কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

ইউরোপীয় পার্লামেন্টের বৈঠক। ফাইল ছবি

মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করল ইউরোপীয় ইউনিয়ন

আবু আজাদ
সহ-সম্পাদক
প্রকাশিত: ১৬ অক্টোবর ২০১৭, ২১:৩৫
আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০১৭, ২১:৩৫

(প্রিয়.কম) মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রাষ্ট্রীয় মদদে সেনাবাহিনী কর্তৃক নৃশংস অভিযানে গণহত্যা-ধর্ষণ-অগ্নিসংযোগ ও জাতিগত নিধনের ঘটনায় দেশটির সেনাবাহিনীর সঙ্গে সকল ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করার ঘোষণা দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। একইসঙ্গে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর কাছে যেকোনো ধরনের অস্ত্র বা সামরিক সরঞ্জাম বিক্রির ক্ষেত্রেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে সংস্থাটি।

এ বিষয়ে ১৬ অক্টোবর সোমবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের এক বিবৃতিতে বলা হয়, রোহিঙ্গা নিধন অভিযানে নিরাপত্তা বাহিনীর অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহারের কারণে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো মিয়ানমারের সেনাপ্রধান এবং অন্য জ্যেষ্ঠ সেনা কর্মকর্তাদের আমন্ত্রণ বাতিল করবে। একইসঙ্গে সমস্ত প্রতিরক্ষা সহযোগিতা পর্যালোচনা করবে ইউরোপীয় দেশগুলোর এ জোট।

প্রাণ বাঁচাতে এভাবে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছেন রোহিঙ্গারা। ছবি: ফোকাস বাংলা

প্রাণ বাঁচাতে এভাবে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছেন রোহিঙ্গারা। ছবি: ফোকাস বাংলা 

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, যদি রাখাইনে রোহিঙ্গা পরিস্থিতির উন্নতি না হয়, সে ক্ষেত্রে অন্য ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও ভাবছে তারা। 

প্রসঙ্গত, গত ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা নিধন অভিযান শুরুর পর প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের সংখ্যা ইতোমধ্যে ৫লাখ ৩৬ হাজার ছাড়িয়ে গেছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। তবে বেসরকারি হিসাবে এ সংখ্যা ৬ লাখেরও বেশি। এদিকে পালিয়ে আসার হার আগের চেয়ে কিছুটা কমলেও, তা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে বলার সময় এখনও হয়নি বলে জানান সংস্থাটির মুখপাত্র। জাতিসংঘ আরও জানায়, মিয়ানমার সেনাবাহিনী রাখাইনে জাতিগত নিধনে নেমেছে

বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় জেলা কক্সবাজারের শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নেওয়া এসব রোহিঙ্গাদের মধ্যে ৯০ ভাগই হলো নারী, শিশু ও বৃদ্ধ। জাতিসংঘের সংস্থাগুলোর মতে, পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের মধ্যে শিশু রয়েছে শতকরা ৬০ ভাগ। এর মধ্যে ১১শ’র বেশি রোহিঙ্গা শিশু পরিবার ছাড়া অচেনাদের সঙ্গে পালিয়ে বাংলাদেশে এসেছে। আর এসব শিশুর চোখের সামনেই তাদের বাবা-মাকে গুলি ও জবাই করে হত্যা, মা-বোনদের ওপর যৌন নির্যাতন ও ঘর-বাড়িতে আগুন দেওয়াসহ ইতিহাসের নৃশংসতম ঘটনাগুলো ঘটিয়েছে মিয়ানমারের সেনারা।

আগুনে পুড়ে যাওয়া জনশূন্য রাখাইন রাজ্য। ছবি: সংগৃহীত মিয়ানমার সেনাবাহিনীর দেওয়া আগুনে পুড়ে যাওয়া জনশূন্য রাখাইন রাজ্য। ছবি: সংগৃহীত 

অভিযানের নামে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী খুন, ধর্ষণ, ঘরবাড়ি পুরিয়ে দেওয়া, কুপিয়ে হত্যাসহ বর্বরতার চূড়ান্ত সীমাও অতিক্রম করেছে বলে অভিযোগ নিউইয়র্ক ভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের (এইচআরডব্লিউ)। স্যাটেলাইট থেকে প্রাপ্ত ছবি বিশ্লেষণের মাধ্যমে সংস্থাটি বলেছে, ইতোমধ্যে প্রায় ২১৪টি রোহিঙ্গা অধুষ্যিত গ্রাম। সংস্থাটি জানায়, রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী মানবতাবিরোধী অপরাধ করছে। 

প্রিয় সংবাদ/শান্ত