ছবিটি রূপক, ইন্টারনেট হতে সংগৃহীত (প্রিয়.কম) জীবন থাকলে সম্পর্ক থাকবেই। আর সম্পর্ক থাকলে থাকবে সমস্যা। প্রতিদিন ফেসবুকের ইনবক্সে ও ই-মেইলে আমরা অসংখ্য সম্পর্ক ভিত্তিক প্রশ্ন পাই, যেগুলোর কথা হয়তো কাউকেই বলা যায় না। পাঠকদের করা সেইসব গোপন প্রশ্নের উত্তর দিতেই আমাদের নিয়মিত আয়োজন "প্রিয় সম্পর্ক"। আর সম্পর্ক ভিত্তিক সেই প্রশ্নগুলোর উত্তরে পরামর্শ দিচ্ছেন গল্পকার রুমানা বৈশাখী, এডিটর ইন চার্জ (লাইফ ও সায়েন্স), প্রিয়.কম। আপনি চাইলে নিজের এমনই কোন একান্ত ব্যক্তিগত সমস্যার কথা লিখে জানাতে পারেন আমাদের। আমরা প্রতিদিন চেষ্টা করবো বাছাইকৃত কিছু সমস্যার সমাধানে কাঙ্ক্ষিত পরামর্শটি দেবার। সমস্যার কথা "বাংলায়" লিখে জানান আমাদের ফেসবুক পেজের ইনবক্সে। নাম গোপন রাখতে চাইলে লিখে দেবেন "নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক"। আমাদের পেজ লিঙ্ক- https://www.facebook.com/priyolife

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জানিয়েছেন নিজের সমস্যার কথা।

"আমার নাম দয়া করে প্রকাশ করবেন না। আমার বিয়ে হয়েছে ১৮ মাস, স্বামী বিদেশ থাকে। আমার আর আমার স্বামী বয়সের পার্থক্য ৯ বছরের, তাই আমাদের চিন্তা ভাবনা, পছন্দ-অপচ্ছন্দ সবই আলাদা। আমাদের পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয়, বিয়ের ৭ দিন পর আমার স্বামী চলে যায়। বিয়ের পর আস্তে আস্তে বুঝলাম ও আর আমি সম্পূর্ণ আলাদা, তার পর খেয়াল করলাম আমার স্বামী সম্পূর্ণ মা ভক্ত ছেলে। এতটাই ভক্ত যে সে তার মা বললে বউ ছেড়ে দিবে। সব মেনে নিয়ে শশুর বাড়িতে সংসার করলাম, দেখলাম আমার ননদ আমার বাড়িতে এসে থাকা শুরু করল। আমার প্রতিটা ব্যাপার এ সে নাক গলাতে সুরু করল, আমার চেয়ে বেশী আমার স্বামী তার বোনের সাথে যোগাযোগ করে, আর আমার ননদ যা বলে চোখ বন্ধ করে সে তাই বিশ্বাস করে। আমার রুমের দরজার বাহিরে এসে দাড়িয়ে কথা শুনে, আর আমার স্বামীর কাছে মিথ্যা বলে আমাদের ঝগড়া লাগায়। আমি বুঝিনা সে এগুলো করে কী পায়। ওর সাথে আমার এখন প্রতিদিন ঝগড়া হয়। ওর পরিবারের মানুষ কিছুতেই চায় না আমরা ভাল থাকি বিশেষ করে আমার ননদ, এসব সহ্য না করতে পেরে আমি ২ বার আত্ম্যহত্যারও চেষ্টা করেছিলাম। আমি এখন কি করব? আমার স্বামীকে কিভাবে বোঝাব। প্লিজ আমাকে সাহায্য করুন, অনেক উপকৃত হব।"

পরামর্শ:

আসলেই আপু, এভাবে থাকাটা খুবই কষ্টের। প্রথমত বয়সের এত পার্থক্য, তার ওপরে পারিবারিক বিয়ে। এসব ক্ষেত্রে মনের মিল হতে হতেই অনেক্তা সময় চলে যায়। তারপর স্বামী যখন বিদেশে থাকেন, তখন ভুল বোঝাবুঝির সমস্যা অনেক বেড়ে যায়। আপনি যে সমস্যায় ভুগছেন, এটা অনেক মেয়েরি সমস্যা। আমাদের দেশে অনেক পরিবারই বউকে প্রতিপক্ষ মনে করে। বিশেষ করে শ্বশুর ও ননদ/ননাসরা। আর এই সমস্যা থেকে মুক্তির একমাত্র উপায় হতে পারে স্বামী। সেই স্বামী যখন সাথে থাকেন না, তখন আসলেই খুব বড় বিপদ। আমার যা মনে হয় আপু, আপনি যদি স্বামীকে অভিযোগ করতে শুরু করেন বা তাঁর সাথে ঝগড়া করেন, তাহলে সমস্যা আর বাড়বে। আপনি যতই তাকে বোঝাতে চান না কেন যে ননদ আপনার সাথে কী করছেন, সেটা তিনি অত দূর থেকে কিছুতেই বুঝবে না। বরং আপনার মুখে বদনাম শুনলে তিনি উল্টো রাগই হবে। যত যাই হোক, তাঁর তো নিজের বোন। আপনি অভিযোগ করা বন্ধ করে দিন। নিজেদের ব্যাপারে কথা বলুন, স্বামীর সাথে বন্ধন মজবুত করুন। স্বামী যখন আপনাকে গভীরভাবে ভালোবেসে ফেলবেন, তখন আপনার সমস্যাগুলো তিনি নিজে থেকেই বুঝবেন। আর আপনি চুপ থাকার পরও যখন মা ও বোন কমপ্লেইন দিতেই থাকবেন, তখনও তাঁর চোখ খুলে গেলেও যেতে পারে। আপনি চেষ্টা করুন স্বামীর কাছে বিদেশে চলে যাওয়া যায় কিনা সেই চেষ্টা করতে। এতে সমসশার সহজ সমাধান হয়ে যাবে। আর কাছে থাকলে ভালোবাসাও অনেক বেশি বাড়বে। পাশাপাশি নিজের পরিবারের সাথেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করুন। পরিবারের মুরুব্বিরা নিশ্চয়ই কোন ভালো পরামর্শ দিতে পারবেন। সমস্যা যদি খুব বেশি বেড়ে যায়, তখন আপনার পিতা মাতার ১০০ ভাগ অধিকার আছে সবকিছু নিয়ে কথা বলার।