কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

ছবিঃ সংগৃহীত

ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে যে ৮টি টিপস আপনাকে সাহায্য করবে

এম. রেজাউল করিম
প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০১ জুলাই ২০১৭, ১৭:৪৮
আপডেট: ০১ জুলাই ২০১৭, ১৭:৪৮

(প্রিয়.কম) তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে ব্যবসার আয়তন বৃদ্ধি করতে অতুলনীয়ভাবে কাজ করছে ডিজিটাল মাধ্যমসমূহ।  ডিজিটাল মার্কেটিং হচ্ছে ইলেকট্রনিক মিডিয়ার এক বা একাধিক প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে পণ্য বা ব্র্যান্ডের প্রচার। ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে সবচাইতে বেশি এবং খুব সহজে ক্রেতার কাছে পণ্যের প্রচার করা ছাড়াও সবচাইতে বেশি ব্যবসায়িক সফলতা পাওয়া যায়। তাই অনলাইন ব্যবসায়িরাতো বটেই, অফলাইন ব্যবসায়ীরাও এখন ঝুঁকে পড়েছেন ডিজিটাল মার্কেটিং এর দিকে।

কিন্তু পরিকল্পনাহীন ও কিছু ভুল সিদ্ধান্তের কারণে সময়-অর্থ-শ্রম দিয়েও নিজেদের ব্যবসাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারছেন না। এছাড়াও সময়ের সাথে সাথে প্রতিনিয়তই হালনাগাদ হচ্ছে প্রযুক্তি, এই কারনেও ডিজিটাল মাধ্যমে মার্কেটিং করতে গিয়ে সফল হতে পারছেন অনেকেই। পরিবর্তনশীল এই ডিজিটাল মিডিয়া মার্কেটিংকে সফল করতে আপনাদের জন্য ৮টি টিপস উপস্থাপন করা হল-

১। সবার আগে জরুরী প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব ওয়েবসাইট

আপনার নিজের প্রতিষ্ঠানের জন্য উন্নত মানের একটি ওয়েবসাইট ডিজাইন করুন এবং তা মোবাইলে দেখার উপযোগী হিসেবেই গড়ে তুলুন। যাতে প্রথমেই আপনার ওয়েবসাইটটি আকর্ষণ পায়। নিয়মিত সঠিক তথ্য দিয়ে ওয়েবসাইটটি সবসময় আপডেট রাখুন, যাতে কোন কিছুতেই আপনার সাইট পুরাতন মনে না হয়। এছাড়াও প্রতি পেইজেই সহজে যোগাযোগ করার জন্য অপশন রাখুন, যাতে ভিজিটরের বিরক্তি না আসে।

২। খুঁজে বের করতে হবে টার্গেটেড কাস্টমারকে

যে বিষয়ে বা পণ্য নিয়ে আপনি কাজ করছেন, তার নির্ধারিত কাস্টমার কারা তাদেরকে আপনার খুঁজে বের করতে হবে। যেমন, আপনার পণ্য যদি শুধু পুরুষদের জন্য হয় তাহলে অবশ্যই টার্গেটেড অডিয়েন্স হিসেবে পুরুষদের নির্বাচিতকরুন। প্রয়োজনে নির্দিষ্ট বয়সসীমাও ঠিক করে দিতে পারেন। 

৩। ভিডিও মার্কেটিংও হতে পারে জনপ্রিয় কন্টেন্ট

ডিজিটাল মার্কেটিং এর জন্য সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে মাল্টিমিডিয়া কন্টেন্ট। যার অবিচ্ছেদ্য অংশ হচ্ছে ভিডিও। এক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ভিডিও দেখে প্রোডাক্ট সম্পর্কে ধারণা বেড়েছে এমন ভিজিটরদের সংখ্যা ৭৪ % বেড়েছে। তাই ভিডিও কন্টেন্ট তৈরির সময় অবশ্যই সেখানে বিক্রির কথা বলার চেয়ে যাতে প্রয়োজনীয় তথ্য, যেমন পণ্যের গুণাবলী, এর প্রয়োজনীয়তা, এর উপকার এসব বিষয়কে প্রাধান্য দিন। দেখবেন গ্রাহকের আগ্রহ থেকেই জানতে চাইবে কীভাবে তারা পণ্যটি পেতে পারে।

 ৪। ডিজিটাল মিডিয়া মার্কেটিংয়ে সঠিক ব্যবস্থাপনা

প্রতিদিনই একটা রুটিন মেনে নির্দিষ্ট সময় পরপর কন্টেন্টগুলোকে আপডেট করা উচিৎ। সেখানে মাল্টিমিডিয়া কন্টেন্টের উপস্থিতি নিশ্চিত করুন। শুধু মাত্র টেক্সট বা শুধু মাত্র ছবি ব্যবহার না করে, টেক্সট, ছবি, স্লাইড, ভিডিও রুটিনমাফিক পোষ্ট করুন। এতে করে গ্রাহকের আগ্রহ বাড়বে। আর সোশ্যাল মিডিয়া কন্টেন্ট পোস্ট করার ক্ষেত্রে অটোমেটিক প্রক্রিয়া ব্যবহার করা উচিৎ।

৫। মার্কেটিং এর বিষয় খেয়াল রাখতে হবে

ব্যবসার অন্যতম একটি অংশ হচ্ছে মার্কেটিং বা বিপণন। আর সুনিপূনভাবে মার্কেটিং করতে পারলে টাক মাথাওয়ালার কাছে চিরুনিও বিক্রি করা যায়। তাই মার্কেটিং করার আগেই পরিকল্পনা করুন ও সিদ্ধান্ত নিন আপনি কীভাবে মার্কেটিং করবেন। মনে রাখতে হবে একেকটি পণ্যের মার্কেটিং করার প্রক্রিয়া একেক রকম হওয়া প্রয়োজন। কারণ চেহারার ক্রিমের বিজ্ঞাপণ আর সরিষার তেলের বিজ্ঞাপণ এক রকম হতে পারবে না। কারণ, দুটির কার্যপ্রণালীও আলাদা, ব্যবহারও আলাদা। 

৬। সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন (এসইও) নিয়ে নিয়মিত কাজ করা উচিৎ

বর্তমানে প্রতিযোগিতার বাজারে পণ্যের মার্কেটিংয়ের ক্ষেত্রে এসইও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করছে। গুগল সার্চের সবচাইতে উপরে নিয়ে আসতে এসইওর ভুমিকা অপরিসীম। আর সঠিক পদ্ধতিতে নিয়মমাফিক এসইও করতে পারলে বিক্রিও বৃদ্ধি পাবে। কারন বর্তমানে মানুষ কোন পণ্য কেনার আগে গুগলেও সার্চ দিয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে।

এইজন্য যে বিষয়গুলো খেয়াল রাখতে হবেঃ

-ওয়েবসাইটে টাইটেল ট্যাগ, মেটা ট্যাগ ব্যবহার করতে হবে। 

-কখনও ডুপ্লিকেট কনটেন্ট ব্যবহার করা উচিৎ না। এটা এসইওর ক্ষেত্রে খুবই ক্ষতিকর।

-গুগলের নতুন আপডেট সম্পর্কে নিয়মিত সচেতন থাকতে হবে।

৭। নজর দিতে হবে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমের দিকে

যে কোন প্রতিষ্ঠান এবং পণ্যের বিজ্ঞাপনের জন্য এখন  সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমসমূহ অনেক বড় ভূমিকা রাখে। ফেসবুক, টুইটারের মাধ্যমে খুব দ্রুত ক্রেতাদের কাছে পরিচিতি পাওয়া যায়। এছাড়াও গুগল প্লাস কিংবা লিংকড ইনেও কমিউনিটি তৈরি করতে পার। আর এইসব মাধ্যমসমূহে কিছু নিয়ম মেনে কাজ করলেই সফল হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যাবো দ্বিগুণ। যেমনঃ 

- সময় বুঝে গুরুত্বপূর্ণ পোষ্ট দিন

- শুধু টেক্সটের চেয়ে ছবি অনেক বেশি প্রভাব ফেলে। 

- প্রশ্ন করুন এবং নিয়মিত প্রশ্নের উত্তর দিন

- আপনার পেইজে বিজ্ঞাপন দিন, বুষ্ট করুন।

-সবসময় নতুন কিছু পোষ্ট করুন, যা মানুষকে আকৃষ্ট করবে। খুব সুন্দর এবং দরকারি কনটেন্ট পোস্ট করুন।

- নিয়মিত ইনসাইটস দেখুন। এতে করে বুঝতে পারবেন আপনার পেইজের কোথায় মানুষের আগ্রহ বেশি।

৮। সমস্যা খুঁজে বের করতে হবে এবং কাজের লক্ষ্য স্থির করতে হবে 

আপনার কাছে যদি মনে হয়, আপনি নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছেন কিন্তু কোন লাভ হচ্ছে না, তাহলে সবার আগে সমস্যাটা কোথায় সেটা খুঁজে বের করুন। প্রয়োজনে আপনার সেক্টরের সিনিয়রদের পরামর্শ নিন। দিশেহারা না হয়ে থান্ডা মাথায় সিদ্ধান্ত নিন। লক্ষ্য স্থির রেখে সামনের দিকে এগিয়ে চলুন। মনে রাখবেন পরিশ্রমী সৌভাগ্যের চাবিকাঠি।

প্রিয় বিজনেস/মিজান