কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

ইতোমধ্যে বিশ্বের সবচেয়ে নিপীড়িত জনগোষ্ঠীর পরিচিতি পেয়েছে রোহিঙ্গারা। প্রাণ বাঁচাতে বিরামহীন ছুটছে বাংলাদেশ সীমান্তের দিকে। ছবি: ফোকাস বাংলা

রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর পরিকল্পনা কতটা সফল হবে?

আবু আজাদ
সহ-সম্পাদক
প্রকাশিত: ২৫ অক্টোবর ২০১৭, ১২:৩৬
আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০১৭, ১২:৩৬

(প্রিয়.কম) মিয়ানমারের রাখাইনে সেনা নির্যাতনে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের নিয়ে পড়া চরম সংকটের মধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বর্তমানে দেশটি সফর করছেন। গত ২৪ অক্টোবর মঙ্গলবার নেপিডোতে মিয়ানমারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লে. কর্নেল চ সুয়ি এবং পুলিশ প্রধানের সাথে বৈঠকের পর আসাদুজ্জামান খান টেলিফোনে বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবসনের লক্ষ্যে দুই দেশের সমান সংখ্যক প্রতিনিধি নিয়ে খুব শীঘ্রই একটি যৌথ ওয়ার্কিং কমিটি গঠন করা হবে।

নভেম্বরের ৩০ তারিখের মধ্যে এই যৌথ কমিটি গঠনের প্রস্তাব করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। কিন্তু রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর এই পরিকল্পনা কতটা সফল হতে পারে?

এ বিষয়ে শরণার্থী বিষযয়ে বিশেষজ্ঞ আসিফ মুনির বলেন ‘যেটুকু শোনা যাচ্ছে তাতে শঙ্কা বা প্রশ্নগুলো বেশি আসছে। এই যে কমিটি করার কথা বলা হচ্ছে এটাতে কোনো ফল দেবে কিনা, এখানে কারা সদস্য হবে,তাদের উদ্দেশ্য কি হবে অনেক ধরনের প্রশ্ন চলে আসে। তবে এটা ঠিক আলাপ চালিয়ে যেতে হবে। তবে এখান থেকে ফলপ্রসূ কিছু হবে কিনা সেটাতে যথেষ্ট সন্দেহ আছে।’

মিয়ানমারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠক। ছবি: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের ফেসবুক থেকে নেওয়া

মিয়ানমারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠক। ছবি: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের ফেসবুক থেকে নেওয়া

তিনি বলেন, ‘মিয়ানমার সুর কিছুটা নরম করেছে কিন্তু তাদের চরিত্র আমরা যা দেখেছি অতীতে বা সাম্প্রতিককালে তাতে পুরো বিশ্বাস স্থাপন করাটা ঠিক হবে না।’

আসিফ মুনির আরো বলেন, ‘এখানে যদি একটা যৌথ কমিটি হয় তাহলে কারা কোনো মানদণ্ডে সদস্য হবেন সেটা একটা প্রশ্ন। মিয়ানমারের দিকে যদি সেনাবাহিনীর সদস্যরা থাকেন তাদের উপর কতটা আস্থা রাখা যাবে! আমাদের এখান থেকে রাজনৈতিক প্রতিনিধিরা থাকবেন ওদিক থেকে হয়ত সেটা থাকবে না। আবার ফেরত নেয়ার ক্ষেত্রে কাদের ফিরিয়ে নেবে, সেখানে কোথায় রাখবে সেটাতো অনেক দুরের ব্যাপার। এখন হঠাৎ করেই তাদের নমনীয় সুর সন্দেহ জাগে যে ভিতরে তারা কি করছে। এটা কোনো সাজানো নাটক কিনা এটাও মনে হতে পারে।’

প্রাণ বাঁচাতে স্রোতের মতো বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছেন ছয় লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা। ছবি: ফোকাস বাংলা

প্রাণ বাঁচাতে স্রোতের মতো বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছেন ছয় লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা। ছবি: ফোকাস বাংলা

প্রসঙ্গত, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে গত ২৫ আগস্ট রোহিঙ্গা নিধন অভিযান শুরু হবার পর প্রাণ বাঁচাতে ছয় লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা সমুদ্র ও দুর্গম পাহাড়ি পথ পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছে। যদিও বেসরকারি হিসেবে এ সংখ্যা অনেক আগেই সাত লাখ ছাড়িয়ে গেছে। আন্তর্জাতিক সমালোচনা ও চাপের মুখে গত ২ অক্টোবর মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সুচির মন্ত্রী কিউ টিন্ট সোয়ে যখন ঢাকায় আসেন এবং রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে আশ্বাস দেন। তারই পেক্ষাপটে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁনের মিয়ানমারে সফরের বিষয়টি আলোচনায় আসে। 

মিয়ানমার সফররত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, বুধবার তার সাথে অং সান সূ চির বৈঠক হবে। বৈঠকে বাংলাদেশের এসব দাবি, প্রস্তাব এবং বক্তব্য তখন তিনি আবারো তুলবেন।

প্রিয় সংবাদ/আশরাফ