কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

আদালতে ঘাতকের স্বীকারোক্তি

মানবজমিন প্রকাশিত: ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০০:০০

আব্দুস সোবহান সুমন ও নাজনিন আক্তার। পরিচয়ের সূত্র ধরে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে তাদের মধ্যে। দীর্ঘদিন একে অপরকে ভালোবাসেন। এক সময় তারা সিদ্ধান্ত নেন বিয়ে করবেন। কিন্তু বাদ সাধে সুমনের পরিবার। কিন্তু ভালোবাসার মানুষকে হারাতে চাননি সুমন। নিরুপায় হয়ে পরিবারের অমতে ২০০৮ সালে বিয়ে করেন। সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজী সুমিলপাড়ায় পৈত্রিক বাড়ি ছেড়ে স্ত্রীকে নিয়ে আলাদা বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করেন। এরমধ্যে তাদের কোলজুড়ে আসে দুটি কন্যা সন্তান। বড় মেয়ের নাম নুসরাত জাহান নিঝু (৮) ও ছোট মেয়ে খাদিজা আক্তার (২)। একাধিক স্থানে ভাড়া থাকার পর এক বছর আগে সিদ্ধিরগঞ্জের সিআই খোলা জনৈক আনোয়ার হোসেনের ৬ তলা বাড়ির ৬ তলায় দুই রুমের একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে স্ত্রী-সন্তানকে বসবাস করছিলেন। এবং সানারপাড় এলাকায় জোনাকি পেট্রল পাম্পে ওপারেটর হিসেবে কাজ করেন। কোনদিন রাতে কোনদিন দিনে ডিউটি থাকে তার। দুই মেয়েকে নিয়ে সুখেই কাটছিল তাদের দিন। চলতি বছরের জুন মাসে বড় মেয়ে নুসরাত জাহান নিঝুর জন্মদিন পালন করা হয়। নিঝু একাই কেক কাটে। ছোট মেয়েকে নিয়ে বাবা দাঁড়িয়ে দেখছিলেন আর মা হাততালি দিয়ে মেয়েকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানান। আনন্দঘন ওই মুহূর্তটি কেমন ছিল তা শুধু সুমনের ছোট্ট পরিবারই জানে। ওই জন্মদিনের অনুষ্ঠানের ছবি ক্যামেরাবন্দি করা হয়। কিন্তু কে জানতো মাত্র তিনমাসের মাথায় সেই ছবির তিনটি মানুষ চিরদিনের জন্য নাই হয়ে যাবে। ছবিটি ঠিক থাকলেও নেই ছবির তিনটি মানুষ। নাজনিন আক্তার, তার দুই মেয়ে নুসরাত জাহান নিঝু ও খাদিজা আক্তারকে বৃহস্পতিবার সকালে ধারালো চাকু দিয়ে কুপিয়ে ও গলা কেটে নৃসংশভাবে হত্যা করা হয়। ঘাতক নিহত নাজনিনের দুলাভাই আব্বাস। হত্যা মিশন শেষ করে দরজা খোলা রেখেই পালিয়ে যায় সে। এদিকে রাতভর ডিউটি শেষে সকালে বাসায় ফেরেন সুমন। বাসার দরজা খোলা তবে ভেড়ানো। ভেতরে প্রবেশ করেই নির্বাক সুমন। ঘরের মেঝেতে রক্ত আর রক্ত। ভালোবাসার স্ত্রী ও আদরের দুই সন্তানের রক্তাক্ত নিথর দেহ পড়ে আছে। ঘাতক আব্বাসকে আসামি করে মামলাএদিকে বৃহস্পতিবার রাতেই আব্বাসকে এক মাত্র আসামি করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করে নিহতের স্বামী আব্দুস সোবহান সুমন। এর আগে বৃহস্পতিবার বিকেলে সিদ্ধিরগঞ্জের পাওয়ার হাউজের ভেতর কমিউনিটি সেন্টারের একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে খানসামার (ওয়েটার) কাজ করার সময় পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। পরে শুক্রবার সকালে পুলিশ তাকে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে আদালতে পাঠায়।আদালতে ঘাতকের স্বীকারোক্তিএদিকে আদালতে পাঠানো পর আব্বাস হত্যার দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে রাজি হয়। পরে শুক্রবার বিকালে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় সে। নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মিল্টন হোসেন আদালতে তার জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। এসময় তিনি কেন, কি কারণে, কি দিয়ে এবং কিভাবে একে একে তিনটি হত্যার পর নিজের মেয়েকে হত্যার চেষ্টা চালিয়েছেন তার বিশদ বর্ণনা দিয়েছেন আদালতে।মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিদ্ধিরগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আজিজুল হক জানান, আদালতে দেয়া স্বীকারোক্তিতে আব্বাস ক্ষোভের পূঞ্জীভূত থেকেই হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটিয়েছে বলে জানান। বৃহস্পতিবার সকালে একটি ধারালো ছোরা নিয়ে সে ফ্ল্যাটে যায়। প্রথমে সুমনের স্ত্রী নাজনিন (২৮) ও তার দুই কন্যা সন্তান নুসরাত (৮) ও খাদিজা আক্তারকে (২) গলা কেটে হত্যা করে। এসময় চিৎকার চেঁচামেচি করলে তার নিজের মেয়ে প্রতিবন্ধী সুমাইয়াকেও (১৫) ছোরা দিয়ে আঘাত করে গুরুতর জখম করে।নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের এসআই মো. কামাল হোসেন জানান, ট্রিপল হত্যা মামলার আসামি আব্বাস দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। পরে তাকে জেল হাজতে প্রেরন করার নির্দেশ দেন আদালত। প্রসঙ্গত বৃহস্পতিবার সকালে নারায়ণগঞ্জ মহানগরের সিদ্ধিরগঞ্জের ১নং ওয়ার্ডের সিআই খোলা এলাকার আনোয়ার হোসেনের মালিকানাধীন ছয় তলার ভবনের ষষ্ঠ তলার একটি ফ্ল্যাটে নৃশংস ওই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও