন্য নেতারাও উপস্থিত ছিলেন। সালিশে ওই বাড়ির ভাড়াটিয়া মডার্ন এক্সরে ক্লিনিকের ক্ষতিপূরণ হিসাবে ১০ লাখ টাকা এবং বাড়ির সীমানা প্রাচীর ভাঙার জন্য ২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। তবে দেয়াল ভাঙার জরিমানা হারুন আল রশিদ নেবেন না বলে জানান। শহরের মৌলভীপাড়ায় একটি চাইনিজ রেস্টুরেন্টে ২৭শে সেপ্টেম্বর আলোচিত এই সালিশ সভাটি হয়। ডাক্তার বজলুর রহমান এতে সভাপতিত্ব করেন। দেড়-দুইশ’ লোকের উপস্থিতিতে ওই সালিশ সভায় বাড়ি ও ক্লিনিক ভাঙচুরে মোট ৮০ লাখ টাকা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানান ক্ষতিগ্রস্তরা। সন্ধ্যা থেকে রাত প্রায় ১০টা পর্যন্ত কয়েক ঘণ্টা ধরে চলা সালিশ সভায় জেলা বিএনপি ও আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতা উপস্থিত ছিলেন। সালিশে আলাপ-আলোচনার পর জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল বারী চৌধুরী মন্টু, ডাক্তার বজলুর রহমান ও আবু সায়ীদ, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ওসমান গনি, সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান মামুনকে নিয়ে ৫ জনের একটি জুরি বোর্ড করা হয়। তারা ওই রায় প্রদান করেন। এ বিষয়ে দায়ের করা মামলা উঠিয়ে নেয়ারও সিদ্ধান্ত হয়। উল্লেখ্য, ১৩ই আগস্ট দিবাগত রাতে জেলা শহরের প্রধান সড়কের পাশে হারুন আল রশিদের বাড়ির (চাষী ভবন) দক্ষিণ ও পশ্চিম পাশের সীমানা প্রাচীর এবং ভেতরের বিভিন্ন স্থাপনা ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়া হয়। খননযন্ত্র (ভেকু), বুলডোজার, রামদা, লোহার শাবল, কুড়ালসহ নানা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বাড়িতে হামলা চালানো হয়। বাড়ি ভাঙচুরের সময় সেখানকার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন এবং সিসিটিভি ক্যামেরা অচল করে দেয়া হয়। করাত দিয়ে কাটা হয় বাড়ির ভেতরের কয়েকটি পুরাতন গাছ। হারুন আল রশিদের বাড়ির পশ্চিম পাশে একটি জায়গা কিনে সেখানে হাসপাতাল করার উদ্যোগ নেন আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী সংগঠনের কয়েক নেতা, ডাক্তার, ব্যবসায়ী ও অন্যান্য শ্রেণির আরো লোকজন। তাদের ক্রয়কৃত জায়গায় যাওয়ার রাস্তা প্রশস্ত না হওয়ায় হারুন আল রশিদের বাড়ি ভেঙে রাস্তা বের করতে রাতের আঁধারে পরিকল্পিতভাবে বাড়িটি ভাঙা হয়। এ ঘটনা চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে।