কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। ফাইল ছবি

খালেদার পায়ে ফোড়া, ঘুমান ১১টা পর্যন্ত: দুদক আইনজীবী

আমিনুল ইসলাম মল্লিক
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১৬ জানুয়ারি ২০১৯, ১৯:০৯
আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০১৯, ১৯:০৯

(প্রিয়.কম) আগামী ২৪ জানুয়ারি বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্যাটকো মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানির দিন ধার্য করেছে পুরান ঢাকার বকশিবাজারে স্থাপিত বিশেষ আদালত।

১৬ জানুয়ারি বুধবার দুপুরের দিকে এ আদেশ দেন বিশেষ আদালতের বিচারক সৈয়দ আবু দিলজার। এদিন খালেদা জিয়া আদালতে উপস্থিত ছিলেন না।

আদালতে খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতি নিয়ে ভিন্নধর্মী বক্তব্য দিয়েছেন আইনজীবীরা।

মামলার শুনানি শেষে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, ‘খালেদা জিয়ার পায়ে ফোড়া, ঘুমান বেলা ১১টা পর্যন্ত। আদালতে আসবেন কীভাবে।’ তবে আসামি পক্ষের আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার বলেন, ‘উনি অসুস্থ, শুনেছি ওনার পায়ে ব্যথা। তাই আদালতে উপস্থিত হতে পারেননি।’

তবে আদালতে খালেদা জিয়ার আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার বলেন, ‘আসামি আদালতে উপস্থিত নেই। এ জন্য অভিযোগ গঠনের ওপর শুনানির দিন নির্ধারণে সময় দেয়া হোক।’

কিন্তু আদালত তার আবেদনে সাড়া না দিয়ে আগামী ২৪ জানুয়ারি দিন নির্ধারণ করে। আদালত এ সময় বলে, ‘হাইকোর্ট এ মামলা নিষ্পত্তি করতে ৬ মাসের সময় দিয়েছেন।’

এ সময় দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল আসামি পক্ষের আইনজীবীর সময় আবেদনের বিরোধিতা করেন।

শুনানি শেষে আদালত থেকে বেরিয়ে দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল প্রিয়.কমকে বলেন, ‘আদালতে খালেদা জিয়ার শারীরিক অসুস্থতার বিষয়ে কোনো প্রতিবেদন আসেনি। খালেদা জিয়ার পায়ে একটি ফোড়া উঠেছে।’

তিনি প্রিয়.কমকে আরও বলেন, ‘খালেদা জিয়ার পায়ে ফোড়া উঠেছে এবং সকাল ১১টা পর্যন্ত ঘুমান। উনি (খালেদা জিয়া) প্রত্যেক দিনই এভাবে ঘুমান। যার জন্য উনি আসতে পারেন নাই। উনি ঘুমাচ্ছেন। তাহলে আসবেন কীভাবে?’

ফোড়া ওঠার বিষয়ে কারা কর্তৃপক্ষ কোনো প্রতিবেদন দিয়েছে কি না?—এমন প্রশ্নের জবাবে কাজল বলেন, ‘না প্রতিবেদন তো না। আমরা ডাক্তারকে জিজ্ঞাসা করেছি। ডাক্তার বলছে ফোড়ার কথা। ডাক্তারকে আমরা জিজ্ঞাসা করেছি কী হয়েছে; তখন ডাক্তার বলেছেন, “উনার (খালেদা জিয়ার) পায়ে একটি ফোড়া উঠছে”।’

কোন পায়ে ফোড়া উঠেছে?—এমন প্রশ্নের উত্তরে এই আইনজীবী বলেন, ‘জানি না। ডাক্তার শুধু বলেছে উনার পায়ে ফোড়া উঠেছে। পায়ের কোন জায়গায় ফোড়া উঠেছে সে বিষয়ে কিছু বলেননি।’

খালেদা জিয়ার আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার প্রিয়.কমকে বলেন, ‘উনাকে (খালেদা জিয়া) আজ আদালতে উপস্থিত করে নাই। উনি জেল কাস্টডিতে আছেন। আমরা বলেছি উনার উপস্থিতি ছাড়া মামলা শুনানি হতে পারে না। আমরা সময় আবেদন করেছিলাম কিন্তু সে আবেদন মঞ্জুর হয়নি। আদালত এ মামলার কার্যক্রম মুলতবি করেছেন।’

খালেদা জিয়ার পায়ে ফোড়া হয়েছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে মাসুদ আহমেদ তালুকদার বলেন, ‘উনারা (কারা কর্তৃপক্ষ) বলছে পায়ে ব্যথা পেয়েছেনে উনি (খালেদা জিয়া)।’

সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ২০০৭ সালে দুদকের উপপরিচালক গোলাম শাহরিয়ার চৌধুরী বাদী হয়ে তেজগাঁও থানায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, তার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন।

২০০৮ সালের ১৩ মে দুদকের উপপরিচালক জহিরুল হুদা মামলাটি তদন্ত করে জোট সরকারের প্রভাবশালী সাবেক ৯ মন্ত্রী ও উপমন্ত্রীসহ মোট ২৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

তাতে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগাযোগ করে ঢাকার কমলাপুর আইসিডি ও চট্টগ্রাম বন্দরের কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের কাজ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গ্যাটকোকে পাইয়ে দিয়ে রাষ্ট্রের ১৪ কোটি ৫৬ লাখ ৩৭ হাজার ৬১৬ টাকার ক্ষতি করেছেন।

২৪ আসামির মধ্যে আব্দুল মান্নান ভূঁইয়া, প্রয়াত মন্ত্রী আব্দুল মান্নান ভুইয়া, এম সাইফুর রহমান, এম শামসুল ইসলাম, এম কে আনোয়ার, বন্দরের সাবেক প্রধান অর্থ ও হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা আহমেদ আবুল কাশেম ও আরাফাত রহমান কোকো মারা গেছেন। মানবতাবিরোধী অপরাধের একটি মামলায় ফাঁসি কার্যকর হয়েছে সে সময়ের শিল্পমন্ত্রী মতিউর রহমান নিজামীর।

এ ছাড়া অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন—সাবেক মন্ত্রী ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। সাবেক প্রতিমন্ত্রী একেএম মোশাররফ হোসেন, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের (চবক) সাবেক চেয়ারম্যান জুলফিকার আলী, প্রয়াত মন্ত্রী কর্নেল (অব.) আকবর হোসেনের স্ত্রী জাহানারা আকবর, দুই ছেলে ইসমাইল হোসেন সায়মন এবং একেএম মুসা কাজল, এহসান ইউসুফ, সাবেক নৌ সচিব জুলফিকার হায়দার চৌধুরী, গ্লোবাল এগ্রোট্রেড প্রাইভেট লি. (গ্যাটকো)-এর পরিচালক শাহজাহান এম হাসিব, সৈয়দ তানভির আহমেদ ও সৈয়দ গালিব আহমেদ

গত বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতি দমন কমিশনের একটি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী খালেদা জিয়া।

প্রিয় সংবাদ/কামরুল/আজাদ চৌধুরী