কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

ছবি: প্রিয়.কম

দ্য নিউজ মিডিয়া: হোয়াট এভরিওয়ান নিডস টু নো || সাংবাদিকতায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অবদান

মিজানুর রহমান
সহ-সম্পাদক
প্রকাশিত: ১১ জুন ২০১৭, ২০:০৮
আপডেট: ১১ জুন ২০১৭, ২০:০৮

নিউ ইয়র্কের সিটি ইউনিভার্সিটির সহযোগী অধ্যাপক সি. ডব্লিউ. অ্যান্ডারসন, অ্যারিজোনা স্টেট ইউনিভার্সিটির জার্নালিজম বিভাগের অধ্যাপক লিওনার্ড ডাউনি জুনিয়র এবং কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটির জার্নালিজমের অধ্যাপক মাইকেল শাডসন দ্য নিউজ মিডিয়া: হোয়াট এভরিওয়ান নিডস টু নো নামের একটি বই লিখেছেন। ২০১৬ সালে বইটি প্রকাশ করে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস। বইটিতে লেখকরা সাংবাদিকতার অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা করেছেন, বিশ্লেষণ করেছেন। সেই বই অনুসারে ধারাবাহিকভাবে অনুলিখন করছেন মিজানুর রহমান

আজকের বিষয়: সাংবাদিকতায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অবদান কী

(প্রিয়.কম) যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগ শুধু শ্রেণিকক্ষে সাংবাদিকতার পাঠদানেই এখন আর সীমাবদ্ধ থাকছে না। বরং শিক্ষার্থীরা যা শিখছে, সরাসরি মাঠে গিয়ে সাংবাদিকতা করার মাধ্যমে তা প্রয়োগও করছেন। এসব শিক্ষার্থীদের তৈরি প্রতিবেদন, অনুসন্ধানী প্রতিবেদন এবং মাল্টিমিডিয়া প্রতিবেদন দেশের বিভিন্ন টিভি, রেডিও এবং সংবাদপত্রে ছাপাও হচ্ছে। এতে করে স্থানীয় সংবাদের ক্ষেত্রে যে শুন্যতা সৃষ্টি হয়েছিল, তার কিছুটা হলেও পূরণ হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের এসব সাংবাদিকতাকে অনেকেই পেশাদার সাংবাদিকতা মনে করেন। 

যেমন মেরিল্যান্ড ইউনিভার্সিটির মেরিল কলেজ অব জার্নালিজমের শিক্ষর্থীরা মেরিল্যান্ডের বিভিন্ন পত্রিকার জন্য রাজ্য সরকার ও কেন্দ্রীয় সরকারের খবরাখবর সংগ্রহ করেন। বোস্টন, ইলিনয়, কানসাস, মিসৌরি এবং মোনাটার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতার শিক্ষার্থীরাও তাদের নিজ নিজ রাজ্যের পত্রিকাগুলোর জন্য সাংবাদিকতা করেন। ২০১৪ সালের পিউ রিসার্স সেন্টারের এক জরিপে দেখা গেছে, সংবাদমাধ্যমগুলোর রাজ্যভিত্তিক ব্যুরো অফিসে প্রতি ৬ জন রিপোর্টারের মধ্যে একজন শিক্ষার্থী। 

অ্যারিজোনা স্টেট ইউনিভার্সিটির ওয়াল্টার ক্রঙ্কাইট স্কুল অব জার্নালিজমের শিক্ষার্থীরা ফোনিক্স, লস অ্যাঞ্জেলেস ও ওয়াশিংটন ডিসিতে বিশ্ববিদ্যালয়টির নিজস্ব ব্যুরো অফিসের মাধ্যমে অ্যারিজোনার বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের জন্য সরকার, রাজনীতি, ব্যাবসা, খেলাধুলার খবর তৈরি করেন। ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে ক্রঙ্কাইটের শিক্ষার্থীরা অ্যারিজোনায় হেরোইনের অবাধ ব্যবহার নিয়ে ৩০ মিনিটের একটি তথ্যচিত্র নির্মাণ করেছিলেন, যেটি ওই রাজ্যের প্রতিটি টিভি, রেডিও এবং সংবাদপত্র অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে প্রচার করেছে। আরেকবার ২০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাছাইকৃত ৩০ জন শিক্ষার্থী খাদ্য নিরাপত্তা, পরিবহন নিরাপত্তা, ভোটের অধিকার, অস্ত্র আইন ইত্যাদি বিষয়ে ৩০ মিনিটের একটি মাল্টিমিডিয়া প্রতিবেদন তৈরি করেন। সেটি পরে দেশের সব টিভি, রেডিও, সংবাদপত্রে ফলাও করে প্রচার হয়েছিল। 

নর্থওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির মেডিল স্কুল অব জার্নালিজমের শিক্ষার্থীদের জন্য মেডিলে একটি নিউজ ব্যুরো আছে এবং ওয়াশিংটন ডিসিতে জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক রিপোর্টিংয়ের একটি প্রকল্প অাছে। কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের স্নাতক বিভাগের শিক্ষার্থীরা তাদের সংবাদভিত্তিক ওয়েবসাইট নিউ ইয়র্ক ওয়ার্ল্ড নিউজ’র জন্য সরকার, রাজনীতি ইত্যাদি বিষয়ের ওপর রিপোর্টিং করেন। ইউনিভার্সিটি অব সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়ার শিক্ষার্থীরা লস এঞ্জেলেসে তাদের ডিজিটাল নিউজ সাইট ‘নিওন টমি’ পরিচালনা করেন। নিউ ইয়র্কের সিটি ইউনিভার্সিটি কিংবা ফ্লোরিডা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরাও মিয়ামি হেরাল্ড, পাম বিচ পোস্টের সাথে কাজ করেন এবং তাদের রিপোর্টিংগুলো এসব পত্রিকা প্রকাশ করে। 

চিকিৎসাশাস্ত্র ও আইনের শিক্ষার্থীদের মতোই প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার সাথে বাস্তব জীবনের অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য কিছু কিছু বিশ্ববিদ্যালয় তাদের সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থীদের পড়ার পাশাপাশি সরাসরি মাঠে রিপোর্টিং করতে অনুপ্রাণিত করে। এ শিক্ষার্থীর শিক্ষা যেমন আরও সমৃদ্ধ হয়, তেমনি সমৃদ্ধ হয় সাংবাদিকতাও। অবশ্য অনেক বিশ্ববিদ্যালয় এই রীতি অনুসরণ করছে না। অনেক দাতা সংস্থা সাংবাদিকতা শিক্ষাকে আরও ব্যবহারিক রূপ দেওয়ার জন্য অনুদান দিয়ে যাচ্ছে। বাণিজ্যিক কিংবা অলাভজনক, উভয় সংবাদ মাধ্যমই সবসময় প্রশিক্ষিত পেশাদার সাংবাদিক চায়, যেটা তারা কোনো অর্থ খরচ না করেই বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা দাতা সংস্থার অনুদানের মাধ্যমে পেয়ে থাকে। বর্তমানে যে মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকতার প্রচলন শুরু হয়েছে এবং ভবিষ্যতে এর যে অপার সম্ভাবনা রয়েছে, সেটির দিগন্তে নতুন হাওয়া বইয়ে দিতে পারে এসব শিক্ষার্থীরা এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোই।