
ছবি সংগৃহীত
নাচ শিখতে হলে নাচের জন্য পাগল হতে হবে: সোমা মুমতাজ
আপডেট: ২৮ মার্চ ২০১৭, ১২:২৪
ড.সোমা মুমতাজ। ছবি: সংগৃহীত
(প্রিয়.কম) ড.সোমা মুমতাজ। বর্তমানে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক নাট্যতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষিকা। তাঁর মা আল্পনা মুমতাজ ছিলেন একজন স্বনামধন্য নৃত্যশিল্পী। এর রেশ ধরেই ছোটবেলা থেকেই নাচ হয়ে ওঠে তাঁর আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু। ১৯৮৯ সালে ভারতের ‘মহারাজা সায়াজিরাও ইউনিভার্সিটি অব বারদা’ থেকে ‘মাস্টার্স অব পারফর্মিং আর্ট ইন ডান্স’ এর উপর মাস্টার্স করে দেশে ফেরেন তিনি। প্রতিভাবান এ নৃত্যরানীর গুণের কদর করেছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়য়ের তৎকালীন অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর সেলিম আল দীন। তার হাত ধরেই উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষিকা হয়ে ওঠেন। এরপর পাড়ি দিয়েছেন অনেকটা পথ।
দেশজ নাচের বিভিন্ন ফর্ম নিয়ে ড.সোমা মুমতাজ দেশের পাশাপাশি উপস্থিত হয়েছেন দেশের বাইরের মঞ্চেও। নাচের প্রসার ঘটাতে দেশের ভেতরে ব্যক্তিগত উদ্যোগে গড়ে তুলেছেন নাচের স্কুল। প্রাপ্তি স্বরূপ- একাধিক প্রতিষ্ঠান যেমন; ‘বাংলাদেশ নৃত্যশিল্পী সংস্থা’ ‘শান্ত মরিয়ম ইউনিভার্সিটি’ ও পাবনার ‘গন্তব্য’ থেকে এসেছে গুণীশিল্পীর সম্মাননা। বর্তমানে কেমন আছেন এই গুণীশিল্পী? কেমন যাচ্ছে নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের জননীর দিনকাল? এসব কৌতূহল নিয়ে প্রিয়.কম কথা বলেছিল তাঁর সঙ্গে।
প্রিয়.কম: কেমন আছেন?
সোমা মুমতাজ: ভালো আছি। আমি সব সময়ই ভালো থাকি।
প্রিয়.কম: নাচের প্রতি ভালোলাগাটা কবে থেকে?
সোমা মুমতাজ: নাচের প্রতি ভালোলাগা শুরু হয় মূলত ছোটবেলা থেকেই। আমি সাংস্কৃতিক পরিবারে বড় হয়েছি। আমার মা নজরুল ইন্সটিটিউটে নাচের ক্লাস নিতেন। আমি মামনির ক্লাসের পেছনে দাঁড়িয়ে নাচ করার চেষ্টা করতাম। এটা ১৯৬৯ সালের ঘটনা। তখন আমার বয়স তিন থেকে চার বছর হবে। আমার খালু গওহর জামিল তখন ঢোল বাজাতেন। আমি তার ঢোলের শব্দ শুনলেই নাচতে শুরু করতাম। পরবর্তীতে ফোকড বেইজ নাচ করতাম বেশি।
প্রিয়.কম: নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের সাথে জড়িয়ে গেলেন কীভাবে?
সোমা মুমতাজ: আমি ‘মহারাজা সায়াজিরাও ইউনিভার্সিটি অব বারদা’ থেকে ‘মাস্টার্স অব পারফর্মিং আর্ট ইন ডান্স’ এর উপর মাস্টার্স করে দেশে ফিরি ১৯৮৯ সালে। সেলিম আল দীন তখন ‘অভিনয় দর্পণ’ নামের একটি গবেষণামূলক বইয়ের অনুবাদ করছিলেন। তিনি আমাকে একটি হাতে লেখা চিরকুট পাঠান। আমি যে মাস্টার্স করে দেশে ফিরেছি- এ বিষয়টি তিনি কীভাবে জেনেছিলেন সেটি আমি জানি না। সে সময় তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ডিপার্টমেন্টের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ছিলেন। তখন নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগ নামক কোনো আলাদা বিভাগ চালু হয়নি। এটি বাংলা ডিপার্টমেন্টের ভেতরেই ছিল। যা হোক, আমি সেলিম আল দীনের কাছে গেলাম। তিনি আমাকে বললেন, তার অনূদিত বইয়ের মধ্যে থাকা কিছু নাচের অংশের মুদ্রা করে দেখাতে। আমি করে দেখালাম। তখন তিনি বললেন, আপনি বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনমাস নাচের ওয়ার্কশপ করান। তখনও কিন্তু আমার মাস্টার্সের রেজাল্ট বের হয়নি। আমি খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে যোগদান করলাম। এরপর নাট্যতত্ত্ব বিভাগ হলো। সেখানে শিক্ষক হিসেবে সিলেক্ট হলাম। এভাবেই নাটক ও নাট্যতত্ত্বের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছিলাম।
প্রিয়.কম: উল্লেখযোগ্য কোনো প্রতিযোগিতায় বিচারকের ভূমিকা পালন করেছেন কী?
