কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

মাত্র দশ মিনিট মেডিটেশন আপনার জীবন বদলে দেবে, ছবি: রিপন, প্রিয়.কম

জীবন বদলে দেবে প্রত্যহ মাত্র দশ মিনিটের এই কাজ

বুশরা আমিন তুবা
ফিচার লেখক, প্রিয়.কম
প্রকাশিত: ২২ অক্টোবর ২০১৭, ০৯:১৩
আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০১৭, ০৯:১৩

(প্রিয়.কম) আমাদের নিত্যদিনের জীবন ব্যস্ততা ও ধকলে পরিপূর্ণ। কর্মক্ষেত্রের দায়িত্ব শেষে বাড়ি ফিরে নিজেকে কোনভাবেই সময় দিতে ইচ্ছে করে না। সুনিয়ন্ত্রিত ও সুশৃঙ্খল জীবন যাপন তো দূরের কথা, নিজেকে আমরা একটু সময় দিতেও কুণ্ঠাবোধ করি। কিন্তু এতে করে দিনের পর দিন আমরা কর্মোদ্যম ও অনুপ্রাণিত হবার বদলে নির্জীব ও নিষ্প্রাণ হয়ে যাচ্ছি। এমন দলে কী আপনিও আছেন?

তবে আজকের ফিচার আপনার জন্যেই। খুব বেশি সময় আমাদের কারোরই নেই। কিন্তু নিজের সুস্থতা ও সতেজতা সবার আগে তাই না? এজন্যে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় ব্যয় করতে হবে না আপনাকে। প্রত্যহ মাত্র দশ মিনিট সময় ব্যয় করুন মেডিটেশনের পেছনে। এতে করে, আপনি ধীরে ধীরে একজন সুখী ও পরিপূর্ণ মানুষে পরিণত হবেন। কিন্তু কেন করবেন মেডিটেশন বা ধ্যান? চলুন সময় নষ্ট না করে জেনে আসি।

মেডিটেশন মানসিক ও শারীরিক ধকল কমায়

যাবতীয় জাগতিক সমস্যার অধিকাংশের উৎপত্তি ঘটে স্ট্রেস কিংবা ধকল হতে। আপনার স্ট্রেসের কারণ যেটিই হোক না কেন, মেডিটেশন এটি কমাতে সাহায্য করে। ২০১৭ সালের জানুয়ারি মাসে যুক্তরাষ্ট্রের জর্জটাউন ইউনিভার্সিটির একটি গবেষণা মতে, মেডিটেশনের ফলে আপনার মস্তিষ্ক থেকে এন্ডরফিন নিঃসৃত হয় যেটি ধকল, রাগ এবং মনঃক্ষুণ্ণতা কমাতে সাহায্য করে। গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছিলো সাইকিয়াট্রিক ইন্সটিটিউটের একটি জার্নালে এবং ৮৯ জন দুশ্চিন্তাগ্রস্ত রোগীকে নিয়ে। ফলাফলস্বরুপ জানা গিয়েছে যে, স্বতস্ফূর্তভাবে মেডিটেশনের অনুশীলনের মাধ্যমে আপনি বর্তমান মুহূর্তে অবস্থান করা শেখেন, ধকল কমাতে সমর্থ হন এবং শারীরিক প্রদাহ কমাতে পারেন।

রক্তচাপ কমায়

মেডিটেশনকে মনকে স্বস্তি দেয় এবং আপনাকে আরামদায়ক পরিস্থিতি দান করে। এতে করে শরীরে নাইট্রিক অক্সাইড বৃদ্ধি পায়। নাইট্রিক অক্সাইড রক্তের গতিকে নিয়ন্ত্রণ করে ধমনীতে ছড়িয়ে পড়ে এবং এতে করে আর্টারি যেন জমাটবদ্ধ না হয়ে যায় সেজন্যে আরও রক্ত ​​প্রবেশ করতে পারে। ২০১৭ সালের জুন মাসে কেস ওয়েস্টার্ন রিজার্ভ ইউনিভার্সিটির স্কুল অব মেডিসিনের একদল গবেষক ৩০-৬০ বছর বয়সী একশজন রোগীর ওপর গবেষণা চালান যারা কিনা অতিরিক্ত চিন্তার জন্যে কোন ধরনের ঔষধ গ্রহণ করছিলেন না। অংশগ্রহণকারীগণ সপ্তাহে ছয়দিন ৪৫ মিনিট মেডিটেশন করতেন। গবেষকগণ তাদের রক্তচাপে বেশ উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন লক্ষ্য করেছিলেন। 

প্যানিক ডিজঅর্ডারের লক্ষণ কমায়

আমেরিকান জার্নাল অব সাইকিয়াট্রিতে প্রকাশিত একটি গবেষণা মতে, ২২ জন রোগী দুশ্চিন্তা ও প্যানিক ডিজঅর্ডারে আক্রান্ত ছিলেন এবং তাদের  তিন মাস মেডিটেশনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। বিজ্ঞানীরা খেয়াল করে দেখলেন যে ধ্যানের জন্যে বিশজন রোগীর দুশ্চিন্তা ও ভয় অনেকাংশে কমে গিয়েছে। সুতরাং, আপনি যদি প্যানিক অ্যাটাকের দরুণ ভীত হয়ে থাকেন, আজ থেকেই মেডিটেশনের চর্চা শুরু করুন। 

মেডিটেশন আপনাকে সুখী করে তোলে

মেডিটেশন মস্তিষ্কের বা পাশের কর্টেক্স এর সংকেত প্রদানের মাত্রা বাড়িয়ে দেয় যার দরুণ ইতিবাচক মানসিকতা বৃদ্ধি পায়। একই সময়ে ডান পাশের অর্থাৎ যে পাশ নেতিবাচক মানসিকতার জন্য দায়ী তার মাত্রা কমে যায়। আপনি যদি হাসিখুশি থাকেন তবে মেডিটেশন ডিহাইড্রোপিয়ান্ড্রোস্টেরন নামক পদার্থের সৃষ্টি করে। এতে করে মানসিক স্বাস্থ্য ও সুস্থতা অর্জিত হয়। 

মনোযোগ বৃদ্ধি করে

ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার একটি জরিপ মতে, মেডিটেশন করা অবস্থায় এবং তার পরবর্তী সময়ে অংশগ্রহণকারীরা অধিক মনোযোগী। বিশেষ করে বিরক্তিকর কাজ করবার সময়েও তাদের মনোযোগ অটুট থাকে। মাত্র বিশ মিনিট এর অনুশীলন করলেও আপনার যেকোন কাজ করার দক্ষতা বৃদ্ধি পায়। 

সুতরাং, আজই ভেবে দেখুন অল্প একটু সময় মেডিটেশন অনুশীলন করলে আপনি কতোভাবে উপকৃত হচ্ছেন। লাখ লাখ টাকা কঠিন চিকিৎসার পেছনে ব্যয়ের পরিবর্তে করেই দেখুন মেডিটেশন। আপনি কোনভাবেই ঠকবেন না কিংবা আপনার সময় নষ্ট হবে না। 

সূত্র: Femina

সম্পাদনা: কে এন দেয়া