ছবি সংগৃহীত

ইতিহাসের সবচাইতে বিচিত্র ও বিখ্যাত যত মমি (পর্ব ১)

দেয়া
লেখক
প্রকাশিত: ১০ ডিসেম্বর ২০১৪, ১৬:৩০
আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০১৪, ১৬:৩০

(প্রিয়.কম)- বর্তমানে প্রত্নতত্বের দৃষ্টিতে অন্যতম মূল্যবান সম্পদ হিসেবে ধরা হয় মমিকৃত মানবদেহ। যুগে যুগে অনেক মমি উদ্ধার করা হয়েছে। ১৯শ শতাব্দীর পূর্বে যেসব মমি উদ্ধার করা হয় সেগুলো মোটেই ভালোভাবে সংরক্ষিত করা হয়নি। বরং এদের শরীরে পেঁচানো লিনেন খুলে ফেলা হতো, হাড় গুঁড়ো করে ওষুধ হিসেবে বিক্রি করা হতো এমনকি এসব লিনেন দিয়ে রং তৈরি করা হতো। এটাও বলা হয়ে থাকে যে সে সময়ে অ্যামেরিকান কাগজ প্রস্তুতকারী কোম্পানিগুলো মমি আমদানি করতো এবং তাদের লিনেন খুলে তা দিয়ে কাগজ তৈরি করতো। তবে সুখবর হলো এসব কাজ ক্রমে ক্রমে বন্ধ হয়ে যায় এবং বর্তমানে মমি সংরক্ষনে অনেক সতর্ক থাকা হয়। দেখুন ইতিহাসের সবচাইতে বিখ্যাত মমিগুলোকে এবং জানুন তাদের পেছনের রহস্য।

১) জিঞ্জার

এর চুলের রং লালচে হবার কারণে এর নাম দেওয়া হয় জিঞ্জার। ১৯শ শতাব্দীর শেষের দিকে মিশরীয় মরুভূমি থেকে খনন করা ছয়টি মমির মাঝে সবচাইতে বিখ্যাত হলো এটি। এই ছয়টি মমি ছিলো প্রাকৃতিকভাবে সংরক্ষিত অর্থাৎ মমিকরণের কৃত্রিম প্রক্রিয়া এদের ওপরে প্রয়োগ করা হয়নি। মরুভূমির উত্তপ্ত এবং শুষ্ক অবস্থায় প্রাকৃতিকভাবে মমিতে রূপান্তরিত হয় তারা। মোটামুটি খ্রিষ্টপূর্ব ৩৪০০ সালের এসব মমি হলো এযাবৎকালে পাওয়া সবচাইতে পুরনো মমি।

২) হাতশেপসুট

হাতশেপসুট ছিলেন এক প্রভাবশালী নারী ফারাও। দুই দশক ধরে মিশর শাসন করেন তিনি। ১৯০২ সালে তার সমাধিক্ষেত্র পাওয়া গেলেও তার সার্কোফ্যাগাস ছিলো শূন্য। পরে তার দাই মা এর মমির সাথে তাকে পাওয়া যায় অন্য একটি সমাধিতে।

৩) ফারাও তুতানখামুন

৯ বছর বয়সে মিশর শাসন শুরু করেন এই ফারাও। নিজের জীবনকালে তেমন একটা বিখ্যাত না হলেও তার মমি প্রত্নতাত্বিকদের কাছে খুবই বিখ্যাত। ১৯২২ সালে হাওয়ার্ড কার্টার তার সমাধি আবিষ্কার করেন। অনেকবার তার সমাধিতে লুটপাট চালানো হলেও তা ছিলো ধনরত্নে ভরপুর।

৪) ২য় রামাসেস

অনেক ইতিহাসবেত্তা তাকে মিশরের সবচাইতে শক্তিশালী ফারাও বলে আখ্যা দেন। তিনি ছয় দশক ধরে মিশর শাসন করেন। বলা হয় তিনি ৯০ বছর বেঁচে ছিলেন এবং এ সময়ে ১০০ সন্তানের পিতা হন। ১৮৮১ সালে তার মমি পাওয়া যায় নীলনদের তীরে দের-এল-বাহরি এলাকায়।

৫) লেডি দাই (জিন ঝুই)

১৯৭১ সালে চীনের চাংশা শহরের কাছে এয়ার রেইড শেল্টার খননের সময়ে কর্মীরা খুঁজে পায় হান ডাইনাস্টির সমসাময়িক এক সমাধি। হান সাম্রাজ্যের এক ধনী ব্যক্তির স্ত্রী জি ঝুই এর মমি ছিলো এতে। তিনি মারা যান সম্ভবত খ্রিষ্টপূর্ব ১৭৮-১৪৫ সালের দিকে, মোটামুটি ৫০ বছর বয়সে। তার মমি এতো ভালোভাবে সংরক্ষিত ছিলো যে একেবারে তাজা মরদেহের মতো তার ময়নাতদন্ত করা হয়। তার ত্বক ছিলো নমনীয়। বিভিন্ন অং প্রত্যঙ্গ অক্ষত, হাত-পা নাড়ানো যেত, মৃত্যুর আগে খাওয়া খাদ্য তার পাকস্থলীতে পাওয়া যায় এবং ধমনীতে পাওয়া যায় লাল এ পজিটিভ গ্রুপের রক্ত। তাকে ২২টি সিল্ক এবং শনের কাপড় পরানো ছিলো এবং ৯টি সিল্ক ফিতে দিয়ে বাঁধা ছিলো। তার কফিন কাপরে ভরা ছিলো যাতে বাইরে থেকে বাতাস ঢুকতে না পারে। গবেষকেরা ধারণা করেন এ কারণেই এতো চমৎকারভাবে সংরক্ষিত ছিলো তার মমি। অনেকে আবার মনে করেন তার কফিনে পাওয়া রহস্যময় এক ধরণের লাল তরলের কারণে মমিটি ভালো ছিলো। (মূল: History.com, listverse.com)