ছবি সংগৃহীত

চাচাকে নিয়ে ফেসবুকে ঝড়!

priyo.com
লেখক
প্রকাশিত: ০৩ ডিসেম্বর ২০১৩, ১৫:০৬
আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০১৩, ১৫:০৬

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। তিনি ঘোষণা দেওয়ার পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে শুরু হয়েছে আলোচনার ঝড়! মঙ্গলবার বেলা ১২টায় গুলশান জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ সংবাদ সম্মেলন ডেকে এ ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, আমি পূর্বেই বলেছিলাম সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টি না হলে আমি নির্বাচনে যাব না। এখন পরিবেশ নেই বলে আমি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালাম। এ ঘোষণা দেওয়ার পরপরই এরশাদকে ‘চাচা’ সম্বোধন করে তাকে নিয়ে হাজার রকম লেখায় ভরে যায় ফেসবুকের টাইমলাইন। ‘চাচা’কে যা হচ্ছে ফেসবুকে: আছিব চৌধুরী লিখেছেন,

চাচা রং বদলায়, রংপুরে ভাতিজারা আনন্দে গরু কাটে....
মো. মুজিব উল্লাহ লিখেছেন,
নানাক্ষেত্রে ডিগবাজী দেওয়া অধিকাংশ শিক্ষিত বাঙালীদের সাধারণ বৈশিষ্ট্য; কেউ দেয় অভাবে, কেউ স্বভাবে। [ফুটনোট: সাবেক স্বৈরশাসক এরশাদকে নিয়ে টিপিক্যাল মধ্যবিত্ত বাঙালীদের স্ট্যাটাস উতসবে আমাদের (তাদের) নিজেদের মাঝে এমন বৈশিষ্ট্যের দেখা মেলে।]
আরাফাত তানিম লিখেছেন,
ইংল্যান্ডে একটি প্রবাদ আছে যে থ্রি ডব্লিউ (Work, weather, wife) এর উপর বিশ্বাস রাখতে নেই, যেকোনো সময় বদলে যায়। আমাদের ৩ টি জিনিষের গর্ব নাও থাকতে পারে, তাঁতে কি? আমাদের তো এরশাদ সাহেব আছেন। বদলে যাও, বদলে দাও।
শরিফুল হাসান বলেছেন,
বাংলাদেশের সব মানুষ এরশাদরে গালি দেয় যেভাবে মানুষেরা গালি দেয় পতিতাকে। আমার খুব জানতে ইচ্ছে করে যে লোকটা পতিতার কাছে যায় কিংবা মেয়েদেরকে পতিতা হতে বাধ্য করে সেই লোকটা বেশি খারাপ, নাকি মেয়েটা? একইভাবে জানতে ইচ্ছে করে এরশাদের মতো বেহায়া বেশি খারাপ নাকি তার মন পেতে, তাকে ভোটে কিংবা জোটে টানতে যারা চেষ্টা করে তারা বেশি খারাপ?
ফরিদুল ইসলাম নির্জন লিখেছেন,
বিশ্ব বেহায়া হিসেবে এর আগেই এরশাদ সাহেব বেশ আলোচনায় এসেছেন। তার নাম ডাক ছড়িয়ে পড়েছে অনেক যায়গায়। এবার তিনি কি নামে যে পরিচিত হইবেন কন দেহি সবাই!!!!
আখতারুজ্জামান আজাদ লিখেছেন,
হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের মন আর আখতারুজ্জামান আজাদের প্রোফাইল পিকচার -- দুটোই ঘোরতর আনপ্রেডিক্ট্যাবল। দিনের মধ্যে কোনটা কখন কয়বার বদলে যায়, তার ঠিক নেই!
প্রিতম রায় লিখেছেন,
মানুষ মরে গেলে পচে যায়....বেঁচে থাকলে এরশাদ হয়। আগে জানতাম নারীর মন বুঝা বড় দায়, আর আজ বুঝলাম এরশাদের মন ও নারীর মনের মত, বুঝা দায়।।
মিজানুর রহমান মিলন বলেছেন,
বাংলাদেশের রাজনীতি দুষ্টুচক্রের জালে বন্দী। হাসিনা-খালেদা দুষ্টুচক্রের শীর্ষ নেত্রী আর এরশাদ হলেন সহঅভিনেতা ।এরশাদ সহঅভিনেতা হলেও রাজনীতির পর্দায় মাঝে মাঝে ছাপিয়ে যান দুষ্টুচক্রের মূল নায়ক-নায়িকাদের।নির্বাচন কাছে আসলে জনগণসহ রাজনীতির সব নেতা-নেত্রী, কর্মীদের দৃষ্টি নিবদ্ধ থাকে দুষ্টুচক্রের সহঅভিনেতা এরশাদের দিকে। তখন এরশাদ হয়ে যান কারো কাছে খল-নায়ক আবার কারো কাছে মূল নায়ক! কেউ বলে থুথু বাবা আবার কেউ বলে দয়াল বাবা তবে এটা ঠিক এরশাদ তার বিভিন্ন সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করার কারণেই লাইমলাইটে আসেন। আমার মনে হয়-এরশাদ তার নিজ ও দলীয় স্বার্থেই তার দলকে অঘোষিতভাবে দুইভাগে ভাগ করেছেন।একগ্রুপকে তিনি আওয়ামীপন্থী বানিয়েছেন অপরগ্রুপকে তিনি বিএনপিপন্থী বানিয়েছেন ! গত ২০০৬/০৭ সালেও তিনি আওয়ামীপন্থী ছোট ভাই জিএম কাদেরকে বহিষ্কার করেছিলেন, পরে এরশাদ সেই আওয়ামীর সাথেই মহাজোট করেছিলেন আর এবার করলেন বিএনপিপন্থী কাজী জাফরকে! এরশাদকে নিয়ে রাজনীতির অঙ্গনে আলোচনা-সমালোচনার শেষ নেই অথচ তিনি এই আলোচনা-সমালোচনাগুলো স্বেচ্ছায় জন্ম দেন। এটা ঠিক এরশাদের মত একজন ব্যক্তি যিনি সরাসরি ক্যু করে ক্ষমতা নিয়ে গণতান্ত্রিকভাবে এখনো পর্যন্ত দুর্দান্ত প্রতাপে টিকে আছেন-তার এই আপাতদৃষ্টিতে অস্থির সিদ্ধান্তগুলোই মূল রহস্য বলে মনে করি।দেখুন, কাজী জাফর তার দলে ফিরে আসা সময়ের ব্যাপার মাত্র ! এগুলোই সব এরশাদের চাল আওয়ামীকে বোকা বানাতে ! এরশাদ যতি সত্যিই তার শেষ সিদ্ধান্তে অনড় থাকেন তাহলে আওয়ামীলীগ সাম্প্রতিক রাজনীতিতে এরচেয়ে কঠিন কোনো বিপদে পড়েছে বলে মনে হয় না !আওয়ামীলীগের সকল হিসাব নিকাশ রাতারাতি তাসের ঘরের মত উড়ে যাবে ! যাইহোক-এরশাদের ঘন ঘন সিদ্ধান্ত পরিবর্তন দেশের রাজনীতিতে নি:সন্দেহে নতুন মাত্রা ও নাটকীয়তার জন্ম দেয় ! দুষ্টুচক্রের রাজনীতিতে এরশাদই একমাত্র উপযুক্ত ব্যক্তি যিনি অত্যন্ত দক্ষতার সাথে দুই শীর্ষ নেত্রীর সাথে খেলতে পারেণ।তিনি পরোয়া করেণ না কে তাকে থুথু বাবা বলল আর কে দয়াল বাবা বলল ! নতুন মাত্রা ও নাটক জন্ম দেওয়া তার একটি নেশা ও খেলাও বলতে পারেণ-খেলারামের মত খেলে যা !
সিমু নাসের বলেছেন,
এরশাদ সাহেব হলেন অ্যাডবি ফ্লাশ প্লেয়ারের মতো। ডেইলি দুই তিনবার করে অটো আপডেট হন।
খালেদ মহিউদ্দিন বলেছেন,
থুতুতে চুমু না থাকলেও চুমুতে থুতু থাকে, আগে শতেকবার ভাবুন চুমু দেবেন কাকে?
মেহবুব আলম বর্ণ বলেছেন,
থুথুখোর স্বৈরাচারী এরশাদ এরপর দাবী করবে, বলেছিলাম 'নির্বাসনে' যাবো না, অথচ মিডিয়া ভুল করে প্রচার করেছে 'নির্বাচনে' যাবো না।
মাইনুল ইসলাম রাহাত বলেছেন,
জনাব এরশাদ সাহেবের রিসেন্ট পল্টি সংক্রান্ত একটি স্ট্যাটাস লেখার তাগিদ অনুভব করছি। কিন্তু টেনশন হল সেই স্ট্যাটাস লিখতে লিখতে এরশাদ সাহেব যদি আবার মত পাল্টে ফেলেন ?
উল্লেখ্য, তার এই ধরণের বক্তব্য এবারই প্রথম নয়। এর আগে তিনি সংবাদ সম্মেলন করে বলেছিলেন, আওয়ামী লীগের মতো ‘দুর্নীতিবাজ’ সরকারকে হটাতে নির্বাচনের বিকল্প নেই। তাই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে জাতীয় পার্টি। এমন কি মনোনয়নপত্র ও প্রার্থী বাছাই করেছিলেন তিনি। তারও আগে বলেছিলেন, বিএনপি নির্বাচনে না গেলে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। তাই জাতীয় পার্টিও নির্বাচনে যাবে না।