বরখাস্ত পুলিশ কর্মকর্তার পক্ষে লড়বেন ব্যারিস্টার সুমন
জাতীয় সংসদের হুইপ শামসুল হক চৌধুরীর বিরুদ্ধে ক্লাবের জুয়ার আসর থেকে ১৮০ কোটি টাকা আয় করেন’- এমন মন্তব্য করে সাময়িক বরখাস্ত হয়েছেন পুলিশ পরিদর্শক মাহমুদ সাইফুল আমিন। ইতিমধ্যে বুধবার সাইফুল আমিনের বিরুদ্ধে সাইবার ট্রাইব্যুনালে হুইপ নিজে বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। বরখাস্ত হওয়া সেই পুলিশ পরিদর্শকের পক্ষে লড়ার ঘোষণা দিলেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়্যেদুল হক সুমন। গতকাল সুপ্রিম কোর্ট বার ভবনে গণমাধ্যমে তিনি এ ঘোষণা দেন।ব্যারিস্টার সুমন বলেন, পুলিশ পরিদর্শক সাইফুল আমিনকে বরখাস্তকে চ্যালেজ্ঞ করে হাইকোর্টে দাঁড়াতে চাই। হুইপের বিরুদ্ধে ওই পুলিশ যে অভিযোগ এনেছেন কর্তৃপক্ষ তার ব্যাখ্যা চাইতে পারত। ওই ফেসবুক আইডি তার কিনা? তার আইডি থেকে সেটি পোস্ট করা হয়েছে কিনা? এসব বিষয়ে তদন্ত করা যেত। এছাড়া, ১৮০ কোটি টাকার বিষয়ে তদন্ত করে দেখা যেত। কিন্তু তাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে বরখাস্ত করা হয়েছে। যেটি বেআইনি। । এতে সৎ পুলিশ অফিসাররা উৎসাহ হারাবেন। এ কারণে আমি তার পক্ষে উচ্চ আদালতে বিনা পয়সায় আইনি লড়াই করতে চাই। তিনি যদি আগ্রহী হন তাহলে দ্রুতই তার পক্ষে হাইকোর্টে দাঁড়াবেন। ব্যারিস্টার সুমন বলেন, এর আগে আমি মাদরাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ফেনীর সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলাম। নুসরাতের পরিবার এ মামলার বিষয়ে আমার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করেনি। তবুও মোয়াজ্জেমের কর্মকাণ্ড আইনসম্মত না হওয়ায় আমি ওই মামলাটি করেছিলাম। ঠিক তেমনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনে প্রিয় সাহার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগের মামলার আবেদন জানিয়েছিলাম। কিন্তু সরকার প্রিয়া সাহার বক্তব্য শুনতে চায় বলে মামলাটি গ্রহণ করা হয়নি। এবার আমি বরখাস্ত ওই পুলিশ কর্মকর্তার পক্ষে উচ্চ আদালতে লড়তে চাই । গত ২০শে সেপ্টেম্বর পুলিশ পরিদর্শক সাইফুল আমিন নিজের ফেসবুক ওয়ালে এ-সংক্রান্ত একটি পোস্ট দেন। পোস্টে তিনি অভিযোগ করেছেন, চট্টগ্রাম আবাহনী ক্লাবের জুয়ার আসর থেকে গত পাঁচ বছরে ক্লাবটির মহাসচিব ও জাতীয় সংসদের হুইপ শামসুল হক চৌধুরী ১৮০ কোটি টাকা আয় করেছেন। এরপর গত ২৪শে সেপ্টেম্বর পুলিশ পরিদর্শক সাইফুল আমিনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এআইজি (পার্সোনাল ম্যানেজমেন্ট-২) এর পক্ষে এআইজি (পিআইও-১) আনোয়ার হোসেন খান স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এই আদেশ দেয়া হয়। পুলিশ সদর দফতরের ওই চিঠিতে বলা হয়, বিভাগীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কার্যকলাপ, জনসম্মুখে পুলিশ বাহিনীর ভাবমূর্তি ব্যাপকভাবে ক্ষুন্ন করা তথা অসদাচরণের দায়ে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর বিধি ১২(১) মোতাবেক ঢাকার উত্তরা ১৩ এপিবিএনে কর্মরত সাইফুল আমিনকে চাকরি থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হলো। সাময়িক বরখাস্তকালীন তিনি রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি কার্যালয়ে সংযুক্ত থাকবেন এবং প্রচলিত বিধি মোতাবেক খোরাকি ভাতা পাবেন।