
ছবি সংগৃহীত
যে ছয়টি কারণে স্মার্টফোনে ডুয়াল ক্যামেরা প্রয়োজন
আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০১৬, ১৪:২৭
(প্রিয়.কম) ডুয়াল ক্যামেরার সুবিধা কী? স্মার্টফোনে একটির চেয়ে দু’টি ক্যামেরা কেন ভালো? স্মার্টফোনে আগ্রহীদের অনেকের মনেই এমন প্রশ্ন উঁকি দেয়। শীর্ষস্থানীয় স্মার্টফোন ব্র্যান্ড হুয়াওয়ে গত বছর বিশ্বে প্রথমবারের মতো বিশ্ববিখ্যাত ক্যামেরা ব্র্যান্ড লাইকার সঙ্গে মিলিয়ে পি৯ স্মার্টফোনে ডুয়াল ক্যামেরা নিয়ে আসে। এরপরই বিশ্বজুড়ে স্মার্টফোন ব্যবহারকারীরা স্মার্টফোনে ডুয়াল ক্যামেরার প্রেমে পড়েছেন। এরপর থেকে ফোনের ডুয়াল ক্যামেরা নিয়ে আগ্রহ আরও বাড়ছে।
১. বাড়তি ওজন ছাড়াই এক্সট্রা সেন্সর
ডিএসএলআর’র সঙ্গে প্রতিযোগিতার কঠিন সময়ে স্মার্টফোন ফটোগ্রাফিকে বাঁচিয়ে রেখেছে তার নিজস্ব আলোকচিত্র প্রযুক্তির মাধ্যমে। এক্ষেত্রে স্মার্টফোনের সুবিধা হচ্ছে এটা সহজেই পকেটে নেওয়া যায় এবং ছবি তোলার জন্য ডিএসএলআর’র মতো এখানে বড় আকারের লেন্সের প্রয়োজন হয় না। বর্তমানে স্মার্টফোনের ডুয়াল ক্যামেরা প্রযুক্তি বদলে দিয়েছে সবকিছুকে। দু’টি ক্যামেরা মানে আগের চেয়েও বেশি পিক্সেল ডাটা এবং নিখুঁত ছবি তোলার জন্য আরও বেশি সেন্সর। এজন্য ডুয়াল ক্যামেরার মাধ্যমে কম আলোয় নিখুঁত অটো ফোকাস এবং উন্নত এইচডিআর মোডে দ্রুত ছবি তোলা সম্ভব। ফোনের সামগ্রিক পারফরমেন্সে ছাড় না দিয়ে সব কিছুই পাওয়া যাবে সাশ্রয়ী দামে।
২. যেকোনো আলোতে আগের চেয়ে উন্নত পারফরমেন্স
এখন পর্যন্ত রাতে, ঘরের ভেতরে কিংবা যেকোনো ছবি তোলার জন্য স্মার্টফোনগুলো নির্ভর করে অপটিক্যাল ইমেজ স্টাবিলাইজেশনের (ওআইএস) ওপর। ছবি তোলার সময় হাতের নাড়াচাড়ার জন্য ছবি যাতে অস্পষ্ট না হয়, সেজন্য ওআইএস দীর্ঘক্ষণ ধরে শাটার উন্মুক্ত করে রাখে। কিন্তু ওআইএস-কে কোনোভাবেই নিখুঁত বলা যাবে না। অল্প আলোতে গতিশীল কোনো বস্তুর ছবি তুলতে গেলে ওআইএস একইসাথে হাতের এবং ওই বস্তুর গতি নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হবে না। কিন্তু এক্ষেত্রে ডুয়াল ক্যামেরা ব্যবহারকারীকে সুযোগ করে দিবে ক্যামেরায় অনেক বেশি আলো প্রবেশের, যার ফলে ঘরের বাইরে ও ভেতরে কিংবা সূর্যাস্তের পরেও স্পষ্ট ছবি তোলা সম্ভব হবে।
৩. মান দ্বিগুণের থেকে বেশি হলেও দামে সাশ্রয়ী
স্মার্টফোন ফটোগ্রাফিতে নতুন যুগের সূচনা করেছে ডুয়াল ক্যামেরা। সবচেয়ে আকর্ষণীয় ব্যাপার হচ্ছে ডুয়াল ক্যামেরার সুবিধা পেতে আপনাকে দ্বিগুণ দাম দিতে হচ্ছে না। এ জন্য ধন্যবাদ দিতে হয় শীর্ষস্থানীয় প্রযুক্তি পণ্য নির্মাতা প্রতিষ্ঠান যেমন হুয়াওয়েকে, যারা একেবারে বাজেটের মধ্যে স্মার্টফোনে ডুয়াল ক্যামেরা ফিচার দিচ্ছে। সাম্প্রতিক খবর অনুযায়ী, হুয়াওয়ের নেক্সট জেনারেশন জিআর৫ ২০১৭ সংস্করণে থাকছে ডুয়াল ক্যামেরা ফিচার। এখন বাজেটের মধ্যে ডুয়াল ক্যামেরা স্মার্টফোনে আলোকচিত্রের নতুন সম্ভাবনা উন্মোচন করবে।
৪. রিয়াল অপটিক্যাল জুম
সিঙ্গেল ক্যামেরা স্মার্টফোনে ডিজিটাল জুম ব্যবহার করা হয়, যেখানে ডুয়াল ক্যামেরা দিচ্ছে দু’টি আলাদা আলাদা লেন্সের রিয়াল ও অপটিক্যাল জুম। এক্ষেত্রে পার্থক্য স্পষ্টত। ডিজিটাল ছবি তোলার পর সেটা জুম করার সুযোগ দেয়। এর মাধ্যমে দিয়ে রিয়াল টাইম জুম করা সম্ভব। অন্যদিকে অপটিক্যাল জুম আপনাকে পেশাদার আলোকচিত্রীর মতো জুম করার সুযোগ করে দিবে। ক্যামেরার লেন্সের সাথে ফোকাল লেন্সের সমন্বয় যেমন আলোকচিত্রীকে ছবির বিষয়ের একদম কাছে নিয়ে যায়, ঠিক তেমনি ডুয়াল ক্যামেরার স্মার্টফোনও একইভাবে কাজ করে। ছবি তোলার সময় আপনাকে নিয়ে যাবে বিষয়ের আরও কাছে। এর মাধ্যমে দু’টি লেন্স ব্যবহার করে ক্লোজআপ ছবি তোলার ক্ষেত্রে ছবির রেজুলেশন নিয়ে চিন্তা করতে হবে না।
৫. জেনুইন বোকেহ ইফেক্ট
ডুয়াল ক্যামেরার যে ইফেক্ট তার ব্যবহারকারীদের সবচেয়ে মুগ্ধ করবে তা হচ্ছে বোকেহ ইফেক্ট। ডুয়াল ক্যামেরার মাল্টিপল লেন্স সুযোগ করে দিবে ছবির মূল বিষয়কে একদম শার্প রেখে ব্যাকগ্রাউন্ড ব্লার করে দেওয়ার। প্রফেশনাল ফটোগ্রাফিতে বিশেষত, ওয়াইল্ড লাইফ ও পোর্ট্রেটের ক্ষেত্রে এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। কিছু স্মার্টফোন অ্যাপের মাধ্যমে আফটার ইফেক্ট করে ছবিতে বোকেহ এফেক্ট দেওয়া সম্ভব। কিন্তু সেক্ষত্রে ছবির শার্পনেস ও ব্যাকগ্রাউন্ড আউট অব ফোকাস ডুয়াল ক্যামেরার মতো কার্যকরী হয় না। ডুয়াল ক্যামেরার ছবি তোলার সময়ই এর ডেপথ, লেয়ার ও কনট্রাস্ট নিয়ে কাজ করে। যা দেয় চমকপ্রদ, সুন্দর ও আকর্ষণীয় ছবি। এ প্রযুক্তি ছবি তোলার ক্ষেত্রে স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের জন্য সম্পূর্ণ নতুন এক জগত উন্মোচন করবে।
৬. আলোকচিত্রে অপার সম্ভাবনা
প্রযুক্তিপ্রেমী তরুণ-তরুণীরা ভাবছে দু’টি লেন্সের মাধ্যমে ডাটা ক্যাপচার করে থ্রিডি ইফেক্ট অথবা তাৎক্ষণিক জিআইএফ করার। এক্ষেত্রে ইতোমধ্যেই আমরা ‘ইনস্টাগ্রাম’ অ্যাপের ব্যবহার দেখছি। মুভিং ইমেজ তৈরির ক্ষেত্রে এ অ্যাপ ব্যবহার করে আলাদা প্রেক্ষিতের দু’টি ছবির থ্রিডি ইমেজ বানানো সম্ভব। ইনস্টাগ্রাম ব্যবহারকারীরা ইতোমধ্যেই এর সুফল ব্যবহার করছেন।
সম্পাদনা: তানজিল রিমন