কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

ছবি সংগৃহীত

২১ সেপ্টেম্বর- বিশ্ব শান্তি দিবস

amir salim
লেখক
প্রকাশিত: ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৪, ২০:৩৫
আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৪, ২০:৩৫

(প্রিয়.কম) বিশ্ব ধুঁকছে নানা রকম সমস্যায়। আছে খরা কিংবা অতিবৃষ্টির মতো প্রাকৃতিক বিপর্যয়। আরো আছে সাইকোন-টর্নেডো কিংবা সুনামীর মতো প্রবল শক্তিধর দূর্যোগ। কিন্তু তারচেয়েও বেশি সমস্যা সৃষ্টি করে মানবসৃষ্ট বিপর্যয়গুলো। বিভিন্ন রকমের দূষণ ও দখল, কৃত্রিম দূর্ভিক্ষের ফলে নিদারুণ অনাহার মানুষের জীবনকে কঠিনতর করে তুলছে। সবচেয়ে বেশি সমস্যা সৃষ্টি করছে বিশ্বের আনাচে কানচে ছড়িয়ে পড়া যুদ্ধ ও তাতে ব্যবহার করা অস্ত্রের ধ্বংসাত্মক ক্ষমতা। সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সংঘাত। সন্ত্রাসের কালো থাবায় প্রতি নিয়ত পিষ্ট হয়ে চলছে মানবতা। দুঃখের কথা হলো, এসব যুদ্ধে সৈনিকদের চেয়ে সাধারণ মানুষই বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। আবার তাদের মধ্যে সবচেয়ে ঝুঁকিতে রয়েছে নিরপরাধ শিশুরা। যুদ্ধ ও ধ্বংসের বিরুদ্ধে নিয়মিত কাজ করে চলছে বিশ্বের দেশগুলির প্রতিনিধিত্বশীল সংস্থা জাতিসংঘ। জাতিসংঘের আহ্বানে ২১ সেপ্টেম্বর পালন করা হয় বিশ্ব শান্তি দিবস। যুদ্ধবিহীন বিশ্ব ও শান্তি প্রতিষ্ঠা করাই হলো এমন একটি বিশেষ দিবস যাপন করার প্রধান উদ্দেশ্য। জাতিসংঘ সবসময় চেষ্টা করে যাচ্ছে, বিশ্বব্যাপী নানা কারণে ঘটে চলা যুদ্ধগুলো ও এর হিংসাত্মক প্রভাবকে কমিয়ে ফেলার। একটি বিশেষ দিবস পালন করার মাধ্যমে তারা বিশ্বব্যাপী মানুষের মাঝে শান্তির ধারণাকে শাক্তিশালী করে তুলতে চায়। এভাবেই যুদ্ধের মতো ঘটনাকে নিরুৎসাহীত করে শান্তির পথকে আরো সুগম করে তোলা সম্ভব হতে পারে। ১৯৮১ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে প্রথমবারের মতো বিশ্ব শান্তি দিবস পালনের প্রস্তাবটি তুলে ধরা হয়। যুদ্ধবিহীন বিশ্ব প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তাটি তখন তারা দৃঢ়ভাবে উপলব্ধি করতে পারেন। জাতিসংঘ সাধরণ পরিষদে গৃহীত ৩৬/৬৭ নম্বর প্রস্তাবে প্রতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসের তৃতীয় মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক শান্তি দিবস (International Day of Peace) হিসেবে পালনের সিদ্ধান নেয়া হয়। সেপ্টেম্বর মাসের তৃতীয় মঙ্গলবার বেছে নেয়ার কারণগুলির মধ্যে একটি ছিল, এদিন জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সভা অনুষ্ঠিত হয় এবং এই সিদ্ধান্তটি নেয়া সহজেই সম্ভব হয়। এরপর ২০০১ সালে এসে একটি নির্দিষ্ট দিবস খুঁজে পাওয়া যায়। সেবছর ৭ সেপ্টেম্বর পরিষদের ৫৫/২৮২ নম্বর প্রস্তাবে ২০০২ সাল থেকে প্রতি