কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

নতুন করে নেমেছে রোহিঙ্গা ঢল। ছবিটি ১৭ অক্টোবর মঙ্গলবার কক্সবাজারের পালংখালী থেকে তোলা। ছবি: ফোকাস বাংলা

সীমান্তে আটকে আছেন আরও ১৫ হাজার রোহিঙ্গা: জাতিসংঘ

আবু আজাদ
সহ-সম্পাদক
প্রকাশিত: ১৭ অক্টোবর ২০১৭, ২১:১২
আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০১৭, ২১:১২

(প্রিয়.কম) মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রাষ্ট্রীয় মদদে সেনাবাহিনী কর্তৃক নৃশংস অভিযানে গণহত্যা-ধর্ষণ-অগ্নিসংযোগ ও জাতিগত নিধনের ঘটনায় প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে আসা অন্তত ১৫ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে আটকে আছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর।

বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা আটকে পড়ার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে দেওয়া এক বিবৃতিতে সংস্থাটি জানায়, বাংলাদেশে প্রবেশের যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া ধীর হওয়ার কারণে এত সংখ্যক রোহিঙ্গা আটকে পড়েছেন। বিবৃতিতে কর্তৃপক্ষকে সীমান্তে যাচাই-বাছাই করার প্রক্রিয়া দ্রুততর করার আহবান জানায় ইউএনএইচসিআর। 

আটকে পড়া রোহিঙ্গাদের যত দ্রুত সম্ভব বাংলাদেশ সীমানার আরও ভেতরে নিরাপদে স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার আহবান জানিয়ে সংস্থাটির একজন মুখপাত্র বলেছেন, যে কোনো দেশ তার সীমানায় আসা কারো সম্পর্কে খবর নেবে। কিন্তু নতুন আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীরা সীমান্তে মানবেতর অবস্থার মুখোমুখি হচ্ছেন। 

সীমান্তে আটকে আছে অন্তত ১৫ হাজার রোহিঙ্গা। ছবি: ফোকাস বাংলাসীমান্তে আটকে আছে অন্তত ১৫ হাজার রোহিঙ্গা। ছবি: ফোকাস বাংলা

প্রসঙ্গত, গত ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা নিধন অভিযান শুরুর পর প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের সংখ্যা ইতোমধ্যে ৫লাখ ৮২ হাজার ছাড়িয়ে গেছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। তবে বেসরকারি হিসাবে এ সংখ্যা ৬ লাখেরও বেশি। এদিকে সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে পালিয়ে আসার হার আগের চেয়ে কিছুটা কমলেও, অক্টোবরের ১৫ তারিখ থেকে তা আবারও বৃদ্ধি পেয়েছে। এ নিয়ে কিছু এরিয়াল ফুটেজ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা। ওই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, উখিয়ার পালংখালির কাছে নাফ নদী পার হয়ে হাজার হাজার রোহিঙ্গা প্রবেশ করছে। এর আগেই জাতিসংঘ জানায়, মিয়ানমার সেনাবাহিনী রাখাইনে জাতিগত নিধনে নেমেছে

বাংলাদেশমুখী রোহিঙ্গা জনস্রোত। ইউএনএইচসিআর এর ড্রোন থেকে তোলা ছবি। বাংলাদেশমুখী রোহিঙ্গা জনস্রোত। ইউএনএইচসিআর-এর ড্রোন থেকে ১৬ অক্টোবর সোমবার তোলা ছবি। 

বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় জেলা কক্সবাজারের শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নেওয়া এসব রোহিঙ্গাদের মধ্যে ৯০ ভাগই হলো নারী, শিশু ও বৃদ্ধ। জাতিসংঘের সংস্থাগুলোর মতে, পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের মধ্যে শিশু রয়েছে শতকরা ৬০ ভাগ। এর মধ্যে ১১শ’র বেশি রোহিঙ্গা শিশু পরিবার ছাড়া অচেনাদের সঙ্গে পালিয়ে বাংলাদেশে এসেছে। আর এসব শিশুর চোখের সামনেই তাদের বাবা-মাকে গুলি ও জবাই করে হত্যা, মা-বোনদের ওপর যৌন নির্যাতন ও ঘর-বাড়িতে আগুন দেওয়াসহ ইতিহাসের নৃশংসতম ঘটনাগুলো ঘটিয়েছে মিয়ানমারের সেনারা।

সেনাদের আগুনে জ্বলছে রাখাইন। ছবি: ফোকাস বাংলাসেনাদের আগুনে জ্বলছে রাখাইন। ছবি: ফোকাস বাংলা

অভিযানের নামে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী খুন, ধর্ষণ, ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া, কুপিয়ে হত্যাসহ বর্বরতার চূড়ান্ত সীমাও অতিক্রম করেছে বলে অভিযোগ নিউইয়র্ক ভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)। স্যাটেলাইট থেকে প্রাপ্ত ছবি বিশ্লেষণের মাধ্যমে সংস্থাটি বলেছে, ইতোমধ্যে প্রায় ২৮৮টি রোহিঙ্গা অধুষ্যিত গ্রাম। সংস্থাটি আরও জানায়, রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী মানবতাবিরোধী অপরাধ করছে। 

প্রিয় সংবাদ/শান্ত