সোমা মুমতাজ: উল্লেখযোগ্য প্রতিযোগিতার মধ্যে রয়েছে ‘জাতীয় শিশু প্রতিযোগিতা’ ও ‘জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ’ অনুষ্ঠানে বিচারকের ভূমিকা পালন করেছি। এ দুটি প্রতিযোগিতাই ছিল শিশু একাডেমি পরিচালিত। এছাড়াও বিটিভির ‘নতুন কুঁড়ি’ অনুষ্ঠানে ছিলাম। বর্তমানে ‘নাচ বাংলাদেশ নাচ’ এ বিচারকের ভূমিকা পালন করছি।
প্রিয়.কম: নাচের সাথে অভিনয়ের সম্পর্কটা কেমন? অনেকে দেখা যায় নাচের মুদ্রাগুলো ঠিকভাবে প্রদর্শন করছেন কিন্তু ভেতরের যে অনুভূতি সেটা অঙ্গের ভাষায় প্রকাশ করতে পারছেন না, তাদের ঘাটতিটি আসলে কোথায়?
সোমা মুমতাজ: নাচের সঙ্গে অভিনয়ের সম্পর্ক রয়েছে তো বটেই। যারা নাচের মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ অনুভূতি ফুটিয়ে তুলতে পারে না, তাদের সমস্যা হচ্ছে শিক্ষায়। নাচ কেবল বিনোদনই নয়, একটি মেসেজ। মানুষের কাছে বার্তা পৌঁছে দেওয়ার একটি মাধ্যম হচ্ছে নৃত্য। নাচের মধ্যে একটি ভাব থাকে, একটি থিম থাকে, তাই নাচের সঙ্গে অভিনয়ের একটি সম্পর্ক রয়েছে। যেমন; আমাকে অনেকে বলে থাকেন যে- ‘আপনার নাচ অনেকে বোঝে না।’ আমি বলি যে- অনেকের বোঝার প্রয়োজন নেই। এক হাজার দর্শকের মধ্যে একশজন বুঝলেই চলবে।
প্রিয়.কম: নাচের সাথে মেকআপের কোনো সম্পর্ক রয়েছে কী?
সোমা মুমতাজ: অনেক বড় সম্পর্ক রয়েছে। অভিনয়ের চারটি ভাগ রয়েছে। আঙ্গিক, বাচিক, সাত্ত্বিকএবং আহার্য। আহার্য অভিনয়ের সঙ্গে মেকআপ ওতপ্রোতভাবে জড়িত। কারণ আহার্য অভিনয়ের নাচে দর্শকের থেকে একজন শিল্পী বেশ দূরেই অবস্থান করেন। সেক্ষেত্রে শিল্পীর মেকআপ একটু চড়া হতে হয়। সেক্ষেত্রে চোখের আই-লাইনার, ঠোঁটের লিপ-লাইনারটা স্পষ্ট হতে হয়। দর্শকের কাছে শিল্পীর অভিব্যক্তিটি স্পষ্টভাবে পৌঁছানোর জন্য মেকআপের প্রয়োজন পড়ে। মানে একটি আরেকটির পরিপূরক।
প্রিয়.কম: নাচে কোন অঙ্গের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি?
সোমা মুমতাজ: সর্বাঙ্গের। প্রতিটি অঙ্গেরই ভূমিকা রয়েছে। হাত, পা, মুখ, চোখসহ প্রতিটি অঙ্গেরই ভূমিকা রয়েছে। একটি শ্লোক রয়েছে:
‘যত হাস্তা তত দৃষ্টি,
যত দৃষ্টি তত মনাহা,
যত মনাহা তত উৎপান্না রাসা’
এর অর্থ হচ্ছে- ‘হাত যতদূর যাবে দৃষ্টি তত দূর যাবে, দৃষ্টি যতদূর যাবে মন তত দূর যাবে, মন যতদূর যাবে ততই নাচের রস তৈরি হবে।’
প্রিয়.কম: এখন পর্যন্ত কোন কাজগুলো করে বেশি আনন্দ পেয়েছেন?
সোমা মুমতাজ: মূলত নৃত্যনাট্য কম্পোজ করতেই বেশি ভালোলাগে। কাজ যখন প্রদর্শিত হয়, তখন মনে হয় ভালোই হয়েছে। কিন্তু পরবর্তীতেই মনে হয়- আরও ভালো করা যেত। প্রতিটি কাজের পরেই এমন মনে হয়। সুতরাং কোনো কাজ করেই এ পর্যন্ত শতভাগ সন্তুষ্টি আসেনি। যদি কোনোদিন শতভাগ সন্তুষ্টি পেয়ে যাই, সেদিন হয়তো আমার শিল্পসত্ত্বার মৃত্যু হবে।
প্রিয়.কম: আপনার নির্দেশিত কাজগুলো নিয়ে তো দেশের বাইরেও যান। ভিনদেশের ঐ দর্শকগুলো কীভাবে নিচ্ছেন আপনার কাজগুলো?
সোমা মুমতাজ: বাইরের দেশের দর্শকরা তো আমাদের শিল্পীদের চেয়েও বেশি শিক্ষিত। যেমন; আমি ত্রিপুরায় গিয়েছিলাম আমার করা দুটি কাজ নিয়ে। একটি হচ্ছে- ‘নকশী কাঁথার মাঠ’ আরেকটি হচ্ছে ‘মহুয়া’। ওখানে গিয়ে দেখলাম দর্শকেরা আমার থেকেও বেশি শিক্ষিত এসব বিষয়ে! আমি ‘নকশী কাঁথার মাঠ’ শেষ করার পর একজন দর্শক মঞ্চে উঠলেন। উঠে- মহুয়ার একটি ডায়ালগ উল্লেখ করে বললেন- ‘আমি দেখতে চাই আগামীকাল তিনি মহুয়ার এই অংশের চরিত্রকে কীভাবে রূপায়ন করেন।’ তো বাইরের দেশে অনেক দর্শক রয়েছে যারা অনেক বেশি পড়াশোনা করেন, তারা অনেক কিছু জানেন। তারা আমাদের সাহিত্য অনেক আগে থেকেই পড়ে রাখেন। সুতরাং বিদেশের মাটিতে কাজের মধ্যে ফাঁকি রাখার কোনো সুযোগই থাকে না। তাছাড়াও- দর্শকদের বোকা ভাবার কোনো কারণ নেই।
প্রিয়.কম: নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের স্টুডেন্টরা তো আপনাকে ‘বিভাগের জননী’ বলে সম্বোধন করে। তাদের এই যে এত ভালোবাসা, এত সম্মান বিষয়টা আপনাকে কতটা আনন্দ দেয়?
সোমা মুমতাজ: এটা তো অবশ্যই আমার কাছে একটা আনন্দের বিষয়। কজনই বা আর সন্তানের জননী হতে পারে! আমি আমার দিক থেকে ওদেরকে সন্তানের মতই দেখি। অবশ্য শিক্ষার্থীরা ছাড়াও অনেক শিক্ষকও আমাকে এ নামে ডাকেন।
প্রিয়.কম: মন খারাপের সময়ে নাচ কতটা সহায়তা করে? মন খারাপের সাথে নাচের কোনো সম্পর্ক আছে কী?
সোমা মুমতাজ: এটা সবার ক্ষেত্রে কাজ করে না। যেমন; আমি মন খারাপ থাকলে নাচতেই পারব না। আবার দেখা যাচ্ছে- কারো মন খারাপের সময়, কেউ যদি ভালো কোনো নাচ দেখেন, তার মন ভালো হয়ে যায়। এটা আসলে একেকজনের মনের উপর নির্ভর করে।
প্রিয়.কম: আগে তো সমাজের কোনো বড় পরিবর্তনে মঞ্চ নাটককে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হতো। এখন ইউটিউবের এই যুগে তা কী আর সম্ভব?
সোমা মুমতাজ: হ্যাঁ। এখনও সম্ভব। কারণ ইউটিউব পৌঁছেছে কেবল একটি জেনারেশনের কাছে। সম্পূর্ণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে এখনও পৌছায়নি। তাছাড়া ইউটিউবে আর কজন মিলেই একটি প্রোগ্রাম দেখতে পারে! মঞ্চে একসঙ্গে অনেক দর্শকের সমাগম হয়। মঞ্চ নাটককে কখনই ইউটিউবের ফ্রেমে বাঁধা যাবে না। মঞ্চে অভিনয়ের মাধ্যমে একটি মেসেজ একই সময়ে হাজার মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব। মঞ্চের পরিসর বড় কিন্তু কম্পিউটারের পর্দা ছোট। তাই কোনো বিষয়কে সূক্ষ্ম পর্যায় পর্যন্ত দেখা কেবল মঞ্চেই সম্ভব।
প্রিয়.কম: বাংলাদেশে নৃত্যশিল্পের বর্তমান অবস্থা কী?
সোমা মুমতাজ: বাংলাদেশে নাচের অবস্থা এখন তুঙ্গে। নাচের অনুষ্ঠানে এখন প্রচুর দর্শক সমাগম হয়। মানুষ এখন নাচ দেখছে এবং উপভোগ করছে।
প্রিয়.কম: আমাদের দেশে নাচের প্রয়োজনীয়তা কী? মানে আমরা নাচ কেন শিখব?
সোমা মুমতাজ: খুবই ভালো প্রশ্ন করেছেন। আমাদের দেশে নাচ শেখাটা আসলে ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানোর মতো। নাচ শিখতে হলে নাচের জন্য পাগল হতে হবে। মনের তাগিদেই নাচতে হবে। নাচ শেখার কিছু উপকারিতা রয়েছে। নাচ শেখার মাধ্যমে ছেলে মেয়েরা আর্ট কালচারের সঙ্গে যুক্ত থাকবে। যার ফলে সমাজের জটিলতা থেকে তারা দূরে থাকতে পারবে। তুচ্ছাতিতুচ্ছ নেতিবাচক বিষয় ওদেরকে স্পর্শ করতে পারবে না। ওরা মাদকাসক্ত হয়ে পড়বে না।
প্রিয়.কম: আমাদের দেশে নৃত্যশিল্পের সঙ্গে মেয়েরা যেমনভাবে জড়িত হয়, ছেলেরা সেভাবে জড়িত হয় না, কেন?
সোমা মুমতাজ: হচ্ছে তো। আমাদের দেশের নাচের স্কুলগুলোতে ছেলেমেয়েরা সমান সংখ্যকভাবেই নাচ শিখতে আসছে। যেমন ‘নৃত্যাঞ্চল’ নামক একটি নাচের স্কুলে সমান সংখ্যক ছেলে এবং মেয়ে নাচ শিখছে। আমার নিজস্ব নাচের একাডেমি ‘মুমতাজ একাডেমি অব ডান্স’- এ ছেলে ও মেয়েরা নাচ শেখে।
প্রিয়.কম: আপনি কী আপনার নাচের স্কুলে গরিব শিক্ষার্থীদের নাচ শিখিয়ে থাকেন?
সোমা মুমতাজ: অবশ্যই শেখাই। যদি দেখি তার ভেতর সত্যিই নাচের আগ্রহ আছে, নাচতে ভালবাসে, তাহলে তাকে অবশ্যই শেখাই।
প্রিয়.কম: আপনি নিজে কোন নাচের উপর বিশেষ পারদর্শী?
সোমা মুমতাজ: ভরতনাট্যম। এছাড়াও আমি লোকনৃত্য বিষয়ে গবেষণা করেছি।
প্রিয়.কম: আপনার সন্তানেরাও কী নাচের সঙ্গে যুক্ত?
সোমা মুমতাজ: হ্যাঁ। আমার বড় মেয়ে সুলতানা মুমতাজ আমার কাছে ভরতনাট্যম শিখছে। আর ছোট মেয়ে নাইমা মুমতাজ শিবলী মোহাম্মদের কাছে কত্থক শিখছে।
প্রিয়.কম: নাচ নিয়ে আপনার শেষ ইচ্ছা কী?
সোমা মুমতাজ: শেষ ইচ্ছা বলে কিছু নেই। যতদিন নাচের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারি, ততদিন যুক্ত থাকব, এটিই ইচ্ছা।
প্রিয়.কম: অনেক ধন্যবাদ আপনাকে ম্যাডাম। আপনার মূল্যবান সময়ের কিছু অংশ আমাদের দেয়ার জন্য।
সোমা মুমতাজ: আপনাকেও ধন্যবাদ। প্রিয়.কমকেও অনেক ধন্যবাদ।
সম্পাদনা: শামীমা সীমা / ফারজানা রিংকী
- ট্যাগ:
- বিনোদন
- সাক্ষাৎকার
- নাচ
- নাটক
- শিক্ষকতা
- ড. সোমা মুমতাজ