কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

মিয়ানমারের পর্যটন খাতের প্রচারণায় বিখ্যাত মন্দিরগুলোর সামনে দাঁড়িয়ে ছবির জন্য পোজ দেন বেয়ন্স ও জ্যা জেড। ছবি: সংগৃহীত

রোহিঙ্গা গণহত্যা: মিয়ানমারের পর্যটন শিল্পে ধস

আবু আজাদ
সহ-সম্পাদক
প্রকাশিত: ২৯ অক্টোবর ২০১৭, ২০:০৭
আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০১৭, ২০:০৭

(প্রিয়.কম) মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেনা অভিযানের নামে রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো সহিংসতায় একের পর এক দেশটি সফর বাতিল করছেন পর্যটকেরা। এতে কার্যত মিয়ানমারের পর্যটন ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। ফলে সম্ভাবনাময় এ শিল্পে বিশাল ধস নামবে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

গত ২৫ আগস্ট থেকে সেনা অভিযান শুরু পর হাজার হাজার পর্যটকের মিয়ানমার সফর বাতিলের আবেদন পেয়েছেন দেশটির পর্যটন কর্মকর্তারা। আশঙ্কা করা হচ্ছে, ২০১১ সালে দেশটিতে গণতন্ত্রের যাত্রা শুরু হবার পর যে পর্যটকের ঢল নেমেছিল, তাতে একেবারে ধস নামবে। ফলে রাজস্ব আয়ের অন্যতম বৃহৎ খাত পর্যটন শিল্প ধসে পড়বে।

সেনাদের দেওয়া আগুনে পুড়ছে রোহিঙ্গাদের ভিটে-মাটি। ছবি: ফোকাস বাংলা

সেনাদের দেওয়া আগুনে পুড়ছে রোহিঙ্গাদের ভিটে-মাটি। ছবি: ফোকাস বাংলা

মিয়ানমারের পর্যটন সংস্থা ‘নিউ ফ্যান্টাস্টিক এশিয়া ট্রাভেলস ও ট্যুরে’র কর্মকর্তা তুন তুন নাইং বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, রাখাইনের সহিংস পরিস্থিতির কারণে অক্টোবর এবং নভেম্বর মাসে সব সফর বাতিল করেছে বিদেশি পর্যটকেরা।

তিনি আরও বলেন, মিয়ানমারে আসা পর্যটকদের অধিকাংশই জাপান, অস্ট্রেলিয়া এবং এশিয়ার অন্যান্য দেশের। কিন্তু নিরাপত্তা উদ্বেগের কথা জানিয়ে তারা সফর বাতিল করছেন। তবে ইউরোপের কিছু দেশের নাগরিক সরাসরি জানিয়ে দিয়েছেন যে, মানবিক পরিস্থিতির কারণে তারা মিয়ানমার সফর বয়কট করছেন।

প্রাণ বাঁচাতে সমুদ্র পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে আসছে রোহিঙ্গারা। পেছনে জন্মভূমি মিয়ানমার। ছবি: ফোকাস বাংলা

প্রাণ বাঁচাতে সমুদ্র পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে আসছে রোহিঙ্গারা। পেছনে জন্মভূমি মিয়ানমার। ছবি: ফোকাস বাংলা

ক্রিস্চিন (আসল নাম নয়) নামে এক পর্যটক বলেন, ‘দেশটিতে যা হচ্ছে, তা দেখে খুব খারাপ লাগছে। আমাদের গাইডরা আমাদের জানিয়েছেন, মুসলিমরা বিপজ্জনক এবং তারা বার্মিজ নয়।’

১৯৯০ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্র-ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞা ও সামরিক জান্তার মানবতা বিরোধী কর্মকাণ্ডে বিশ্বব্যাপী মিয়ানমারের ভাবমূর্তি ভয়াবহভাবে নষ্ট হয়। ফলে এ দীর্ঘ সময়ে দেশটিতে বিদেশি পর্যটক সমাগম তেমন একটা হয়নি।মানবিক কারণে রোহিঙ্গাদের জন্য সীমান্ত খুলে দেয় বাংলাদেশ। ছবি: ফোকাস বাংলামানবিক কারণে রোহিঙ্গাদের জন্য সীমান্ত খুলে দেয় বাংলাদেশ। ছবি: ফোকাস বাংলা

কিন্তু ২০১১ সালে গণতন্ত্রের যাত্রা শুরু হলে ওই বছরই ৮ লাখ বিদেশি পর্যটক দেশটি সফর করেন। মিয়ানমারের সাবেক রাজধানী ইয়াঙ্গুনই মূলত প্রধান ব্যস্ততম পর্যটন নগরী। নগরীটি পুরানো নান্দনিক ঔপনিবেশিক স্থাপত্যের জন্য বিশেষভাবে পরিচিত। শুধু ইয়াঙ্গুনের সোনালি রঙের শোয়েদাগন মন্দির দেখতেই প্রতিবছর লাখো পর্যটক ভিড় জমান। কিন্তু রাখাইনের চলমান সংকটজনক পরিস্থিতির কারণে পর্যটকেরা মিয়ানমার সফর বাতিল করছেন।

বালুখালীতে নতুন করে গড়ে ওঠা রোহিঙ্গা ক্যাম্প। ছবি: ফোকাস বাংলাবালুখালীতে নতুন করে গড়ে উঠা রোহিঙ্গা ক্যাম্প। ছবি: ফোকাস বাংলা

এদিকে শরৎকালীন ছুটিতে এশিয়া সফরে আসার কথা ছিল ব্রিটিশ প্রিন্স চার্লস এবং তার স্ত্রী ক্যামেলিয়ার। কিন্তু মিয়ানমারের চলমান পরিস্থিতির কারণে তাদের সফরও বাতিল করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

প্রিয় সংবাদ/শান্ত