
ছবি সংগৃহীত
পার্বতীপুরে নলকূপের পানিতে জ্বালানি তেল!
আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৬, ১২:৩৪
দিনাজপুরের বুনুয়ার ডাঙ্গায় নলকু বসানোর সময় পাওয়া যায় জ্বালানী তেল, ছবি: প্রিয়.কম
(শাহ্ আলম শাহী,দিনাজপুর) দিনাজপুরের পার্বতীপুরে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি সংলগ্ন একটি গ্রামে জ্বালানি তেল কেরোসিনের খনি’র সন্ধান পাওয়া গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। শেরপুর বুনুয়ার ডাঙ্গায় নলকুপের পাইপ বসানোর সময় মাটির ৩৬ ফুট গভীরে এই জ্বালানি তেলের সন্ধান পাওয়া যায় গেল শনিবার দুপুরে।
বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ৬ কিলোমিটার উত্তরে পার্বতীপুর উপজেলার হাবড়া ইউনিয়নের শেরপুর বুনুয়ার ডাঙ্গা গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত বিজিবি সদস্য খাতিজার রহমানের বাড়ীতে পুরাতন একটি নলকুপের বোরিং মেরামত করতে গিয়ে নলকুপ মিস্ত্রিরা এর সন্ধান পান। নলকুপের পাইপ দিয়ে তেল বের হওয়ার খবরটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে তা শতশত উৎসুক মানুষ সেখানে ভীড় করছে।
খবর পেয়ে শনিবার বিকেলে পাবর্তীপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার তরফদার মাহমুদুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন এবং বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি কর্তৃপক্ষ পরীক্ষার জন্য নমুনা নিয়ে গেছেন।
সরেজমিন শেরপুর বুনুয়ার ডাঙ্গায় খাতিজার রহমানের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় শতশত নারী-পুরুষ, সেখানে ভীড় করছেন। কথা হয় ওই বাড়ীর মালিক অবসরপ্রাপ্ত বিজিবি সদস্য খাতিজার রহমানের সাথে।
খাতিজার রহমান জানান, ২০০৫ সালে বুনুয়ার ডাঙ্গায় তিনি বাড়ি করেন। বাড়ি করার পর সেখানে ১১০ ফুট গভীরতায় একটি ৪ ইঞ্চি বোরিং করে সাবমারসেল (ভূ-গর্ভে পানির নিচে বসানো পাম্প) বসান। বছর খানিক সেখান থেকে ভাল পানীয়জল পাওয়া যায়। এরপর সাবমারসেলটি পুড়ে যায়। পরবর্তীতে কয়েকদফা নতুন সাবমারসেল বসানো হয়। কিন্তু প্রতিটি সাবমারসেল ৬ মাসের মাথায় নষ্ট হয়ে যায়। তিনি বলেন, পরে ওই বোরিং এর মধ্যে দেড় ইঞ্চি পাইপ প্রবেশ করিয়ে নলকুপের সাহায্যে পানি উত্তোলন করা হয়। কিন্তু ওই নলকুপ থেকে কিছু দিন ভাল পানি পাওয়ার পর লাল ঘোলাটে পানি বের হতে থাকে।
একারণে তিনি বোরিংটি মেরামতের জন্য শনিবার চন্ডিপুর ইউনিয়নের কালিকাবাড়ী ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের নলকুপ বোরিং মিস্ত্রি বাবলুকে ডেকে আনেন। বাবলু তার দুই সহকারীকে নিয়ে ওই বোরিংয়ে কয়েকটি পাইপ প্রবেশ করিয়ে দেখতে পান পানির সাথে জ্বালানী তেল বের হচ্ছে। পরে তারা বোরিং মেরামত না করে ফিরে যান। নলকূপ মিস্ত্রি জয়নাল আবেদিন বাবু ও বিডিআর সদস্য খাতিজার রহমান দাবি করেন, উত্তোলিত তরল পদার্থে ম্যাচের কাঠি দিলে আগুনের শিখা জ্বলে ওঠে।
পাবর্তীপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার তরফদার মাহমুদুর রহমান জানান, খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে জ্বালানী তেল পরীক্ষা ও নির্ণয় করার জন্য বিশেষজ্ঞ রয়েছেন। কয়লা খনি কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানোর পর তারা এসে পরীক্ষা করার জন্য সেখান থেকে নমুনা নিয়ে গেছে। পরীক্ষার পর জানা যাবে সেখানে পানির সাথে জ্বালানী তেল না অন্য কিছু বের হচ্ছে। পরীক্ষা শেষ না হওয়া পর্যন্ত সেখানে সকল প্রকার কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।