কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

আকাশেই বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন তাদের

মানবজমিন প্রকাশিত: ২৬ মে ২০১৯, ০০:০০

বাংলাদেশ বিমানের স্পিকারে পাইলটের খসখসে কণ্ঠ ভেসে এলো। বলেন, বাংলাদেশ ছাড়তে বিলম্বের কারণ ছিল ‘যান্ত্রিক ত্রুটি’। এই কথা শোনার পরই অনেক যাত্রী উঠে দাঁড়িয়ে আরো মনোযোগ দিয়ে শুনতে লাগলেন পাইলটের কথা। এরপর আরো ভয়ের সংবাদ শোনালেন পাইলট, ইরানের আকাশে উড়তে উড়তে খবর এসেছে জার্মানি ও লন্ডনের ঝড়-বৃষ্টির আনা গোনা। যদি সব ঠিক থাকে তাহলে ভালভাবেই পৌঁছানো যাবে, তবে পূর্বনির্ধারিত সময় থেকে ৩০ মিনিট পরে। ঠিক সেই সময় হন হন করে বিজনেস ক্লাস থেকে ইকনোমিতে আসলেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক হাবিবুল বাশার সুমন। বিমানে চাপার আগেই তিনি এই প্রতিবেদককে বলেছিলেন আকাশ পথেই দৈনিক মানবজমিনের সঙ্গে গল্পে মাতবেন বিশ্বকাপ স্বপ্ন নিয়ে। ওহ! আরো একজনের সেখানে থাকার কথা ছিল। তিনি আরেক সাবেক অধিনায়ক মোহাম্মদ আশরাফুল। তবে রোজা রেখে বেচারা বিমানের শেষ দিকে তিন সিট দখল করেই ঘুমাচ্ছেন। অবশ্য ঘুম থেকে উঠে দারুণ গল্পে মজেছেন তিনিও। সঙ্গে যোগ দিয়েছেন বিমানের দুই ক্রু। ও! তাদের পরিচয় হাসানুজ্জামান ঝড়ু ও আরেকজন সানোয়ার হোসেন। দুজনই সাবেক ক্রিকেটার। ১১ ঘন্টার সফরে পুরোটাই কেটে গেল বিশ্বকাপ নিয়ে তাদের গল্প ও স্বপ্নের জাল বুনে। বিশেষ করে বাশারতো বলেই ফেললেন, এবার বড় সুযোগ বিশ্বকাপ ট্রফি নিয়ে ঘরে ফেরার। তবে বাস্তবতাও ভোলেননি তিনি।আকাশে উড়তে উড়তে জমে ওঠে ক্রিকেট আড্ডা। বিশ্বকাপের আগে আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশ। দাপুটে ক্রিকেট খেলেই নিজেদের ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথমবারে মত ঘরে তুলেছে ট্রফি। আত্মবিশ্বাসে টগবগে বাংলাদেশও এখন যেন আকাশে উড়ছে। সুমন বলেন, ‘আমি চাই বাংলাদেশের এই উড়াল অব্যাহত থাকুক। তবে আমাদের পা মাটিতেই আছে। কিন্তু আমরা এবার দারুণ ফর্মে আছি। আগে কখনো এমন ফর্মে ছিল না দিল। এখন সেই সুযোগটা কাজে লাগানোই আমাদের অন্যতম কাজ।’ সুমন বলেন, ‘বাংলাদেশ যখনই ইংল্যান্ডে আসে, ভালো খেলে। ১৯৮৯ সালে অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে খেলতে এসেছিলাম। ওই সফরে কিন্তু ভালো করেছিলাম। একদম আলাদা কন্ডিশন, আলাদা উইকেট। এরপর থেকে বাংলাদেশ ইংল্যান্ডে খারাপ কিন্তু খেলেনি কখনো।’ইংল্যান্ডে বাংলাদেশের অন্যতম সুখস্মৃতি ২০০৫-এ। সেবার অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়েছিল টাইাগাররা কার্ডিফে। সেই কার্ডিফেই বাংলাদেশ দল তাদের বিশ্বকাপ মিশন শুরু করছে আজ ভারতের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচ দিয়ে। এ নিয়ে সুমন বলেন, ‘১৯৯৯ বিশ্বকাপে বাংলাদেশ খুবই ভালো খেলেছে। চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ভালো খেলেছে। ২০০৫-এ কিন্তু আমাদের খুব ভালো একটা