ছবি সংগৃহীত

ইসলামের দৃষ্টিতে অক্ষম স্বামী-স্ত্রীর দাম্পত্য বিধান

মিরাজ রহমান
সাংবাদিক ও লেখক
প্রকাশিত: ২৬ নভেম্বর ২০১৫, ০৪:১৪
আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০১৫, ০৪:১৪

দেখতে সুঠাম সুপুরুষ কিন্তু স্ত্রীসহবাসে অক্ষম, স্ত্রীকে যৌন তৃপ্তি দিতে অপারগ, এমনটা বিচিত্র নয়। স্বামী যদি স্ত্রীকে জৈবিক প্রশান্তি দিতে অক্ষম প্রমাণিত হয়, স্ত্রী চায় স্বামীকে ছেড়ে দিতে, স্বামী তাতে সম্মত নয়, এমতাবস্থায় ইসলাম কাজিকে বিশেষ ক্ষমতা প্রদান করেছে। স্ত্রী কাজির দরবারে অভিযোগ করে বিচারপ্রার্থিণী হবে। কাজি স্বামীর সার্বিক অবস্থা যাচাই বাছাই করবে। বাসত্মবেই যদি স্বামী অক্ষম বলে প্রমাণিত হয় তাহলে চিকিৎসার জন্য এক বছরের সুযোগ দিবে। এরই মাঝে সুস্থ হলে তো ভালো, অন্যথায় কাজি বিশেষ ক্ষমতাবলে উভয়কে বিচ্ছিন্ন করে দিবে। হযরত সাঈদ বিন মুসায়্যিব বলেন, যে কোনো মহিলাকে বিয়ে করল কিন্তু সহবাসে অক্ষম প্রমাণিত হলো তাকে একবছরের জন্য সুযোগ দেয়া হবে। এর মাঝে সুস্থ হলে তো ভালো, অন্যথায় উভয়কে বিচ্ছিন্ন করে দিবে। [মুয়াত্তা মালেক] ইমাম মালেক ইবনে শিহাব জুহরীকে জিজ্ঞেস করেন, নপুংসক স্বামীকে চিকিৎসার জন্য যে একবছরের সুযোগ দেয়া হবে, তা কখন থেকে? বিয়ের দিন থেকে না, অভিযোগ উত্থাপনের দিন থেকে? ইবনে শিহাব বলেন, অভিযোগ উত্থাপনের দিন থেকে। এভাবেই স্ত্রী অক্ষম স্বামীর কবল থেকে মুক্তি পেতে পারে। পরে অন্য কোথাও বিয়ে বসবে। [মুয়াত্তা মালেক] কর্তিত লিঙ্গের পুরুষ : কোনো মহিলার স্বামী যদি ‘মাজবুবু’ তথা কর্তিত লিঙ্গের পুরুষ হয়, যে স্ত্রীর সাথে যৌন মিলনে অক্ষম কাজির ফয়সালা মোতাবেক সে স্বামী থেকে বিচ্ছিন্ন হতে পারে। তার জন্য আরো সুবিধা হলো তাকে একবছর অপেক্ষা করতে হবে না। বরং কাজির দরবারে অভিযোগ উত্থাপন করতেই কাজি স্বামীকে ডেকে অবস্থা যাচাই করবে এবং অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হলে স্ত্রীকে তৎক্ষণাৎ পৃথক করে দিবে। ইমাম কুদুরী লেখেন, কোনো নারীর স্বামী যদি নপুংসক হয় তবে কাজি তাকে চিকিৎসার জন্য একবছর সময় দিবে। এরই মাঝে স্বামী যদি সুস্থ হয় তাহলে তো ভালো অন্যথায় মহিলা চাইলে উভয়ের মাঝে বিচ্ছেদ করে দিবে। আর স্বামী যদি লিঙ্গকাটা হয় তাহলে কাজি সময় না দিয়ে তৎক্ষণাৎ পৃথক করে দিবে। [কুদুরি] অন্ডকোষ কর্তিত স্বামীর হুকুম : খাসি তথা অন্ডকোষ কর্তিত স্বামীর হুকুম নপুংসক স্বামীর মতই। স্বামী যদি নিজেকে খাসি বানিয়ে নেয় ফলে সে যৌনশক্তি রহিত হয়ে যায়, স্ত্রী সহবাসে অক্ষম বলে প্রমাণিত হয়, স্ত্রী কাজির কাছে অভিযোগ করবে। কাজি তৎক্ষণাৎ স্বামীর অবস্থা যাচাই করে চিকিৎসার জন্য একবছরের সুযোগ দিবে। এরপরও যদি সুস্থ না হলে কাজি উভয়কে আলাদা করে দিবে। [কুদুরি] বিস্তারিত ব্যাখ্যা করা এখানে উদ্দেশ্য নয়, বরং উদ্দেশ্য একথা বোঝানো যে—ইসলামে এমন কোনো সুযোগ নেই স্ত্রী যৌন তাড়িত হয়ে অপকর্মে লিপ্ত হবে বা তার ইজ্জত আব্রম্ন হবে হুমকির সম্মুখীন। মূল- মাওলানা জফিরুদ্দিন অনুবাদ- মাওলানা মিরাজ রহমান