ছবি সংগৃহীত

শিশুর পেটে ব্যথা : হতে পারে ডিসপেপসিয়া

nusrat jahan champ
লেখক
প্রকাশিত: ২০ নভেম্বর ২০১৪, ০৭:২৫
আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০১৪, ০৭:২৫

(প্রিয়.কম) শিশুদের বিভিন্ন রকমের অসুখ-বিসুখের মধ্যে একটি হলো পেটে ব্যথা। সব শিশুরাই নানা কারণে কম-বেশি পেটে ব্যথায় ভুগে থাকে। সামান্য কারণে যেমন পেটে ব্যথা হতে পারে, তেমনই শরীরের ভেতরে কোনো বিশেষ অঙ্গের সমস্যার কারণেও পেটে ব্যথা হতে পারে। তাই শিশুর পেটে ব্যথা হলেই দ্রুত ডাক্তার দেখানো উচিত। পেটে ব্যথা কেন হচ্ছে সেই কারণটা জানা জরুরি। সময় থাকতে থাকতে চিকিত্‍সা শুরু করলে জটিলতা এড়ানো যায়। শিশুদের পেটে ব্যথার সেরকমই একটা সমস্যা হলো ডিসপেপসিয়া।

ডিসপেপসিয়া কী

ডিসপেপসিয়া হলো নাভির চারপাশে এক ধরনের ব্যথা বা অস্বস্তি। শিশুদের মধ্যে দুই ধরনের ডিসপেপসিয়া দেখা যেতে পারে। একটি অরগ্যানিক ডিসপেপসিয়া, যদি পেটের মধ্যে কোনো অরগ্যানে সমস্যা হয় তাহলে এ ডিসপেপসিয়া হয়। আরেকটি হলো ফাংশনাল ডিসপেপসিয়া। এই ডিসপেপসিয়ায় পেটে ব্যথার তেমন কোনো কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না।

যেভাবে বুঝবেন

শিশুদের অসুখ-বিসুখের লক্ষণ বুঝতে চাইলে খেয়াল রাখতে হয় অভিভাবকদেরই। কারণ শিশুরা তো নিজে নিজে কিছু বুঝতে পারে না। ডিসপেপসিয়া কি না তা বুঝতে হলে খেয়াল রাখুন এ সময়ে শিশুর কী কী অস্বস্তি বা অসুবিধা হচ্ছে। শিশু যদি বলে পেটের চারপাশে ব্যথা হচ্ছে, কিন্তু ব্যথা ছাড়া যদি অন্য কোনো সমস্যা না থাকে, ঘুমের মধ্যে কোনো অসুবিধা না হয়, ওজন না কমে তাহলে সেটা ফাংশনাল ডিসপেপসিয়া। অনেক সময় শিশুর মানসিক সমস্যা থেকে ফাংশনাল ডিসপেপসিয়া হতে পারে। এমনকি হতে পারে 'স্কুল ফোবিয়া' থেকেও। অরগ্যানিক ডিসপেপসিয়াতে বারবার বমি হয়, ওজন কমে যেতে থাকে। অরগ্যানিক ডিসপেপসিয়ার ক্ষেত্রে বিশেষ কারণও খুঁজে পাওয়া যায়। যেমন শিশুর হয়তো দীর্ঘদিন ধরে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা হচ্ছে বা কৃমিতে আক্রান্ত। অনেক সময় লিভার বা পেটের অন্য কোনো অঙ্গের ইনফেকশন থেকেও অরগ্যানিক ডিসপেপসিয়া হতে পারে।

চিকিত্‍সা

শুধু পেটে ব্যথা তেমন একটা ভয়ের নয়। তবে পেটে ব্যথার সাথে যখন আরো আনুষঙ্গিক সমস্যা দেখা দেয়, তখন দ্রুত ডাক্তার দেখানো জরুরি। যখন শিশুর একেবারেই ঘুম হচ্ছে না, সকালে উঠেই বমি করছে বা ওজন অতিরিক্ত কমে যাচ্ছে, একেবারেই খিদে পাচ্ছে না বা খাবার দেখলেই বমি হচ্ছে তখন কিছু পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষার রিপোর্ট অনুযায়ী চিকিত্‍সা করা হয়।

সতর্কতা

- অল্প অল্প করে শিশুকে খাবার খাওয়ান। এতে সারাদিন শিশুর পেট ভরা থাকবে। শিশুর পেট যেন কখনোই খালি না থাকে। - শিশুকে বাইরের খাবার যতটা সম্ভব কম খেতে দিন। বাড়ির তৈরি খাবার খেলে বাইরের জীবাণু থেকে পেটে ইনফেকশন অনেকটাই প্রতিরোধ করা যায়। - শিশুকে বেশি তেলমশলা ও ঝাল দেওয়া খাবার না খাওয়ানোই ভালো। - শিশু যদি একা খায় তাহলে সে খুব বেশি খেতে চায় না। কিন্তু যদি সপরিবারে বসে একসঙ্গে খায়, তাহলে শিশুও খেতে উত্‍সাহ পায়। তাই দিনে অন্তত একবেলা হলেও পরিবারের সবাই একসঙ্গে বসে খান। এতে শিশুর খাওয়ার ইচ্ছা বাড়বে। - শিশুকে খাবার সুন্দর করে সাজিয়ে দিন। খাবার দেখতে সুন্দর হলে শিশু নিজে থেকেই খেতে উত্‍সাহী হবে। তথ্যসূত্র: ডা. সৌগত আচার্য, সানন্দা, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১২