স্মৃতি আছে। সেবার অজেয় অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়েছিলাম আমরা। আর এবার মনে হয় অতীতে যত দল নিয়ে এসেছিলাম তার চাইতে বেশি অভিজ্ঞ ও পারফর্মার নিয়ে যাচ্ছি। বাশার বলেন, ‘আমার আত্মবিশ্বাসের কারণ অধিনায়ক মাশরাফিও। আমি ওর নেতৃত্বে দারুণ আশাবাদি। তবে একটাতো মন খরাপ থাকবেই সেটি হল এটি ওর শেষ বিশ্বকাপ। তাই বেশি করে চাইছি যেন দারুণ কিছু উপহার দিয়ে আমাদের দুঃখটা কিছুটা হলেও লাঘব করতে পারে।’ হাবিবুল বাশার যখন কথার ফুলঝুরি খুলে বসেছেন তখন জেগে ওঠেন আশরাফুলও। আর কার্ডিফ নামটাই যেন আশরাফুলের জন্য বাড়তি অনুপ্রেরণা। কারণ অস্টেলিয়াকে হারানোর ম্যাচে তার ব্যাট থেকে এসেছিল সেঞ্চুরি। আশরাফুল বলেন, ‘আমরা ইংল্যান্ডে ভালো করি। তার মধ্যে দুটি বড় জয়ই কিন্তু কার্ডিফে। এখানেই আমরা অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়েছি। এরপর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে হারিয়েছি নিউজিল্যান্ডকে। হ্যা, আমারতো ভালো লাগে এখানে আমি সেঞ্চুরি করেছিলাম সেই ঐতিহাসিক জয়ে। এরপর সাকিব ও মাহমুদুল্লহও দারুণ করেছে সেখানে। আমি বলবো এখানে আমরা অন্যরকম হয়ে যাই। এখন সেই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হবে।’দলের জন্য অবশ্য বার্তাও দিয়েছেন আশরাফুল। তিনি বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে এবারের বিশ্বকাপটা হবে ব্যাটসম্যানদের। আর আমাদের ব্যাটিং লাইনআপ সত্যি অসাধারণ। কিন্তু বোলারদের বেশি সতর্ক হতে হবে। বিশেষ করে পেসারদের। মাশরাফি আছে, তার সঙ্গে মোস্তাফিজকে বড় দায়িত্ব নিতে হবে। অন্য যারা আছে তাদের সেরাটা দেয়ার এখনই সময়। আমি বলবো বোলাররা ভালো করলেই আমরা ম্যাচ জিততে পারবো।’ বাশার ও আশরাফুলের সঙ্গে কথার ফাঁকে জাতীয় দলের ক্রিকেটার সানোয়ার হোসেন মাঝে মাঝে এসে খোঁজ খবর নিচ্ছিলেন। সঙ্গে যোগ দেন আরেক ক্রিকেটার হাসানুজ্জামান ঝড়ুও। তবে দু’জনই এখন বিমানের ক্রু। কিন্তু ক্রিকেটার বলে কথা। তাই ক্রিকেটের গল্পে না যোগ দিয়ে পারেননি। সানোয়ার বলেন, ‘আমি চাই বাংলাদেশ বিশ্বকাপটা নিয়েই ঘরে ফিরুক। আমার বিশ্বাস ইংল্যান্ডে দারুণ কিছু করবে দল।’ ঝড়ুর আশা একটুও কম নয়। তিনি বলেন, ‘আমি চাই এমন খেলুক যেন আমাদের অন্য কেউ আর অবহেলার চোখে দেখতে না পারে। ভাল লাগছে সব দেশই এখন বাংলাদেশ দলকে সমীহ করে। এটি আমাদের জন্য দারুণ ব্যাপার।’ক্রিকেটের গল্পে গল্পে ১১ ঘন্টায় ৭৯৯৭ কিলোমিটার যে কিভাবে কেটে গেছে তা কেউ যেন বুঝতে পারেনি। কৃষ্ণ সাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে প্রবেশ করেছে বিমান তা কিছু ঝড়ের ধমকা হাওয়াতেই কেঁপে উঠতেই বুঝা যায় আমরা এখন লন্ডন থেকে বেশি দূরে নেই। লম্বা যাত্রায় ক্রিকেটের সেই গল্পে যোগ দিয়েছিলেন বিমানের অন্যযাত্রীরাও। সবারই আশা ইংল্যান্ডে এবার টাইগাররা মাতবে জয়ের উৎসবে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

এই সম্পর্কিত

আরও