ছবি সংগৃহীত

হেয়ার রিবন্ডিং-এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ও প্রতিকার

তাপসি মুন
লেখক
প্রকাশিত: ২১ জুলাই ২০১৩, ০৮:৪১
আপডেট: ২১ জুলাই ২০১৩, ০৮:৪১

প্রতি বছর চুলের ফ্যাশনে নতুন নতুন ট্রেন্ড আসে। আজকে চুল ছোট করার ট্রেন্ড তো আবার কাল চুল বড়, আছে হাজারো ধরনের হেয়ার কাট। কিন্তু রেশমি আর সোজা চুল এখনও তরুণীদের সবচাইতে পছন্দের। সন্দেহহীন ভাবেই সোজা চুল সামলানো অনেক সোজা এবং যেকোনো লুক আনা যায় সহজেই, দেখতেও ভালো লাগে কোনো স্টাইল ছাড়াই। আর তাই কোঁকড়া বা ঢেউ খেলানো চুলের অনেকেই কৃত্রিম উপায়ে চুল সোজা করিয়ে থাকেন। হেয়ার রিবন্ডিং একবার করলে এক বছরের মত থাকে। কিন্তু হেয়ার রিবন্ডিং করার পর সবার এক অভিযোগ হয় এটাই যে অনেক বেশি চুল পড়ে। হেয়ার রিবন্ডিং করলে শুধু চুলই পরে না, একটু ভিতরে গেলে অনেক সাইড ইফেক্ট বের হয়ে আসবে। আসুন জেনে নেওয়া যাক হেয়ার রিবন্ডিং সাইড ইফেক্ট গুলো।

পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াঃ

  • ১) আগেই বলে নেওয়া ভালো, হেয়ার রিবন্ডিং করার সময় আপনার চুল পড়বেই। যতই করার আগে চুলের যত্ন নেন না কেন, প্রক্রিয়াটির কেমিক্যাল চুল এর গোড়াকে নরম করে দিবেই।
  • ২) কেবল করার সময় নয়, চুল পড়বে এর পরেও।
  • ৩) সব চেয়ে ভয়ানক হেয়ার রিবন্ডিং সাইড ইফেক্ট হলো ক্যান্সার হওয়ার আশংকা। হেয়ার রিবন্ডিং কিট-এ formaldehyde নামক উপাদান ব্যবহার করা হয় যেটা মূলত চুলকে সোজা করতে এবং অনেকদিন ধরে তা রাখতে সাহায্য করে। খুব অল্প মাত্রায় দেওয়া থাকলে সেটাকে ক্ষতিকারক বলা হয় না। কিন্তু উচ্চ তাপে চুলের আয়রন ব্যবহার করায় এটা বেশি ক্ষতিকারক হয়ে যায় এবং কান্সার ডেভেলপ করতে ভূমিকা রাখে।
  • ৪) খুব শক্তিশালী উপকরণ যেমন formaldehyde and aldehydes র অ্যালার্জি দেখা দিতে পারে। মাথার sclap শুষ্ক, চুলকানি, খুশকি হতে পারে।
  • ৫) যাদের চুল এমনিতেই দুর্বল তাঁদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত তাপমাত্রায় হিট এবং কেমিক্যাল অনেক বেশি চুল পড়তে পারে। টাকও পড়ে যেতে পারে।
  • ৬) চুল রুক্ষ হয়ে যেতে পারে, আগা ফাটা সমস্যা প্রবল আকার ধারণ করতে পারে।
তাছাড়া কিছু হেয়ার রিবন্ডিং সাইড ইফেক্ট আছে, যেটা পারতপক্ষে তেমন একটা হয় নাহ। আবার অনেকের ক্ষেত্রে হয়ে থাকে।
  • ১) মাথা ব্যথা ।
  • ২) নাক দিয়ে রক্ত পরা।
  • ৩) স্কিন এবং চুল জ্বলা।
  • ৪) স্কিন এবং চুল চুলকানো।

প্রতিকারঃ

চুল রিবন্ডিং করার পর সব সময় চুলের যত্ন নেওয়াই একমাত্র প্রতিকার। কিছু বিশেষ জিনিস অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে।
  • ১) চুল রিবন্ডিং থাকা অবস্থায় কখন চুলে গরম পানি দিয়ে ধোয়া যাবে না। চুল সবসময় ঠাণ্ডা পানি দিয়ে পরিষ্কার করুন।
  • ২) মৃদু শ্যাম্পু এবং কন্ডিশনার ব্যবহার করতে হবে।
  • ৩) মোটা দাতের চিরুনি দিয়ে চুল আঁচড়াতে হবে।
  • ৪) চুলের আগা রেগুলার ট্রিম করতে হবে।
  • ৫) সব সময় খেয়াল রাখতে হবে যে শ্যাম্পু এবং কন্ডিশনার করার পর সম্পূর্ণ ভাবে যেন সেটা ধোয়া হয়।
  • ৬) চুল রিবন্ডিং করার পর চুলে আর আয়রন জাতীয় কিছু ব্যবহার করা উচিৎ না।
  • ৭) সপ্তাহে ৩ বার অয়েল ম্যাসাজ করা উচিৎ।
  • ৮) চুল এর ওপর কম অত্যাচার করাই ভালো। মানে চুল রিবন্ডিং করার পর কোন প্রকার কালার, হাইলাইটস, চুলের স্টাইল না করাই ভালো।
  • ৯) চুলকে রোদ, ধুলোবালি, বৃষ্টির পানি থেকে বাঁচিয়ে রাখুন। রিবন্ডিং করা চুল খুব তাড়াতাড়ি সূর্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
  • ১০) সপ্তাহে ২ বার চুলে হেয়ার মাস্ক লাগান। এতে করে চুল পুষ্টি পাবে।
  • ১১) যদি চুল এ বৃষ্টির পানি লাগে তাহলে বাসায় এসে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চুলে শ্যাম্পু করুন।
  • ১২) বেশি করে পুষ্টিকর খাবার খান। খাবারে মেনু তে প্রতিদিন মাছ, মাংস, বাদাম, দুধ, ফল রাখুন।
  • ১৩) চুল কখনই বেণী করবেন না। চুলে বাদাম তেল গরম করে দিবেন, চুল পুষ্টি পাবে।
  • ১৪) বাসায় প্রোটিন প্যাক বানিয়ে দিতে পারেন। ১ টা কলা, ১ টা ডিম, ৫ চামচ টক দই ব্লেন্ড করে চুলে দিয়ে রাখবেন আধা ঘণ্টা।
মনে রাখতে হবে কেমিক্যাল যুক্ত চুল স্বাভাবিক চুলের থেকে বেশি যত্ন দাবী করে। ঠিক মত চুলের যত্ন নিলে চুল পড়া অনেকাংশে কমবে।