ছবি সংগৃহীত

বিজ্ঞান প্রতিদিন-অদৃশ্য শক্তিতে নৌকা চালনার ম্যাজিক ট্রিক!

দেয়া
লেখক
প্রকাশিত: ০৮ জানুয়ারি ২০১৪, ০৪:১৭
আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০১৪, ০৪:১৭

বাড়ির আনাচে কানাচে পড়ে থাকা জিনিসপত্র কতই না সাধারণ মনে হয়, তাই না? বিনোদনের জন্য আমরা খুঁজি উজ্জ্বল, রংচঙে এবং নজরকাড়া সব উপাদান। কিন্তু জানেন কি, বাড়ির এসব ফেলনা জিনিসপত্র দিয়েই কত অসাধারণ জিনিস তৈরি করে ফেলা যায়? ছোট ছোট সাধারণ কয়েকটা উপাদানেই তৈরি হয়ে যায় অন্যরকম কিছু আর তার পেছনে দায়ী কে? বিজ্ঞান! বিজ্ঞানের কেরামতি কাজে লাগিয়ে দেখানো যায় মজার সব ম্যাজিক। ভাবুন তো একবার-বন্ধু মহলে ম্যাজিক দেখাচ্ছেন, ছোট্ট একটা নৌকা তৈরি করে ছেড়ে দিলেন পানিতে। এলোমেলো না ভেসে থেকে আপনার আঙুলের ইশারাতেই তরতর করে সামনে এগোনো শুরু করলো ছোট্ট নৌকাটি,যেন তাতে ইঞ্জিন বসানো! কি তাক লাগানো একটা ব্যাপার,তাই না? এই ছোট্ট নৌকাটি যা নিজে নিজেই পানির মাঝে চলতে পারে আর তাকে চালিয়ে নিয়ে যায় কে? তেল নয়, বিদ্যুৎ নয়, বাষ্প নয়। একটুকরো ফেলনা সাবান!মাত্র দুটি উপাদানেই দেখানো সম্ভব এই তাক লাগানো ম্যাজিক। আসুন, শিখে নেই।

বিজ্ঞান মানেই কি কেবল ভারী ভারী বইয়ের মাঝে থাকা দুর্বোধ্য সব নিয়মনীতি? নাকি বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা মানেই শুধু ফিটফাট ল্যাবরেটরি আর বোতলে বোতলে ভরা সব রাসায়নিক? কোনটাই নয়! একদম সাধারণ কিছু উপাদান দিয়ে আপনি নিজেই তৈরি করতে পারবেন মজাদার একেকটি বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা। আর এই কাজ টি করার জন্য কোনও ল্যাবরেটরি প্রয়োজন হবে না, আপনার নিজের রান্নাঘরটিই যথেষ্ট! পুরনো ফেলনা ভিজিটিং কার্ড আর সাবান দিয়ে একেবারে সহজে তৈরি করে ফেলুন চলমান একটি নৌকা।

কি কি লাগবে

- শক্ত কাগজ (প্রথমবার পরীক্ষা করে দেখার জন্য ব্যবহার করতে পারেন একটা পুরনো ভিজিটিং কার্ড) - এক বোল পানি - সাবান (তরল বা শক্ত) - কাঁচি

যা করতে হবে

১) প্রথমে ভিজিটিং কার্ডটিকে তেকোণা করে কেটে নিন। অথবা এর সামনের অংশটা মুড়েও তেকোণা আকৃতি দিতে পারেন। তাতে এই ছোট্ট নৌকা সামনের দিকে সোজা এগোবে। ২) কার্ডের পেছনে কাঁচি দিয়ে একটু লম্বাটে ফুটো বা খাঁজ তৈরি করে নিন। ৩) এই ফুটোর ওপরে একটু তরল সাবান লাগিয়ে দিন। আরেকটা কাজ করতে পারেন, তা হলো এই ফুটোর মাঝে আটকে দিতে পারেন একটুকরো শক্ত সাবান। একটু বেশি রুক্ষ সাবান যেমন ডিটারজেন্ট বা কাপড় কাচার সাবান ব্যবহার করতে পারেন। ৪) এরপর আর কিছু করতে হবে না। স্রেফ পানিভর্তি বোলে ছেড়ে দিন আর দেখুন কিভাবে ছোট্ট নৌকাটি নিজে নিজেই এগিয়ে চলেছে সামনের দিকে।

ব্যাখ্যা

পানির উপরিভাগে যেসব অণু থাকে তারা একে অপরের সাথে শক্ত হয়ে আটকে থাকে। এর ফলে পানির উপরে তৈরি হয় একটা ত্বকের মতো আবরণ, যাকে বিজ্ঞানের ভাষায় বলে সারফেস টেনশন বা পৃষ্ঠটান। এই সারফেস টেনশনের কারনেই আপনার ছোট্ট কাগজের নৌকা পানির ওপরে ভেসে থাকতে পারে। এই সারফেস টেনশনের ওপরে প্রভাব ফেলে সাবানের অণু। সাবানের উপস্থিতির কারণে পানির অনুর এই সুন্দর সাজানো-গোছানো তল ওলটপালট হয়ে যায়। পানির অণুগুলো সাবানের অণুর আকর্ষণে এর কাছে আসতে থাকে এবং নৌকার পেছনে সারফেস টেনশন কম হয়ে যায়। এই ক্রিয়ার ফলে নৌকার সামনে থাকা অণুগুলো একে সামনের দিকে টেনে নিয়ে যেতে থাকে এবং আপনার নৌকা চলে নিজে থেকেই! প্রথমবার পরীক্ষা করে ব্যাপারটা বুঝে যাবার পর আপনি একে আরও মজাদার করে তুলতে পারেন। নৌকাটা এমন সাধারণভাবে তৈরি না করে নিজের মতো করে নকশা করে নিতে পারেন।