শুরুর আগেই বিতর্কে আফগান ক্রিকেট
সবে টেস্ট স্ট্যাটাস পেয়েছে আফগানিস্তান। জিম্বাবুয়েকে পেছনে ফেলে খেলছে ক্রিকেট বিশ্বকাপে। আইপিএল খেলার সুবাদে রশিদ খান. মোহাম্মদ নবীদের নাম ছড়িয়ে পড়েছে ক্রিকেট বিশ্বে। সেই আফগানিস্তান ক্রিকেটে এখন অবিশ্বাস। সাজঘরে নেই খোলামেলা ভাব। কোচ ফিল সিমন্স হুমকি দিয়ে রেখেছেন, বিশ্বকাপের পরেই সব ‘ফাঁস’ করে দেবেন তিনি। একাদশ নির্বাচনে বোর্ড হস্তক্ষেপ করছে। মাঠের বাইরে স্থানীয় মানুষদের সঙ্গে ঝামেলায় জড়িয়ে পড়ছেন আফগান-ক্রিকেটাররা। তা নিয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে, বিরক্ত গুলবাদিন নায়েব সাংবাদিক সম্মেলন ছেড়ে চলে যাওয়ার হুমকি দেন। আফগানিস্তানের ক্রিকেট যেন পথ হারিয়েছে। অথচ এমনটা হওয়ার ছিল না। অনেকটা পথ পেরিয়েই তো রশিদ খানরা বিশ্বকাপের মঞ্চে এসেছিলেন। সবাই ধরে নিয়েছিলেন, চলতি বিশ্বকাপে চমকে দেবে আফগানিস্তান। সেই জায়গায় উল্টো ছবি। কাবুল এখন শান্ত। একটা সময় ছিল যখন মোরগের ডাকে সাধারণ মানুষের ঘুম ভাঙত না সেখানে। বোমা-গুলির শব্দে অনেক আফগান ক্রিকেটারেরই শৈশব কেটেছে। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ ছেড়ে পাকিস্তান সীমান্তের রিফিউজি ক্যাম্পে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন অসংখ্য মানুষ। পাকিস্তানের সেই রিফিউজি ক্যাম্পে থাকার সময়েই ক্রিকেটের সঙ্গে অনেকের পরিচয়। ক্রিকেটের প্রতি ভালোবাসা জন্মায়। সেই সময় থেকেই আফগানদের রক্তে ঢুকে পড়ে ক্রিকেট। আইপিএলের বদৌলতে এখন খুবই জনপ্রিয় একাধিক আফগান ক্রিকেটার। একদিন ক্রিকেট খেলার মতো পরিবেশই ছিল না আফগানিস্তানে। যারা ক্রিকেট খেলতেন তাদের কাছে ছিল না উইকেট। দেওয়ালে উইকেটের ছবি এঁকে খেলতে নেমে পড়তেন রইস আহমেদজাইয়ের মতো সাবেক ক্রিকেটার। বল ছিল না। প্লাস্টিক জমিয়ে তৈরি করা হতো বল। লাঠিকে ব্যাট বানিয়ে শুরু হতো খেলা। গোড়ার দিকের সেই লড়াইয়ের দিনগুলো কি ভুলে গেলেন আফগান ক্রিকেটাররা? বিশ্বকাপ শুরু হতেই ড্রেসিরুমে অশান্তি। হাঁটুর চোটের জন্য মোহাম্মদ শেহজাদকে দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। সেই সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারেননি শেহজাদ। বোর্ডের কিছু কর্মকর্তা তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছেন বলে অভিযোগ শেহজাদের। বোর্ডের হস্তক্ষেপ ড্রেসিরুমের পরিবেশ নষ্ট করছে বলে অনেকেই অভিযোগ করছেন। ইংল্যান্ড ম্যাচের আগের দিন রেস্তোরাঁয় সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছিলেন আফগান ক্রিকেটাররা। ঘটনার তদন্তে আফগান ক্রিকেটারদের থানায় তলব করে ম্যানচেস্টার পুলিশ। ড্রেসিংরুমেও দুই পক্ষ হয়েছে বলে গুঞ্জন রয়েছে। ঠিক এই মুহূর্তেই হুমকি দিয়ে রাখছেন দলটির কোচও। দলের এমন হ-য-ব-র-ল অবস্থায় আগামীকাল ভারতের মুখোমুখি হবে আফগানিস্তান।