
ছবি সংগৃহীত
অনুসন্ধান মূলক আয়োজন তালাশ-এর ২ বছর
আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০১৩, ১১:২১
নতুন চ্যানেল ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের পর্দায় স্বপ্নবিলাসী মানুষ গুলোর চোখ। অনুসন্ধানমূলক আয়োজন ‘তালাশ’। এমন কিছু বিষয়, যা সকলের চোখ এড়িয়ে অপরাধ চক্রকে করছে গতিশীল। ৯ ডিসেম্বর ২০১১। ঠিক দু বছর আগে। রাত ৯টা ৩০। উপস্থাপক মঞ্জুরুল করিমের কণ্ঠে-“তালাশ, অভিধান বলছে এর অর্থ অনুসন্ধান। এই অনুসন্ধান মূলক অনুষ্ঠানে আমাদের উদ্দেশও তা ই”। নতুন আশার আলো দেখতে শুরু করলো মাকড়সার কালো জালে মোড়ানো বাঙালী। বিজয়ের মাসে সূচনা করা এই তালাশ প্রথম পর্বেই মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস। কিভাবে পালাক্রমে বেড়ে দাঁড়াচ্ছে মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা। ধারাবাহিক আয়োজন তালাশের। ভেজাল, মাদক, পুলিশি হেফাজাতে অনিয়ম, গরু চোরাচালান, ভালোবাসা, লাশ (কঙ্কাল) চুরি ইত্যাদি আয়োজন চোখে পরে সমাজের মানুষের। আলোচনার শীর্ষে আসে তালাশ। খুব অল্প সময়ে তালাশ টিম জায়গা করে নেয় মানুষের হৃদয়ে। চিন্তার গভীর থেকে তুলে আনে না জানা অনেক তথ্য। তালাশ টিমের অনুসন্ধানে অপূর্ব আলাউদ্দিন, সাথে কমল, পারভেজ, সবুজ আর সনি। কতটা ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন তারা তা কারোই বুঝার বাকি নেই। ২২ মিনিটের এই আয়োজন দর্শকদের মাঝে পৌঁছে দিতে তালাশ টিম সময় নেয় ১৪ দিন। আর এই ২২ মিনিটেই তুলে ধরার চেষ্টা করে ঘটে যাওয়া সব বিষয়। অনুসন্ধান করতে গিয়ে অনেক অপদস্ত হতে হয়েছিলো তালাশ টিমকে। মানহানির মামলা হয়েছে এর সদস্যদের বিরুদ্ধে। কিন্তু না। বসে থাকেনি তালাশ টিম। অনুসন্ধানমূলক অনুষ্ঠানে আগ্রহের ব্যাপারে মুনজুরুল বলেন, “একটা বিষয় সাধারণভাবে এক দৃষ্টিতে দেখার পর ভাবনা আসে- এর ভেতরে আরো কিছু থাকতে পারে কি না। এই আকাঙ্ক্ষাই কোনো সাংবাদিককে অনুসন্ধানে আগ্রহী করে তোলে। আমার ক্ষেত্রেও তা-ই হয়েছে।” মুনজুরুল বললেন, “জনপ্রিয় হওয়ার আকাঙ্ক্ষা আমাদের নেই। কারণ, জনপ্রিয়তার কিছু ফর্মুলা থাকে। ওই উদ্দেশ্য না থাকায় আমরা কোনো ফর্মুলায় যাইনি। নিজেদের মান উন্নয়নের চেষ্টা করে গেছি। আর এ কারণেই দর্শকদের হয়তো সেটা ভালো লাগছে। আসলে মানের দিকেই খেয়াল রাখা হয়েছে সবসময়।” সমাজের অগোচরে ঘটে যাওয়া বিষয় গুলি তুলে ধরতে চায় তালাশ। মুনজুরুল বলেন, “আমরা প্রতিকার করতে আসিনি। এটা তো আমাদের কাজ নয়। এটা প্রশাসনের কাজ। আমরা জনগণের সচেতনতা বাড়াতে কাজ করি।” নতুন ধারার উপস্থাপন তালাশকে নিয়ে গেছে নতুন মাত্রায়। তার সাথে তো বাচনভঙ্গি, গ্রাফিক্স, সাউন্ড কোয়ালিটি থাকছেই। ইনডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের হেড অব নিউজ খালেদ মুহিউদ্দীন জানান, ৫০তম পর্বের পর চার মাসের বিরতি। শুধু ভালো মানের অনুসন্ধানমূলক অনুষ্ঠান তৈরিই নয়, মানটাও ধরে রাখার বিষয়- এমনটা বিবেচনা করেই এ সিদ্ধান্ত। তবে এ সময়টাতে নতুন নতুন বিষয় নিয়ে অনুসন্ধান করবে ‘তালাশ টিম’। এ ব্যাপারে মুনজুরুল জানান, টিমের লোকজন দুই বছর টানা কাজ করে গেছে, কোনো বিশ্রাম ছিল না। একটা মানুষের ক্রিয়েটিভিটির জন্য হলেও বিশ্রাম দরকার। এ সময়টিতে প্রচুর ইনভেসটিগেশন হবে, নতুনত্ব আনার জন্যও কাজ করা হবে। ইন্টারন্যাশনালি যেকোনো ইনটেনসিভ প্রোগ্রামের নিয়মই এরকম। অনুষ্ঠানের মান বজায় রাখা জন্য তারাও বিরতিতে যায়। “আমরা চাই না তালাশের মান কমে যাক, মান বাড়ানোর ক্ষেত্রে দিনে দিনে এ প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে”- এমনটাই বললেন মুনজুরুল করিম। এই মুহূর্তে চার মাসের বিরতিতে তালাশ। নতুন কিছু অপেক্ষা করছে আমাদের জন্য। ৪ মাস পর তালাশে দেখা যাবেনা অপূর্বকে। তার জায়গায় নতুন করে যোগ হচ্ছে দেশের অন্যতম অনুসন্ধানী সাংবাদিক পারভেজ খান। অনুষ্ঠানটির উপস্থাপক মুনজুরুল করিম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আবার ফিরে আশার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তালাশ এখন বিরতিতে।