ছবি সংগৃহীত

বার্ধক্যে একাকীত্ব হতে পারে মৃত্যুর কারণ!

প্রিয় লাইফ
লেখক
প্রকাশিত: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৪, ১০:০২
আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৪, ১০:০২

বার্ধক্যে মানুষের শরীর শুধু প্রভাবিত হয় না বরং মনটাও প্রভাবিত হয় অনেকভাবে। খুব সাধারণ যে ব্যাপারটা দেখা যায় তা হলো, বার্ধক্যে অনেক মানুষই একেবারে একা হয়ে যান। তাদের সন্তানেরা প্রাপ্তবয়স্ক হবার পর ব্যস্ত হয়ে যায় নিজের জীবন নিয়ে, জীবনসঙ্গী মারা যান অনেক সময়ে, এক্সময়ে যারা কাছের মানুষ ছিলেন তারাও অনেক দূরে চলে যান। এ বয়সে চাকরিবাকরি করে নিজেকে ব্যস্ত রাখাটাও সম্ভব হয় না। এ কারণে সৃষ্টি হয় চরম একাকীত্ব, এবং এভাবে একাকীত্বে ভুগে মৃত্যুর সম্ভাবনাটাও যায় অনেক বেড়ে। ইউনিভার্সিটি অফ শিকাগোর মনস্তত্ববিদ জন ক্যাসিওপ্পোর একটি গবেষণা অনুযায়ী, একাকীত্বের কারণে বৃদ্ধ মানুষদের অকাল মৃত্যুর সম্ভাবনা বেড়ে যায় ১৪ শতাংশের মতো। তাই এটা মোটেও উপেক্ষা করার মতো কোনো বিষয় নয়। দেখা যায়, দারিদ্র্যের কারণে মৃত্যুর সম্ভাবনা যেভাবে বাড়ে, একাকীত্বের কারণেও মৃত্যুর সম্ভাবনা অনেকটা সেভাবেই বাড়ে। আর মানুষ মোটা হলে তাতে যত না মৃত্যুর ঝুঁকি থাকে, তার চাইতে একাকীত্বের কারণে মৃত্যুর সম্ভাবনা থাকে প্রায় দ্বিগুণ। বার্ধক্যের ফলে প্রায় নাটকীয়ভাবে অবনতি ঘটে মানুষের শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে। এ সময়ে স্বাস্থ্য ভালো রাখার ক্ষেত্রে পারিবারিক এবং সামাজিক সম্পর্কের ভুমিকা অনেক বেশি। অন্যদের সাথে সম্পর্ক ভালো থাকলে বিভিন্ন অসুস্থতা থেকে দ্রুত সেরে ওঠা সম্ভব হয়, বার্ধক্য শরীর এবং মনে বেশি ছাপ ফেলতে পারে না এবং বিভিন্ন রকমের স্ট্রেস থেকেও মুক্ত থাকা যায়।

একাকীত্ব কিভাবে মানুষের ক্ষতি করে? দেখা যায়, অন্যদের থেকে দূরে থাকা কারণে মানুষের ঘুম হয় না ঠিকমতো, রক্তচাপ বেড়ে যায়, সকাল বেলায় প্রচণ্ড রকম বেড়ে যায় স্ট্রেস হরমোন কর্টিসল, সুস্থ দেহকোষের মাঝেও আনে পরিবর্তন এবং বিষণ্ণতা বাড়িয়ে দেয় বহুগুণে। অর্থাৎ একাকী থাকার ফলে জীবনযাপনের মানটাও কমে যায় ভীষণভাবে। কিছু মানুষ যদিও একা থাকতেই ভালোবাসেন, কিন্তু নিজের স্বাস্থ্যের কথা ভেবে তাদের মনোভাব কিছুটা পরিবর্তন করা গেলে ভালো হয়। বিশেষ করে মধ্যবয়স থেকে বার্ধক্যে পদার্পণের সময়টায় সবারই উচিত এ ব্যাপারে একটু সতর্ক থাকা। একজন মানুষ একা বাস করলেও তার ক্ষতি হবে না যদি তিনি নিয়মিত পরিবার-পরিজনের সাথে যোগাযোগ রাখেন। আবার নিজের সন্তানের সাথে একই বাড়িতে থেকেও যদি একজন বৃদ্ধ মানুষ অন্যদের সাথে কথা বলার সুযোগ না পান, তবে তার ক্ষতি হয়েই যাবে। কি করে এড়ানো যেতে পারে এসব ক্ষতি? অন্যদের সাথে সব সময় আপনার যোগাযোগ রাখতে হবে। এক্ষেত্রে তারা প্রাক্তন সহকর্মীদের সাথে যোগাযোগ রাখতে পারেন, পরিবারের সবার সাথে দেখা করতে একত্র হতে পারেন, আর বন্ধুদের সাথেও দেখা করতে পারেন নিয়মিত। এ সবই আপনাকে রাখবে অনেক বেশি হাসিখুশি, কারণ তখন আপনি নিশ্চিন্ত থাকবেন যে আপনাকে ভালোবাসে এমন অনেক মানুষ আছে। কাছের মানুষদের মাঝে থাকতে পারলে বার্ধক্যের করাল আঘাত সহজে ছুঁতে পারবে না আপনাকে।