
ছবি সংগৃহীত
প্রিয় গন্তব্য: সমুদ্র-কন্যা স্বন্দীপে কিছু সময়
প্রকাশিত: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ০১:৫৪
আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ০১:৫৪
আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ০১:৫৪
সন্দ্বীপ হতে পারে একটি ক্যাম্পিং গন্তব্য। ছবি: মাজহারুল শিকদার।
বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রাচীন দ্বীপের নাম বলতে চাইলে তাতে সন্দ্বীপ উপরের তালিকায় থাকবে নিঃসন্দেহে। সেই প্রাচীন কাল থেকে এই দ্বীপটা বিভিন্ন ভাবে উঠে এসেছে আলোচনায়। মেঘনা নদীর মোহনায় এই দ্বীপ এক সময় বাণিজ্য বন্দর হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে, রেখেছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ অবদান। সম্প্রতি এই দ্বীপটা মানুষের কাছে ভ্রমণ আকর্ষণ হিসেবে আবারও গুরুত্ব পেতে শুরু করেছে।

নারকেল বাগান আর খোলা প্রান্তর, ভূল হতে পারে ক্যরিবিয়ান কোন দ্বীপ বলে! ছবি: মাজহারুল শিকদার।
কোথায়: সন্দ্বীপ বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলে অবস্থিত। বঙ্গোপসাগরের উত্তর-পূর্ব-কোণে মেঘনা নদীর মোহনায় এর অবস্থান। চট্টগ্রাম উপকূল ও সন্দ্বীপের মাঝখানে সন্দ্বীপ চ্যানেল রয়েছে। দ্বীপটিকে প্রায় তিনদিক থেকে ঘিরে আছে বামনী নদী, মেঘনা নদী আর সন্দীপ চ্যানেল, আর দক্ষিণে আছে বঙ্গোপসাগর। পঞ্চদশ শতাব্দীতে সন্দ্বীপের আয়তন প্রায় ৬৩০ বর্গমাইলের হলেও ক্রমাগত নদী ভাঙনের কারণে বর্তমানে এটি মাত্র ৮০ বর্গমাইলের একটি ক্ষুদ্র দ্বীপে পরিণত হয়েছে। দ্বীপের জনসংখ্যা প্রায় চার লক্ষ।
কিভাবে: ঢাকা থেকে চট্টগ্রামের বাসে কুমিরা নেমে‚ তারপর অটো নিয়ে কুমিরা ঘাট যেতে হবে, ভাড়া জনপ্রতি ১০ টাকা। কুমিরা ঘাট থেকে স্পিড বোট বা সী-ট্রাকে গুপ্তছড়া ঘাট। স্পীড বোটের ভাড়া জনপ্রতি ৩০০ টাকা আর সী-ট্রাক বা স্টিমারের ভাড়া জনপ্রতি ১৩০ টাকা। প্রথমে ঘাট থেকে সন্দ্বীপ টাউন কমপ্লেক্সে আসতে হবে। অটো / সিএনজি ভাড়া করে আসা ভাল হবে, ১৫০ থেকে ২০০ টাকা খরচ পড়বে ।

সন্দ্বীপে সন্ধ্যাটি হতে পারে মনোরম। ছবি: নূর হোসাইন নাহিদ
কি দেখবেন: দ্বীপে বিশেষভাবে কোন কিছু দেখার মত নেই, আসলে দ্বীপের প্রত্যেকটি জায়গা দেখার মত - ফসল ভরা মাঠ, সবুজ প্রকৃতি, হাট ,বাজার সব কিছুই। দ্বীপের উত্তর থেকে দক্ষিণের সব প্রান্ত ঘুরে দেখতে পারেন অনায়াসে। দ্বীপের উত্তরে দেখতে পারেন তাজমহলের আদলে নির্মিত শত বছরের পুরনো মরিয়ম বিবি সাহেবানী মসজিদ। আছে মসজিদ সংলগ্ন বড় দিঘী, মাজার। দ্বীপের দক্ষিণে আছে ঐতিহ্যবাহী শুকনা দিঘী। এছাড়া রয়েছে অসংখ্য মসজিদ, স্কুল, মাদ্রাসা, বড় বড় খেলার মাঠ। ভাগ্য ভালো থাকলে দেখতে পারবেন বাউল জারী সারি গানের আসর। আরও বেড়ানো যায় সন্দ্বীপের উত্তরদিকে আমানুলার চর, উত্তর-পূর্ব দিকে উড়ির চর, কালাপানি, দক্ষিণ দিকে কালিয়ার চর।
সন্দ্বীপের বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে উল্লেখ করা যেতে পারে ক্যাম্পিং করার সুবিধা। এক্ষেত্রে স্থানীয়দের সাহায্য নিতে পারেন উপযুক্ত জায়গা নির্বাচন করার জন্য। সঠিক জায়গা বেছে নিয়ে তাঁবু করে ফেলুন, সাথে থাকবে রাতের তারার মিটিমিটি আলো, খোলা আকাশের নিচে নদীর কলকল ধ্বনি। ক্যাম্পিং করার সেরা সময় হল শীতকাল, ঘন কুয়াশাময় কয়েকটি রাত পার করে দিতে পারবেন অনায়াসেই। দ্বীপের মানুষজন অত্যন্ত আন্তরিক এবং সহযোগী মনোভাব পূর্ণ। এছাড়া নিত্য প্রয়োজনীয় সমস্ত জিনিস আপনি পেয়ে যাবেন সহজেই। নিজেরা বাজার করে খাবার তৈরি করে নিতে পারেন। নদীর মাছ, মাংস থেকে শুরু করে শীতের পিঠা সব কিছুই পাবেন বাজারগুলোতে। আর শীত মৌসুমের সবচেয়ে সুস্বাদু খাবার হল খেজুরের রসের সিন্নি। এছাড়া দ্বীপের বিখ্যাত মিষ্টি খেতে পারেন, সেটার জন্য আপনাকে দ্বীপের দক্ষিণে শিবের হাট পর্যন্ত যেতে হবে।
ধীরে ধীরে নদী আর সমুদ্র ভাঙ্গনে এই দ্বীপটার আয়তন ক্ষুদ্র হতে হতে ৮০ বর্গমাইলের একটা দ্বীপে পরিণত হয়েছে। জানা যায় পনেরো শতকে এর আকার ছিল ৬৫০ বর্গমাইল। এভাবেই এক সময় হয়ত এই দ্বীপটি হারিয়ে যাবে সমুদ্রগর্ভে।
প্রিয় ট্রাভেল/ সম্পাদনা ড. জিনিয়া রহমান।
আপনাদের মতামত জানাতে ই-মেইল করতে পারেন [email protected] এই ঠিকানায়।
ডেইলি স্টার
| আগৈলঝাড়া
৩ মিনিট আগে
৫ মিনিট আগে
ঢাকা পোষ্ট
| বনশ্রী
১৫ মিনিট আগে