কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

ফেরদৌস আহমেদ। ছবি: প্রিয়.কম

ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চাইলেন ফেরদৌস

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিয়.কম
প্রকাশিত: ১৭ এপ্রিল ২০১৯, ২০:০০
আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০১৯, ২০:০০

(প্রিয়.কম) বাংলাদেশের অভিনেতা ফেরদৌস আহমেদ ভারতে নির্বাচনি প্রচারণায় অংশ নিয়ে বিতর্কের মুখে পড়ে ভিসা বাতিল হওয়ার পর মঙ্গলবার রাতে বিমানে করে দেশে ফিরেছেন। সেই সঙ্গে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে। দেশে ফেরার পর বিষয়টি নিয়ে একদম চুপ ছিলেন তিনি। যতই সময়ই যাচ্ছিল বিতর্ক আরও জোরালো হচ্ছিল।

সর্বশেষ খবর হলো, বিষয়টিকে কেন্দ্র করে ১৭ এপ্রিল, বুধবার সন্ধ্যায় ফেরদৌস আহমেদ গণমাধ্যমে একটি বিবৃতি পাঠিয়েছেন। সেখানে তিনি বলেছেন, ভারতে গিয়ে নির্বাচনি প্রচারণায় অংশগ্রহণ করাটা তার ভুল ছিল। আর এই অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য তিনি ক্ষমাও চেয়েছেন।

ফেরদৌসের পাঠানো বিবৃতিটি প্রিয়.কমের পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো

‘আমি চিত্রনায়ক ফেরদৌস। অভিনয় শিল্প আমার একমাত্র নেশা ও পেশা। অভিনয় শিল্পের মাধ্যমে বাংলা ভাষাভাষী সকলের মধ্যে মেলবন্ধন তৈরিতে সর্বদা কাজ করার চেষ্টা করেছি। আমার ভাবতে ভালো লাগে, আমি দুই বাংলায় সমানভাবে জনপ্রিয়। দুই বঙ্গের মানুষের সংস্কৃতি ও জীবনাচারে অনেক সাদৃশ্য রয়েছে। আবার ভারত বহু কৃষ্টি-কালচারের সমন্বয়ে সমৃদ্ধ একটি দেশ।

১৯৭১ সালে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে প্রতিবেশী দেশ হিসাবে ভারতের অবদান আমরা কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করি। পাশাপাশি ভারতের জনগণের ত্যাগ-তিতিক্ষা আমাদের চিরঋণী করে রেখেছে। পশ্চিমবঙ্গের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের সাথে আমার সম্পর্ক বহুদিনের। এখানের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের অনেক শিল্পী, সাহিত্যিক আমার বন্ধু। যাদের সাথে আমি সবসময়ে হৃদ্যতা অনুভব করি। এজন্য বিভিন্ন সময় কারণে অকারণে আমি এখানে চলে আসি।

ভারতে জাতীয় নির্বাচন হচ্ছে। বিশ্বের সর্ববৃহৎ গণতান্ত্রিক দেশের এই নির্বাচন পূর্বের মতো সারা বিশ্বে সাড়া ফেলেছে। এই সময়ে আমি ভারতে অবস্থান করছিলাম। সকলের মতো আমারও আগ্রহের জায়গায় ছিল এই নির্বাচন। ফলে ভাবাবাগে তাড়িত হয়ে পশ্চিমবঙ্গের একটি নির্বাচনী প্রচারণায় আমি আমার সহকর্মীদের সাথে অংশগ্রহণ করি। এটা পূর্বপরিকল্পনার কোন অংশ ছিল না।

শুধুমাত্র আবেগের বশবর্তী হয়ে আমি অংশগ্রহণ করেছি। কারো প্রতি বিশেষ আনুগত্য প্রদর্শন বা কোন বিশেষ দলের প্রচারণার লক্ষ্যে নয়, আবার কারো প্রতি অসম্মান প্রদর্শন করাও আমার উদ্দেশ্য নয়। ভারতের সকল রাজনৈতিক দল এবং নেতার প্রতি আমার সম্মান রয়েছে। আমি ভারতের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।

আমি আগেও বলেছি পশ্চিমবঙ্গের মানুষের প্রতি আমার ভালোবাসা অগাধ। সেই ভালোবাসা আমাকে আবেগতাড়িত করেছে। আমি বুঝতে পেরেছি, আবেগের বশবর্তী হয়ে সহকর্মীদের সাথে এই নির্বাচনী প্রচারণায় অংশগ্রহণ করাটা আমার ভুল ছিল।

যেটা থেকে অনেক ভ্রান্তি তৈরি হয়েছে এবং অনেকে ভুলভাবে নিয়েছেন। আমি স্বাধীন বাংলাদেশের একজন নাগরিক। একটি স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসাবে অন্য একটি দেশের নির্বাচনী প্রচারণায় অংশগ্রহণ কোনভাবেই ঔচিত্য নয়। আমার অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য আমি ক্ষমা প্রার্থনা করছি। আশা করি, সংশ্লিষ্ট সকলে আমার অনিচ্ছাকৃত ভুলকে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।’

বর্তমানে ভারতে চলছে ১৭তম লোকসভা নির্বাচন। প্রথম দফায় ১৮টি রাজ্যের ৯১টি আসনে ১১ এপ্রিল ভোট হয়ে গেছে। উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জে তৃণমূল প্রার্থী কানাইয়ালাল আগরওয়ালের সমর্থনে প্রচারণা করছিলেন বাংলাদেশের এ নায়ক।

গত রবিবার ফেরদৌস রায়গঞ্জ আসনের করণ দিঘি থেকে ইসলামপুর পর্যন্ত তৃণমূলের প্রচার মিছিলে অংশ নেন। এলাকাটি বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে। নির্বাচনি ওই প্রচারে ফেরদৌসের সঙ্গে ছিলেন ভারতীয় বাংলা সিনেমার দুই তারকা অঙ্কুশ হাজরা ও পায়েল।

১১ এপ্রিল ভারতে লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফায় ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ, পঞ্চম, ষষ্ঠ ও সপ্তম দফার ভোট রয়েছে যথাক্রমে ১৮ এপ্রিল, ২৩ এপ্রিল, ২৯ এপ্রিল, ৬ মে, ১২ মে ও ১৯ মে। এরপর ২৩ মে ফলাফল ঘোষণা করা হবে।

প্রিয় বিনোদন/আজাদ চৌধুরী