কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

প্রবারণা পূর্ণিমার প্রধান আকর্ষণ হচ্ছে আকাশকে আলোকিত করতে রঙিন আলোর ফানুশ উড়ানো। সংগৃহীত ফাইল ছবি

বৌদ্ধদের প্রবারণা পূর্ণিমা উৎসব বাতিল, উদযাপনের টাকায় রোহিঙ্গাদের সহায়তা

নাজমুল হাসান শান্ত
সহ-সম্পাদক
প্রকাশিত: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১৯:৪২
আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১৯:৪২

(বাসস) মিয়ানমারে রোহিঙ্গা নির্যাতনের প্রতিবাদে আসন্ন প্রবারণা পূর্ণিমা উৎসব উদযাপন বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশের বৌদ্ধ সম্প্রদায়।

বাংলাদেশ বৌদ্ধ সমিতির ঢাকা শাখার মহাসচিব স্বপন বড়ুয়া চৌধুরী বলেন, ‘সার্বিক পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে আমরা আসন্ন ‘প্রবারণা পূর্ণিমা’ উদযাপন বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

প্রবারণা পূর্ণিমায় বৌদ্ধ ভিক্ষুরা তাদের ভেতরের অবিত্রতা ও কলুষতা থেকে পবিত্র হওয়ার জন্য তিন মাসব্যাপী তাদের আশ্রমে নির্জন বাস করেন। একে আশ্বিনী পূর্ণিমাও বলা হয়। উৎসবটির প্রধান আকর্ষণ হচ্ছে আকাশকে আলোকিত করতে রঙিন আলোর ফানুশ উড়ানো।

এবার ফানুশ উড়ানো উৎসব বাতিল করে শুধুমাত্র ধর্মীয় আচার পালনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে উল্লেখ করে স্বপন বলেন, ‘এ বছর উৎসবের অংশটুকু পালন করা হবে না। এই টাকা দিয়ে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সহায়তা করা হবে।’

এ বছর অক্টোবর মাসের প্রথম সপ্তাহে অনুষ্ঠানটি পালন করা হবে। এদিকে রোহিঙ্গা নির্যাতনের ঘটনাকে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ আখ্যা দিয়ে দেশের বৌদ্ধ সম্প্রদায় মিয়ানমারে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠির ওপর সামরিক অভিযানের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।

বাংলাদেশ সংঘরাজ ভিক্ষু মহাসভা উপা সংঘরাজ সত্যপ্রিয় মোহাথেরো বলেন, ‘আমরা মিয়ানমারের জাতিগত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠির বিরুদ্ধে চলমান নির্যাতনের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং এর বিরোধিতা করছি।

তিনি জানান, মিয়ানমার বৌদ্ধ রাষ্ট্র হলেও দু’দেশের বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মধ্যে খুব একটা ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক নেই।

একুশে পুরষ্কারপ্রাপ্ত এই বৌদ্ধ ভিক্ষু আরও বলেন, ‘তারা বৌদ্ধ হলেও আমাদের সঙ্গে তাদের ভাষা ও সংস্কৃতিসহ অনেক পার্থক্য রয়েছে।’

ঢাকা আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ মঠের প্রিন্সিপাল ধর্ম মিত্র মহাথেরো অসহিংস উপায়ে চলমান সংকট নিরসণের জন্য মিয়ানমার সরকার ও দেশটির জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পালি বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. দীপঙ্কর শ্রীজন বলেন, প্রভু বুদ্ধের প্রধান আদর্শ হচ্ছে অহিংসা পরম ধর্ম।

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সকল ধর্মের মধ্যে শান্তি ও ঐক্য চাই। রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার সরকারের নিপীড়ন মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ।’

বাংলাদেশ বৌদ্ধ ফেডারেশনের সভাপতি অসিম রঞ্জন বড়ুয়া বলেন, ‘মিয়ানমার সরকার যা করছে তা বৌদ্ধ ধর্মে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।’

বাংলাদেশ বৌদ্ধ ক্রিষ্টি প্রচার সংঘের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট পি আর বড়ুয়া গৌতম বুদ্ধের অহিংস শিক্ষাকে মেনে চলার জন্য মিয়ানমার সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

বাংলাদেশ বুদ্ধিস্ট ফেডারেশনের মহাসচিব অশোক বড়ুয়া জানান, মিয়ানমারের রোহিঙ্গারা উৎপীড়নের শিকার হচ্ছেন।

তিনি বলেন, ‘আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’

এছাড়াও বিভিন্ন বৌদ্ধ সংগঠন মানববন্ধন, ঢাকাস্থ মিয়ানমার দূতাবাসে স্মারকলিপি পেশ এবং মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে চলমান সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধান ও রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে নির্যাতন বন্ধের উপায় বের করতে আলোচনাসহ নানা ধরনের বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন।

প্রিয় সংবাদ/শান্ত