কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

ব্রিটেনের জনপ্রিয় শিশুপাঠ্য থেকে বাদ পড়ছেন সু চি। সংগৃহীত ছবিতে প্রিয় গ্রাফিক্স

বাবা-মায়েরা চান না, শিশুপাঠ্য থেকে বাদ পড়ছেন সু চি

জাহিদুল ইসলাম জন
জ্যেষ্ঠ সহ-সম্পাদক, নিউজ এন্ড কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স
প্রকাশিত: ২৪ ডিসেম্বর ২০১৭, ১৪:০৭
আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০১৭, ১৪:০৭

(প্রিয়.কম) রোহিঙ্গা নিপীড়নের দায়ে সমালোচনার মুখে থাকা মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি চলতি বছরে ব্রিটেনে শিশুদের সবচেয়ে জনপ্রিয় বই ‘গুড নাইট স্টোরিস ফর রেবেল গার্লস’ থেকে বাদ পড়ছেন। গত সপ্তাহে বইটি ভারতীয় লেখক অরুন্ধতি রায়ের সর্বশেষ বইটিকে পেছনে ফেলে বছরের সেরা বই হিসেবে নির্বাচিত হয়।

বইটিতে আকাশচারী এমেলিয়া আর্থার থেকে মেরি কুরির মতো বিজ্ঞানীর জীবনির সঙ্গে ছিলো নোবেল জয়ী মিয়ানমারের নেত্রীর জীবনী। অভিভাবকদের আপত্তির মুখে পরবর্তী সংস্করণ থেকে বাদ পড়বেন তিনি।

সাড়া জাগানো শত নারীর জীবনি নিয়ে এলেনা ফ্যাভিল্লি ও ফ্রান্সেকা ক্যাভেল্লার যৌথভাবে লেখা বইটিতে একজন নারীর জন্য বরাদ্দ ছিলো দুই পৃষ্ঠা।

ছয় বছরের বেশি বয়সী শিশুদের জন্য লেখা বইটিতে অং সান সু চির নিজ দেশের জান্তা সরকারের সময়ে ২১ বছরের গৃহবন্দীত্বকে বর্ণনা করতে গিয়ে বলা হয়েছে, ‘নোবেল জিতেছেন তিনি। আর নিজের ঘর না ছেড়ে মাতৃভূমি আর সারা বিশ্বের লক্ষ লক্ষ মানুষের অনুপ্রেরণার কারণ হয়েছেন।’  

রোহিঙ্গা নিপীড়নের দায়ে সমালোচনার মুখে থাকায় বইটির ফেসবুক পাতায় সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি। লেনকা উজুকোভা নামে এক অভিভাবক লেখেন, ‘বইটার ৯৯ শতাংশই উৎসাহব্যঞ্জক। তবে খুবই বিরক্তিকর বিষয় যে, গণহত্যায় সন্দেহভাজন একজনকেও এতে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। এসব নারীর মধ্যে সু চির কোন স্থান হতে পারে না। কেউ একজন কিছুই করলেন না, হয়তো তিনিই গণহত্যা, ধর্ষণ আর শিশুদের জ্বালিয়ে দেওয়ার সঙ্গে সরাসরি জড়িত- তাকে বইতে রাখায় আমি বাক্যহারা।’

এরকম শত শত মন্তব্য আসতে থাকে ওই পাতায়। পরে এক বিবৃতিতে বইটির লেখকরা বলেন, ‘আমরা পরিস্থিতিকে ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। এছাড়া আগামী সংস্করণে তাঁকে বাদ দেওয়ার পরিকল্পনাও উড়িয়ে দিচ্ছি না।’ 

ইন্টারনেট ভিত্তিক কমিউনিটি ফান্ডিং প্রজেক্ট ক্রাউডফান্ডিংয়ের মাধ্যমে সংগ্রহ করা অর্থ দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে বইটি প্রথম প্রকাশিত হয়। জানানো হয়, ‘ক্রাউডফান্ডিংয়ের ইতিহাসে এটিই সবচেয়ে ব্যয়বহুল মৌলিক বই।’ যুক্তরাজ্যে বইটি প্রকাশ করে পেঙ্গুইন র্যা নডম হাউজের একটি অংশ পার্টিকুলার বুকস। গত সপ্তাহে যুক্তরাজ্যের সবচেয়ে বড় বই বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান ব্লাকওয়েল বইটিকে ‘বুক অব দ্যা ইয়ার’ ঘোষণা করে। সেক্ষেত্রে পেছনে পড়ে যায় অরুন্ধতি রায়ের ‘দ্য মিনিস্ট্রি অব আটমোস্ট হ্যাপিনেস’কে পেছনে ফেলে।

গত আগস্টে রাখাইনে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। গত কয়েক মাসের নিপীড়নের কারণে প্রতিবেশি বাংলাদেশে পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছে সাড়ে ছয় লাখেরও বেশি মানুষ। হত্যা, ধর্ষণ আর ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওযার পর এসব মানুষ পালিয়ে গেছে। জাতিসংঘ এই নিপীড়নকে জাতিগত নিধনযজ্ঞ বলে মন্তব্য করেছে। সেনাবাহিনীর এই নিপীড়নের কারণে বিশ্বব্যাপী সমালোচনার মুখে পড়েছেন দেশটির রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সু চি।