বছরের ২১ সেপ্টেম্বর বিশ্ব শান্তি দিবস উযাপনের সিদ্ধান্ত হয়। নেই প্রস্তাবে আন্তর্জাতিক শান্তি দিবসকে বিশ্বের যুদ্ধ বিরতি ও অহিংসা দিবস হিসেবে পালনের কথা বলা হয়। তখন থেকেই নিয়মিতভাবে ২১ সেপ্টেম্বর বিশ্ব শান্তি দিবস মর্যাদার সাথে পালিত হয়ে আসছে। শান্তির প্রতি অনুগত থাকা ও যুদ্ধের মতো ধ্বংসাত্মক ঘটনার বিরোধীতা করা ‘বিশ্ব শান্তি দিবসের’ লক্ষ্য। একটি দেশের আভ্যন্তরিন শান্তি বজায় রাখতে চেষ্টা করে যাওয়া ও আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে যুদ্ধ করার ক্ষেতে নিরুৎসাহ প্রদান করার মাধ্যমে যে কোনো দেশ এগিয়ে আসতে পারে। জনমত এবং গণ সচেতনতার শক্তিকে কাজে লাগিয়ে বিশ্বব্যাপী হিংসা ও বিদ্বেষকে প্রশমিত করা যেন প্রত্যেকের দায়িত্বে পরিণত হয় সেজন্য বিশ্ব শান্তি দিবস একটি উদাহরণ হিসেবে কাজ করে চলছে। এ দিবসকে সামনে রেখে বিশ্বের অনেক দেশ পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যাপক পরীক্ষা-নিরীক্ষা, অস্ত্র বাণিজ্য চুক্তি থেকে সরে এসেছে। এসব ঘটনায় বিশ্ব শান্তি দিবসের গুরুত্বটি সবার সামনে আরো আন্তরিকভাবে গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠছে। এসব ঘটনাকে জাতিসংঘ সাফল্য হিসেবে চিহ্নিত করেছে। বিশ্ব শান্তি রক্ষায় বাংলাদেশও ভূমিকা রাখছে। ১৯৮৮ সালে ইরাক-ইরান যুদ্ধে পর্যবেক্ষক পাঠানোর মধ্য দিয়ে এদেশ শান্তি রক্ষার ক্ষেত্রে বড় ধরণের পদক্ষেপ গ্রহণ করে। বর্তমানে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রায় সাড়ে ৯ হাজার সৈনিক কর্মরত আছেন। এদেশের সন্তানরা আইভরি কোস্ট, লাইবেরিয়া, সুদান, কঙ্গো, পশ্চিম সাহারা, পূর্ব তিমুর, লেবানন ও হাইতির মতো দেশে শান্তিরক্ষায় কাজ করে চলেছেন। বিশ্ব শান্তি দিবস উপলক্ষে বিশ্বব্যাপী নানা ধরনের কর্মসূচি নেয় হচ্ছে। বিভিন্ন গণমাধ্যমগুলো বিষয়টি সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে নানা রকম আয়োজন করে থাকে। সেমিনার, পদযাত্রা, পোস্টার ও ক্রোরপত্র প্রকাশের মাধ্যমে শান্তির বার্তাকে আরো ছড়িয়ে দেয়া হয়। জাতিসংঘ থেকে শিল্পী, শিক্ষাবিদ ও মানবপ্রেমীদের শান্তিদূত হিসেবে নিয়োগ করে শান্তির প্রচেষ্টাকে আন্তরিক করে তোলা হয়। আজ ২১ সেপ্টেম্বর বিশ্ব শান্তি দিবস উপলক্ষে আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘মাস্টারপিস’ একটি বিশেষ কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। বিশ্বের ৫২টি দেশে ওপেন এয়ার কনসার্টসহ নানামাত্রিক সাংস্কৃতিক আয়োজনের মাধ্যমে তারা দিবসটিকে স্মরণীয় করে রাখতে চায়। এরই অংশ হিসেবে ‘মাস্টারপিস বাংলাদেশ’ একটি ওপেন এয়ার কনসার্ট-এর আয়োজন করতে যাচ্ছে। এটি অনুষ্ঠিত হবে সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার পিএইচজি হাইস্কুল মাঠে। এতে অংশ নেবে ব্যান্ডদল এলআরবি।