কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

বন্ধু কি আপনার জীবনে বিষাক্ত এক মানুষ? ছবি: প্রিয়.কম

বন্ধুত্বে ‘ব্রেকআপ’ করবেন যখন

কে এন দেয়া
সহ-সম্পাদক
প্রকাশিত: ০২ এপ্রিল ২০১৯, ১৬:০৭
আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০১৯, ১৬:০৭

(প্রিয়.কম) কখনো কি ভেবেছেন, বছরের শুরু বা মাসের শুরুতে ঘরবাড়ি যেমন নাড়াচাড়া দিয়ে পরিষ্কার করা হয়, জীবনটাকে তেমন একটু নেড়েচেড়ে নেওয়া উচিত? আপনি যাদেরকে বন্ধু ভাবেন, তাদের মাঝে কাউকে জীবন থেকে ঝেঁটিয়ে দূর করাটা আপনার জন্যই ভালো কি না, তা ভেবেছেন কখনো?

টুইটার ব্যবহারকারী অ্যান্ড্রিয়া এ ক্ষেত্রে চারটি প্রশ্নের অবতারনা করেন—

১) ওই মানুষটির সঙ্গে যোগাযোগ না করলেও কি বন্ধুত্ব বজায় থাকবে?

২) বন্ধুর সঙ্গে আড্ডা দেওয়ার পর মন ভালো হয় না খারাপ হয়?

৩) বন্ধুত্বের মাঝে কি কোনো সীমানা টানা আছে? সেই সীমানা কি আপনারা মেনে চলেন?

৪) আপনি তার জন্য যতটা করেন, তিনিও কি আপনার জন্য ততটাই করেন?

সাইকোলজিস্ট অ্যান্ড্রিয়া বোনিওর জানান, এই প্রশ্নগুলো বেশ জরুরি। তবে বন্ধুত্ব নিয়ে চিন্তা করার জন্য আরও বড় পরিসর দরকার। আপনার যদি মনে হয়, এই বন্ধুটি আপনার সঙ্গে যোগাযোগ রাখার বিষয়ে যথেষ্ট মনোযোগী নয়, তিনি আপনার মেজাজ খারাপ করে দেন, আপনার দুঃসময়ে পাশে থাকেন না, তাহলে ভেবে দেখুন তার জীবনে এমন কিছু হচ্ছে কি না যার জন্য তিনি বিপর্যস্ত। এ ছাড়া অতীতে তিনি কেমন বন্ধু ছিলেন সেটাও ভেবে দেখুন।

এমনটা হতে পারে যে, বন্ধুটি প্রিয় কারো মৃত্যুতে শোকার্ত, হয়তো বিয়ে বা সন্তান নিয়ে ব্যস্ত, এমনকি ডিপ্রেশন বা অ্যাংজাইটিতেও তিনি ভুগতে পারেন। তাই সাময়িকভাবে তাকে রূঢ় মনে হলেও কিছুটা সময় দিতে পারেন। এমনকি জিজ্ঞেস করে দেখতে পারেন, তিনি কোনো সমস্যায় আছেন কি না।

আপনার বন্ধুটি যদি আসলেই ‘টক্সিক’ বা বিষাক্ত এক মানুষ হয়ে থাকেন আপনার জীবনে, তখন কী করবেন?

নির্মম একটি সত্য হলো, সব বন্ধুত্ব আজীবন টিকে থাকবে, এমনটা ভাবার কিছু নেই। আর এতে দুঃখ পাওয়ারও কিছু নেই। ছোটখাটো ঝগড়া বা মনোমালিন্য নিয়ে বন্ধুত্ব ভেঙে দেওয়াটা অনুচিত। তবে বন্ধু যখন আপনার জন্য ক্ষতিকর হয়ে দাঁড়ায়, তখন তার থেকে দূরে সরে যাওয়াটাই ভালো এবং তা করাই স্বাভাবিক।

সুস্থ বন্ধুত্বে ভারসাম্য বজায় থাকে। এই ভারসাম্য একেবারে কাঁটায় কাঁটায় ৫০-৫০ না হলেও, আপনি নিজেই বুঝবেন কখন ভারসাম্য বজায় আছে। বন্ধু যদি আপনার সময়, মনোযোগ ও সাহায্য নেন প্রায়ই, অথচ আপনাকে সমান সমান দেন না, তখন বুঝতে হবে বন্ধুত্ব ভেঙে দেওয়াই ভালো।

আরও একটি উপায়ে বুঝবেন বন্ধুত্বটি ঠিক পথে নেই। বন্ধুর সঙ্গে সময় কাটানোর কথা ভাবলে যদি আপনার বিরক্ত লাগে বা ক্লান্তি লাগে, তাহলে আপনি কেন বন্ধুত্ব ধরে রাখবেন? ‘দেখা করতে/আড্ডা দিতে চাই’—বন্ধুর এমন টেক্সট পেয়ে যদি আপনার ক্লান্তি বোধ হয়, উচ্ছ্বাসের পরিবর্তে দুশ্চিন্তা ভর করে, তাহলে কোনো একটা সমস্যা আছে অবশ্যই।

কিন্তু বন্ধুত্ব ভাঙবেন কী করে?

প্রেমের সম্পর্ক ভাঙা আর বন্ধুত্বের সম্পর্ক ভাঙার মাঝে তফাৎ আছে।

প্রেমিক বা প্রেমিকার থেকে একটু একটু করে দূরে সরে যাওয়া, তার সঙ্গে দেখা করা বন্ধ করে দেওয়া, ফোনে কম কথা বলা—এভাবে ব্রেকআপ করাটা অনেকেই নিষ্ঠুর মনে করেন। প্রেমের ক্ষেত্রে সরাসরি বলে দেওয়াই ভালো যে আপনি আর তাকে ভালোবাসেন না। কিন্তু বন্ধুত্বে সরাসরি বলা যায় না যে আপনি তার সঙ্গে বন্ধুত্ব রাখতে চান না, বরং সেটাই নিষ্ঠুর মনে হবে। এর চেয়ে তার সঙ্গে যোগাযোগ ধীরে ধীরে কমিয়ে আনলেই তিনি বুঝতে পারবেন, আপনি আর বন্ধুত্ব রাখতে চান না। চট করে যোগাযোগ বন্ধ করে দেবেন না যেন, তাতে তিনি ভুল বুঝতে পারেন।

আপনি যদি বন্ধুত্ব টিকিয়ে রাখতে চান, তাহলে তার সঙ্গে কথা বলুন, তাকে জানান তিনি যথেষ্ট সময় দেন না আপনাকে, দরকারের সময় তাকে পাওয়া যায় না। কিন্তু আপনি যদি বন্ধুত্ব ভেঙে দিতেই চান, তাহলে এসব কথা না তোলাই ভালো।  

সূত্র: হাফিংটন পোস্ট

প্রিয় লাইফ/আজাদ চৌধুরী