কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে এসেছে ৫ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা যাদের ৬০ ভাগই নারী ও শিশু। ফাইল ছবি

রোহিঙ্গা শিশুদের ২ লাখ ৮০ হাজার ডোজ প্রতিষেধক টিকা দেয়া হয়েছে

সজিব ঘোষ
সহ-সম্পাদক, নিউজ এন্ড কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স
প্রকাশিত: ০৫ অক্টোবর ২০১৭, ১৮:১৪
আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০১৭, ১৮:১৪

(বাসস) বাংলাদেশে পালিয়ে আসা ‘বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের রোহিঙ্গা’ শিশুদের এ পর্যন্ত দুই লাখ ৭৯ হাজার ৯১৭ ডোজ টিকা দেয়া হয়েছে। উখিয়া সদর হাসপাতালের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ও প্রতিষেধক টিকা কার্যক্রমের সমন্বয়কারী ডা. মিসবাহ উদ্দিন আহমেদ এ তথ্য জানিয়েছেন।

বাংলাদেশের পক্ষ থেকে রোহিঙ্গাদের মানবিক স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রমের অংশ হিসেবে সংক্রামক রোগ প্রতিরোধক এসব টিকা দেয়া হয়। এরমধ্যে হাম-রুবেলার এক লাখ ৩৫ হাজার ৫১৯ ডোজ, ওরাল পোলিও ১২ হাজার ৩৩৪ ডোজ ও ভিটামিন-এ ১২ হাজার ৬৪ ডোজ।

কক্সবাজারের উখিয়া, টেকনাফ ও বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়িতে নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত ক্যাম্পে থাকা রোহিঙ্গা শিশুদের এই টিকা দেয়া হয়।

মিসবাহ উদ্দিন বলেন, ‘বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গারা সাথে নিয়ে আসছে মারাত্মক সব সংক্রামক রোগ। হাম-রুবেলা, পোলিও ও যক্ষ্মা এই তিনটি রোগের ঝুঁকি রোহিঙ্গাদের মধ্যে বেশি দেখা যাচ্ছে। এজন্য রোহিঙ্গা শিশুরা সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গেই তাদের পোলিও টিকা এবং ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়েছে। এ পর্যন্ত প্রায় দুই লাখ ৮০ হাজার ডোজ প্রতিষেধক টিকা রোহিঙ্গা শিশুদের দেয়া হয়েছে।’

এ প্রসঙ্গে কক্সবাজারের সিভিল সার্জন ডা. শেখ অবদুস সালাম বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে যেসব ঝুঁকিপূর্ণ রোগগুলোকে আমরা ইতোমধ্যে বিদায় দিতে সক্ষম হয়েছি তার অনেকগুলোই আবার ফিরে আসছে মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গাদের মাধ্যমে। এটি বড় শঙ্কার বিষয়। তাই বলে ঝুঁকিপূর্ণ রোগগুলো এখনো নিয়ন্ত্রণের বাইরে যায়নি। তবে রোহিঙ্গাদের মধ্যে এগুলো ছড়িয়ে পড়ার আশংকা আছে। তাই রোহিঙ্গা শিশুরা বাংলাদেশে আসার সাথে সাথে হাম-রুবেলা ও পোলিও টিকা দেয়া হয়েছে।’

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, একজনও হাম-রুবেলায় আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেলে আশপাশের এক কিলোমিটারের মধ্যে সব শিশুকে হাম-রুবেলার টিকা দিতে হয়। এ অবস্থায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আশপাশের সকল শিশুই ঝুঁকির মধ্যে পড়ে। এদিকে এ পর্যন্ত টেকনাফে ছয় জন হাম-রুবেলা আক্রান্ত রোহিঙ্গা শিশু শনাক্ত হয়েছে। হেপাটাইটিস-বি ও সি আক্রান্ত রোগী সনাক্ত হয়েছে ১০ জন এদের মধ্যে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে।

ছয়জন এইডস রোগী শনাক্ত হয়েছে রোহিঙ্গাদের মধ্যে। তারা চিকিৎসাধীন রয়েছেন জানিয়ে উখিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধান কর্মকর্তা ডা. মিসবাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘এসব ছাড়াও অতি ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে প্রচুর রোহিঙ্গা বর্তমানে কক্সবাজারের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাই আগামীতে আমরা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কলেরা প্রতিরোধক ভ্যাকসিন দেয়ার পরিকল্পনা করছি।’

রোহিঙ্গাদের মধ্যে কোনো সংক্রামক রোগ রয়েছে কিনা, তা যাচাইয়ে নমুনা সংগ্রহের জন্য সংক্রামক ব্যাধি, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণাকেন্দ্র (আইইডিসিআর)-এর একটি বিশেষ মেডিকেল টিম কাজ করছে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে। গত ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে ১৫ বছরের কম বয়সী শিশুদের মধ্যে হাম এবং পোলিওর টিকা প্রদান এবং ভিটামিন-এ ক্যাপসুল খাওয়ানোর কার্যক্রম শুরু হয়।

প্রিয় সংবাদ/সজিব